×

সারাদেশ

নগর ভবন ঘেরাওয়ে পুলিশের বাধা: মেয়রপন্থীদের পাল্টা বিক্ষোভ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৩, ০৮:৫৫ পিএম

নগর ভবন ঘেরাওয়ে পুলিশের বাধা: মেয়রপন্থীদের পাল্টা বিক্ষোভ

ছবি: সংগৃহীত

বাড়তি গৃহকর বাতিলের দাবিতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে ‘করদাতা সুরক্ষা পরিষদ’। তবে নগর ভবন অভিমুখে মিছিল নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।

বুধবার (১৫ মার্চ) দুপুরে আন্দোলনকারীরা নগর ভবনের অন্তত এক কিলোমিটার দূরে সড়কে অবস্থান নেয়। পরে আন্দোলনকারী পরিষদের একটি প্রতিনিধি দল নগর ভবনে গিয়ে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি দেন। তবে এ সময় মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী নিজ কার্যালয়ে থাকলেও আন্দোলনকারীদের দেখা দেননি।

এদিকে, বুধবার (১৫ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে এ কর্মসূচি চলাকালে মেয়রপন্থী আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কিছু নেতাকর্মী আন্দোলনকারীদের ওপর দফায় দফায় চড়াও হন। তবে পুলিশের কৌশলী ও কঠোর ভূমিকার কারণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ পাহারা দিয়ে পরিষদের নেতাদের নগর ভবনে নিয়ে যান এবং স্মারকলিপি দেয়ার পর তাদের আবারও সড়কে পৌঁছে দেন।

অন্যদিকে, নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচির দিনে বুধবার সকাল থেকে নগরীর বাটালি হিল সংলগ্ন এলাকায় চসিক মেয়রের অস্থায়ী কার্যালয় নগর ভবনের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তবে করদাতা সুরক্ষা পরিষদের কর্মসূচির কারণে ফটক বন্ধ করা হয়নি বলে দাবি করছেন চসিক কর্তৃপক্ষ। সকাল ৯টায় তালা লাগিয়ে দেয়ায় কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকে কর্মস্থলে প্রবেশ করতে না পেরে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকেন। সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষও দুর্ভোগে পড়েন।

জানা যায়, সকাল সোয়া নয়টায় নগর ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয় সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। কর্মচারীরা টাইগারপাস সিটি কর্পোরেশনের অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। খবর পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হলে সাড়ে ১০টার দিকে ফটক খুলে দেয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চসিক’র সচিব খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘সকাল ৯টায় অফিসে প্রবেশের সময়সীমা মানতে বাধ্য করতেই ফটক বন্ধ করা হয়েছে। ফটকে তালা দেয়ার সাথে নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচির কোন সম্পর্ক নেই। চসিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যাতে সঠিক সময়ে অফিসে আসেন, তাই কর্তৃপক্ষের কঠোর অবস্থান বোঝাতে তালা দেয়া হয়েছে। এখন থেকে এ নিয়ম কার্যকর থাকবে।’

এদিকে, ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, করদাতা সুরক্ষা পরিষদের নেতাকর্মীরা নগরীর ৪১ ওয়ার্ড থেকে মিছিল নিয়ে বুধবার সকালে কদমতলী এলাকায় জড়ো হন। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের পর তারা মিছিল নিয়ে দেওয়ানহাট হয়ে নগর ভবনের দিকে এগোতে থাকেন। মিছিল টাইগারপাস এলাকায় পৌঁছার পর একদল লোক ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগান দিয়ে তাদের ওপর চড়াও হন। সেখানে আগে থেকেই পুলিশ মোতায়েন ছিল। একপর্যায়ে পুলিশ উভয়পক্ষের মাঝখানে দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এ সময় পুলিশ আন্দোলনকারীদের আর মিছিল নিয়ে এগোতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত জানালে তারা সেখানেই অবস্থান নেয়। তারা পুলিশ এবং সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও গৃহকরের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে থাকেন।

অন্যদিকে মেয়রের পক্ষে আসা লোকজন পরিষদের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে থাকেন। তারা আন্দোলনকারীদের ‘বিএনপি-জামায়াত ও স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি’র দোসর বলে অভিযুক্ত করেন। পরে পুলিশী নিরাপত্তা বেস্টনীর মধ্য দিয়ে পরিষদের নেতা নুরুল আবছার ও জান্নাতুল ফেরদৌস পপির নেতৃত্বে পাঁচজনের একটি প্রতিনিধি দল নগর ভবনে রওনা দেন। টাইগার পাস থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত মূল সড়ক থেকে নগর ভবনের দিকে যাবার সড়কে প্রবেশের পথে আবার মেয়রপন্থী প্রায় অর্ধশত লোক তাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করেন।

তারা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিয়ে তাদের নগর ভবনে ঢুকতে না দেয়ার হুমকি দেন। তবে পুলিশ তাদের নিরাপত্তা দিয়ে নগর ভবনে নিয়ে যান। তারা মেয়রের সঙ্গে সাক্ষাত করে স্মারকলিপি দিতে চাইলেও অনুমতি দেওয়া হয়নি। পরে তারা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলামের কক্ষে যান। সেখানে প্রায় আধাঘন্টা অবস্থানের পর পরিষদের নেতারা বেরিয়ে আসেন। এ সময় তারা নগর ভবনের মূল ফটকের ভেতরে আবারও মেয়রপন্থীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। কয়েকজন পরিষদের নেতাদের দিকে তেড়ে আসেন। উত্তেজনার মধ্যে পুলিশ আবারও বেস্টনি তৈরি করে তাদের টাইগারপাসে জমায়েত পর্যন্ত পৌঁছে দেন।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) নোবেল চাকমা বলেন, করদাতা পরিষদ মিছিল নিয়ে দেওয়ানহাট হয়ে টাইগারপাসের দিকে আসেন। সেখানে আবার আরেকটা গ্রুপ ছিল। আমরা উভয় গ্রুপের মাঝখানে দাঁড়িয়ে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখি। আমরা তাদের অনুরোধ করেছিলাম মিছিল নিয়ে আর সামনে না যায়। তারা অনুরোধ শুনেছেন। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা হয়নি।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App