×

সারাদেশ

শান্তিগঞ্জে বিল না পাওয়ায় বাঁধের কাজ শেষ হচ্ছে না

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৩, ০৫:১২ পিএম

শান্তিগঞ্জে বিল না পাওয়ায় বাঁধের কাজ শেষ হচ্ছে না

ছবি: ভোরের কাগজ

শান্তিগঞ্জে বিল না পাওয়ায় বাঁধের কাজ শেষ হচ্ছে না

বিপাকে পিআইসি সদস্যরা

সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলায় ৯০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) মাধ্যমে ৪৬ দশমিক ৮১২ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধের প্রায় ৯৮ ভাগ কাজ হয়েছে। এখন ড্রেসিং, কমপ্যাকশন ও ঘাস লাগনোর কাজে ব্যস্থ রয়েছেন স্থানীয় পিআইসিরা। এ্ উপজেলায় ৯০টি পিআইসির সদস্যরা প্রথম বিলের ২৫ ভাগ টাকা পেলেও দ্বিতীয় বিল না পাওয়ায় ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করতে পারছেন না বেশিরভাগ পিআইসি (প্রজেক্ট ইম্পিলিমেনটেশন কমিটি) কমিটির লোকজন। এতে আর্থিক সংকটে পড়েছেন পিআইসি কমিটির সদস্যরা। সময় মতো দ্বিতীয় কিস্তির টাকা না পাওয়ায় শান্তিগঞ্জ উপজেলার ৯০টি প্রকল্পের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজের বাঁধের ড্রেসিং, কম্প্যাকশন ও ঘাস লাগনোর কাজ চলছে ধীরগতিতে। এতে চরম বিপাকে আছেন তারা। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, বরাদ্দ স্বল্পতা ও চাহিদা অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ না আসায় বিল দেয়া যাচ্ছে না।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, শান্তিগঞ্জ উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ছোট-বড় হাওরের মধ্যে খাইর হাওর, জামখলার হাওর, খাই হাওর, কাউয়াজুরী হাওরগুলো সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অধীনে ও প্রতি বছর হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে আসছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এ বছর ৯০টি প্রকল্পের মাধ্যমে মাধ্যমে ৪৬ দশমিক ৮১২ কিলোমিটার কাজের জন্য এবার বরাদ্দ ধরা হয়েছিল ১৭ কোটি পাঁচ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। তবে বরাদ্দ পাওয়া গেছে সাত কোটি ২৯ লাখ টাকা ও পিআইসিদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে পাঁচ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। চার কিস্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিকে (পিআইসি) টাকা পরিশোধ করার কথা রয়েছে। প্রথম কিস্তির টাকা দিয়ে পিআইসি কমিটির লোকজন ইতিমধ্যে মাটির কাজে ৯৮ ভাগ ও সার্বিক কাজ ৯৪ ভাগ ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ সম্পন্ন করেছেন। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বাঁধের কাজ শুরু করে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তা শেষ করার কথা ছিল। পিআইসি গঠনের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়ায় এবং হাওরের পানি দেরিতে নামায় ও নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় ১৫ মার্চ পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

শান্তিগঞ্জ উপজেলার খাই হাওরের ৫৪ নম্বর পিআইসি কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সাইদুর রহমান জানান, খাই হাওরে ২১০ মিটার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২০ লাখ ১২ হাজার টাকা। প্রথম কিস্তিতে আমাকে দেয়া হয়েছে ৪ লাখ ৪২ হাজার টাকা। দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাওয়ার আগেই শ্রমিক ও এস্কেভেটর পার্টিকে দিয়ে মাটির কাজ সম্পূর্ণ কাজ শেষ করা হয়েছে। এরই মধ্যে ড্রেসিং, কম্প্যাকশন ও ঘাষ লাগানোর কাজ শেষ হয়েছে। বাঁধের কাজ শেষ করতে ধার দেনা করে আমাকে ১২ লাখ টাকার অধিক খরচ করতে হয়েছে। তবে দ্রুত দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেলে উপকার হবে।

শান্তিগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাব কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ বলেন, শান্তিগঞ্জ উপজেলায় বেশিরভাগ পিআইসি কমিটির লোকজন স্থানীয় কৃষক ও গৃহস্থ থাকলেও নগদ টাকা খরচের ক্ষেত্রে তারা দুর্বল। তবে স্থানীয় প্রশাসনের চাপে উপজেলার ৯০টি পিআইসির কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। তবে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের চার কিস্তির টাকার পরিবর্তে এক কিস্তির টাকা দিয়ে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের তদারকি করছে প্রশাসন। বাঁধ নির্মাণের জন্য পিআইসিদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় কিস্তির টাকা দ্রুত পরিশোধ করার জন্য কৃষকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করছি।

শান্তিগঞ্জ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম জানান, ফসল রক্ষা বাঁধ রক্ষার্থে নিয়মিত ভাবে পিআইসিদের তাগিদের পাশপাশি বিলও পরিশোধ করা হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে আরো কিছু বিল দেয়া হবে। অবশিষ্ট থাকা পরিশোধের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চাহিদা অনুপাতে আবেদন প্রেরণ করা হয়েছে।

শান্তিগঞ্জ উপজেলা কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন মনিটরিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনোয়ার উজ জামান বলেন, আমি ট্রেনিং ১০-১২ দিনের মতো ভারতে ছিলাম। এই উপজেলার ৯০টি পিআইসি কমিটির লোকজনদের বিল আমাদের কাছে যা ছিল, রবিবার এসে প্রায় ৪২ ভাগের মতো পরিশোধ করেছি। আশা করি, অবশিষ্ট টাকাও ধাপে ধাপে পরিশোধ করা হবে। পিআইসি কমিটির লোকজনদের দ্রুত সময়ের মধ্যে বিল প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তাগিদ দেয়া হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App