×

সম্পাদকীয়

জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৩, ১২:২৯ এএম

জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি

বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, পৃথিবীর ইতিহাস যত দিন থাকবে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব প্রজ¦লিত হবেন প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে, প্রতিটি মুক্তিকামীর হৃদয়ে।

আজ বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মদিন। জন্মদিনে এই মহান নেতার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়ার শেখ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন শিশু মুজিব। গভীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, আত্মত্যাগ এবং জনগণের প্রতি মমত্ববোধের কারণে পরিণত বয়সে হয়ে ওঠেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। বিশ্ব ইতিহাসে ঠাঁই করে নেন স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার হিসেবে। তার জন্য আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। কিশোর বয়সেই মুজিবের সংবেদনশীল হৃদয় ও মানবিক মূল্যবোধের পরিচয় পাওয়া যায়। একদিকে সৎ সাহস, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মানসিকতা, অন্যদিকে গরিব-দুঃখী মানুষের প্রতি অগাধ ভালোবাসা, তাদের দুঃখ-দৈন্য লাঘবের সংকল্প তাকে অবধারিতভাবেই রাজনীতিতে নিয়ে আসে। স্কুলে পড়া অবস্থায়ই তার মধ্যে নেতৃত্বের বিকাশ ঘটতে দেখা যায়। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের পরপর নতুন রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা নিয়ে ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ গঠন করেন মুজিব। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২-এর মহান ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৮-এর আইয়ুব সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ১৯৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন এবং পরবর্তী সময়ে ১৯৬৬-এর ঐতিহাসিক ৬ দফা স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় কারারুদ্ধ হন তিনি। হয়ে ওঠেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। ১৯৬৯-এর ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ছাত্র-জনতা তাকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেয়। ১৯৭০-এর নির্বাচনে বাঙালি বঙ্গবন্ধুর ৬ দফার পক্ষে জানায় অকুণ্ঠ সমর্থন। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালির এ নির্বাচনী বিজয়কে মেনে নেয়নি। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ দেশের আপামর জনগণ ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জন করেছে বহু কাক্সিক্ষত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। ১৯৭২-এর ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে দেশে ফিরেই বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে মনোনিবেশ করেন। কিন্তু সেই সুযোগ বেশি দিন পাননি। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট কালরাতে ঘাতকদের তপ্ত বুলেটে সপরিবারে নিহত হন বাঙালির এই অবিসংবাদিত নেতা। শুরু হয় দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীত দিকে নিয়ে যাওয়ার পালা। ১৯৭৫-পরবর্তী ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার অনেক চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র, অপচেষ্টা হয়েছে। কিন্তু সবই ব্যর্থ হয়েছে। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ফের ক্ষমতাসীন হয় মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দলের সরকার। শেখ হাসিনা প্রথম মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। ১৯৯৭ সালের ১৭ মার্চ দিবসটি পালন শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন, আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। ভবিষ্যতে দেশ গড়ার নেতৃত্ব দিতে হবে আজকের শিশুদেরই। তাই শিশুরা যেন সৃজনশীল মুক্তমনের মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে- তিনি সব সময়ই সেটা চাইতেন। তাই জাতির পিতার জন্মদিনকে শিশু দিবস হিসেবে পালন খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এই দিনে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই মহান নেতার জীবন ও আদর্শ অনুসরণে এ দেশের শিশুদের যথাযোগ্য সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলাই হোক আজকে আমাদের অঙ্গীকার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App