×

সাহিত্য

নৃত্যের ছন্দে কবিতা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৩, ০৯:৩৮ পিএম

নৃত্যের ছন্দে কবিতা

বুধবার রাজধানীর বেইলি রোডের মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় গুরু শিষ্য পরম্পরা শীর্ষক নৃত্যায়োজন। ছবি: ভোরের কাগজ

নৃত্যের ছন্দে কবিতা

নৃত্যের ছন্দে যেন বিদুত চমকাল মহিলা সমিতির মঞ্চে। যেন একেকটি কবিতা রচিত হলো।

ভারতীয় নৃত্যধারার শাস্ত্রীয় নৃত্যশৈলীকে তুলে ধরলেন এই প্রজন্মের শিল্পীরা। পরিবেশিত হয়েছে মণিপুরী থেকে কথক, ভরতনাট্যম থেকে ওড়িশি নৃত্য। রাধা-কৃষ্ণের প্রেম থেকে প্রকৃতি বন্দনাসহ পৌরাণিক নানা বিষয়কে উপজীব্য করে সাজানো ছিল পরিবেশনাসমূহ। পরিবেশনাগুলো উপস্থাপন করেন চার খ্যাতিমান নৃত্যশিল্পী ও তাদের শিষ্যবৃন্দ। প্রথিতযশা এই চার শিল্পীর মধ্যে মণিপুরী নাচ করেন তামান্না রহমান। মুনমুন আহমেদ উপস্থাপন করেন কত্থক নাচ। প্রমা অবন্তী মন মাতান ওড়িশি নাচে। ভরতনাট্যমকে সঙ্গী করে মুগ্ধতা ছড়ান বেলায়েত হোসেন খান। এই চার শিল্পীর প্রত্যেকেই তাদের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ২০ মিনিট করে এক ঘণ্টা বিশ মিনিটের অনবদ্য পরিবেশনা উপস্থাপন করেন।

বুধবার (১৫ মার্চ) রাজধানীর বেইলি রোডের মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় গুরু-শিষ্য পরম্পরা শীর্ষক এই নৃত্যায়োজন। তরুণ প্রজন্মকে শাস্ত্রীয় নাচের প্রতি আকৃষ্ট করা এবং দর্শকের কাছে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে তামান্না রহমানের পরিকল্পনায় দর্শনীর বিনিময়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নৃত্যম নৃত্যশীলন কেন্দ্র।

এই আয়োজনে অতিথি হিসেবে সংক্ষিপ্ত কথনে অংশ নেন নাট্যজন আতাউর রহমান, বরেণ্য চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী, একুশে পদকজয়ী নৃত্যশিল্পী আমানুল হক, বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতি মীনু হক ও বাংলাদেশ মহিলা সমিতির সভাপতি সিতারা আহসানস্নস্নাহ। অতিথি ও নৃত্য গুরুদের ফুল ও উত্তরীয় দিয়ে বরণ করে নেন নৃত্যমের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক তামান্না রহমান। অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলপ্রদ্বীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে নৃত্যানুষ্ঠানের সূচনা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আরেক নৃত্যশিল্পী তাবাসসুম আহমেদ।

তামান্না রহমান বলেন, আমাদের তত্ত্বাবধানে অনেক শিক্ষার্থী তৈরি হচ্ছে। এই নৃত্যশিক্ষার্থীদের পরিবেশনার সুযোগ করে দিতে হবে। এ ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তারা সেই সুযোগটি পাচ্ছে এবং শাস্ত্রীয় নাচ শেখার প্রতি অনুপ্রাণিত হবে।

পরিবেশনা পর্বের শুরুতে একসঙ্গে মঞ্চে আসেন মুনমুন আহমেদ, হোসেন খান, তামান্না রহমান ও প্রমা অবন্তী। চার শিল্পীর সম্মিলিত উপস্থাপনায় উদ্ভাসিত হয় গুরু বন্দনা শীর্ষক পরিবেশনা। আর এই পরিবেশনার আশ্রয়ে তারা নিজ গুরুদের প্রতি প্রতি সম্মান জ্ঞাপন করেন।

এরপর ছিল তামান্না রহমানের নেতৃত্বাধীন নৃত্যম নৃত্যশীলন কেন্দ্রের পরিবেশনা। বাজিকর খেল শীর্ষক উপস্থাপনায় উঠে আসে রাধা-কৃষ্ণের প্রেমলীলা। এছাড়াও নৃত্যদলচি পরিবেশন করে মঙ্গলাচরণ, ষড়ঙ্গ নর্তন ও মৃদঙ্গ বাদন শীর্ষক পৌরাণিক গল্পময় পরিবেশনা। তামান্না রহমানের সঙ্গী পরিবেশনায় অংশ নেন সব্রত দাস, মানোমী তানজানা অর্থী, কমলিকা তুলি, মাহমুদুল হাসান রিপন, ঐন্দ্রিলা বীথি, আরিবা ছোঁয়া, ফারহানা তন্দ্রা, জয়ন্তী সামান্থা, মুক্তা আহমেদ ও অর্ণব শর্মা।

মুনমুন আহমেদের পরিচালনায় রেওয়াজ পারফর্মার্স স্কুলের শিক্ষার্থীরা প্রথম পরিবেশনায় উপস্থাপন করে নটরাজ শিব বন্দনা। ‘ও পাখি তারে বলে দিস’ গানের সঙ্গে পরে শিষ্য শর্মিষ্ঠা সোনালী সরকারকে নিয়ে ‘বর্ষায় ময়ূর বরষে বাদারিয়া সাওয়ান কি’ গানের সুরে নৃত্য পরিবেশন করেন মুনমুন। এই দলের শেষ পরিবেশনার শিরোনাম ছিল আন্তাকশ্রী।

ভরতনাট্যমের যতিস্বরম শীর্ষক উপস্থাপনা দিয়ে পরিবেশনার শুরু করেন বেলায়েত হোসেন খান ও তার দল। বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে মঞ্চে পারফর্ম করেন কান্তা সরকার, অন্তরা ও প্রমি।

ওড়িশি নৃত্য নিয়ে মঞ্চে আসেন চট্টগ্রামের ওড়িশি অ্যান্ড টেগোর ড্যান্স মুভমেন্ট সেন্টারের শিল্পীরা। নাচের তাল, লয়, ও ছন্দের সম্মিলনে এই দলটি মঙ্গলাচরণ, যুগা দণ্ড পল্লবী ও পল্লবী শীর্ষক পরিবেশনা উপস্থাপন করে। প্রমা অবন্তীর সঙ্গে পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করেন নিবিড় দাশ গুপ্তা, তুষি শর্মা, ময়ূখ সরকার, দিয়া দাশ গুপ্তা, মৈত্রী চক্রবর্ত্তী, অর্জিতা সেন চৌধুরী, বৈশাখী বড়ুয়া ও শ্রাবণী ধর।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App