আমতলীতে মুক্তিযোদ্ধারা পৃথক অনুষ্ঠান করবেন!
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৩, ১১:০৩ পিএম
ছবি: ভোরের কাগজ
বরগুনার আমতলীতে মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিরোধী আখ্যা দিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মো. সেলিম মাহমুদকে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস এবং ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের সরকারী কোন কর্মসূচির দায়িত্বে রাখা হলে তাহলে প্রশাসনের সকল অনুষ্ঠান বর্জন ও আলাদাভাবে কর্মসূচি পালনের হুমকি দেন উপজেলার সকল বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস এবং ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক প্রস্তুতি সভার আয়োজন করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মো. মজিবুর রহমান, পৌর মেয়র মো. মতিয়ার রহমান, সহকারী পুলিশ সুপার (আমতলী-তালতলী সার্কেল) মো. রুহুল আমিন, ওসি একেএম মিজানুর রহমান, জনপ্রতিনিধি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান, সরকারি দপ্তর প্রধান ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সভা শুরুর এক পর্যায়ে আমতলী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডঃ একেএম সামমুদ্দিন শানু তার বক্তব্য উপস্থাপন করতে গিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেকিম সুপারভাইজার মো. সেলিম মাহমুদকে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিরোধী, মুক্তিযোদ্ধাদের শত্রু আখ্যা দিয়ে তাকে গণহত্যা এবং মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে নেয়া কর্মসূচির সাব কমিটিতে তার নাম অন্তর্ভূক্ত না করতে অনুরোধ করেন। তারপরেও যদি তার নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয় তাহলে উপজেলা প্রশাসনের সকল অনুষ্ঠান বর্জন ও প্রয়োজনে আলাদাভাবে কর্মসূচি পালনের হুমকি দেন আমতলীর বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. একেএম সামসুদ্দিন শানু বলেন, দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে আমতলীতে চাকরি করা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মো. সেলিম মাহমুদ স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিরোধী এবং মুক্তিযোদ্ধাদের শত্রু। তিনি বিভিন্ন সময় মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কুটুক্তি মূলক কথাবার্তা বলে থাকেন। বীর মুক্তিযোদ্ধারা কোন কাজে তার দপ্তরে গেলে তিনি তাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরন ও তাদের অবমূল্যায়ন করে থাকেন। এ নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ ছিল। তাই আমরা আমতলীর সকল মুক্থিযোদ্ধারা সিন্ধান্ত নিয়েছি গণহত্যা এবং মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে প্রশাসনের নেয়া কর্মসূচিতে তার নাম অন্তর্ভূক্ত এবং উপস্থিতি থাকে তাহলে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা সেই কর্মসূচি বর্জন করবো। প্রয়োজনে আমরা আলাদাভাবে পৃথক কর্মসূচি পালন করবো।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মো. সেলিম মাহমুদ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিরোধী নই। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সঠিক নয়।
ওই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. একেএম সামসুদ্দিন শানু’র দেয়া বক্তব্য আমি খতিয়ে দেখতেছি। ওই বিষয়ে আমি লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে এর সত্যতা পাওয়া গেলে আমি একাডেমিক সুপারভাইজারের প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নিবো।