×

জাতীয়

পুলিশে নারীর অবস্থান এখন সুদৃঢ়: আইজিপি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৩, ০৯:৪৩ পিএম

পুলিশে নারীর অবস্থান এখন সুদৃঢ়: আইজিপি

সোমবার দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স অডিটোরিয়ামে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সম্মাননা স্মারক প্রদান, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। ছবি: ভোরের কাগজ

পুলিশে নারীর অবস্থান এখন সুদৃঢ়: আইজিপি
পুলিশে নারীর অবস্থান এখন সুদৃঢ়: আইজিপি
পুলিশে নারীর অবস্থান এখন সুদৃঢ়: আইজিপি
পুলিশে নারীর অবস্থান এখন সুদৃঢ়: আইজিপি

পুলিশে নারীর পদচারণা একসময় এতটা মসৃণ ছিল না। তখন তাদেরকে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশে নারীদের অবস্থান এখন সুদৃঢ় হয়েছে পূর্বসূরীদের দেখানো পথ ধরে। আজকে নারী পুলিশ সদস্যরা দক্ষতার সঙ্গে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সম্মাননা স্মারক প্রদান, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস আ্যসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার আ্যন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের পরিচালক প্রফেসর ড. তানিয়া হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস আ্যসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশের কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ফাতেমা বেগম, সাবেক ডিআইজি মিলি বিশ্বাস, এসবির ডিআইজি ও বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্কের (বিপিডব্লিউএন) সভাপতি আমেনা বেগমসহ প্রমুখ।

ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন' প্রতিপাদ্যে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ফাতেমা বেগম, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি রওশন আরা বেগম (মরণোত্তর), সাবেক ডিআইজি মিলি বিশ্বাস, বাংলাদেশ পুলিশ এয়ার উইংয়ের প্রথম নারী পাইলট ফাতেমা তুজ জোহরা ও বিপিডব্লিউএন-কে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।

বাংলাদেশ পুলিশে নারীদের অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আইজিপি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশে চারজন নারী ডিআইজিসহ ২৪ জন অতিরিক্ত নারী ডিআইজি ও ৬৪ জন নারী পুলিশ সুপার রয়েছেন। যার সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ পুলিশে নারী পুলিশের সংখ্যা দুই ভাগ থেকে বেড়ে বর্তমানে আট ভাগে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশে নারী পুলিশ সদস্য সংযোজনের ফলে আমাদের সক্ষমতার মাত্রা অনেক বেড়েছে। পুলিশে নারীর পদচারণা একসময় এতটা মসৃণ ছিল না। তখন তাদেরকে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশে নারীদের অবস্থান এখন সুদৃঢ় হয়েছে পূর্বসূরীদের দেখানো পথ ধরে। আজকে নারী পুলিশ সদস্যরা দক্ষতার সাথে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

পুলিশ প্রধান বলেন, নারীরা যত চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করবে তারা ততো এগিয়ে যাবে। করোনার সময় যখন মানবিকতার চরম বিপর্যয় ঘটেছে তখন বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্ক ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্নভাবে নারী পুলিশ সদস্যদের সাহায্য সহযোগিতা করেছে, যা সত্যিই প্রশংসনীয়।

নারী ভিকটিমদের সুরক্ষার বিষয় উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, নারী পুলিশ সদস্যরা নারী ভিকটিমদের সহায়তা দিচ্ছেন। এতে নারীদের কাছে পুলিশের গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে। জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ আজ একটি আস্থার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এখানেও রয়েছে নারী পুলিশ সদস্যদের অনবদ্য অবদান।

নারীর অধিকারের কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, আমি যদি আমার অধিকার পেতে চাই তবে আমাকে সোচ্চার হতে হবে। যোগ্যতা প্রমাণের মধ্য দিয়ে নিজের অধিকার আদায় করে নিতে হবে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের নারী সদস্যরা দেশ ও দেশের বাইরে মেধা এবং যোগ্যতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে তাদের সক্ষমতার প্রমাণ রাখছেন।

ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার ও উইমেন সাপোর্ট সেন্টারে শুধুমাত্র নারী পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, নির্যাতিত নারীদেরকে মানসিক ও আইনগত সেবাসহ বিভিন্নভাবে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছেন নারী পুলিশ সদস্যরা। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমানে নারীরা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন অদূর ভবিষ্যতে দেশে নির্দিষ্ট করে আলাদাভাবে নারী দিবস পালনের দরকার হবে না। প্রযুক্তিগত শিক্ষায়ও আমাদের দেশের মেয়েরা অনেক এগিয়ে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাবি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার আ্যন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের পরিচালক ড. তানিয়া হক তার সুপারিশে বলেন, অনলাইনে নিরাপদ বিচরণের জন্য জাতীয় থেকে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত আইনের যথাযথ প্রচার, প্রসার ও প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। এর সঙ্গে নারীদেরকেও নিজের আইনি অধিকারের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই সকল মানুষের সমান অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মানসিকতা নিয়ে বেরিয়ে আসতে পারে। নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের মাধ্যমে এক্ষেত্রে সমতা আনতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ইন্টারনেটে সাইবার প্ল্যাটফর্মে নারীরা নিরাপদ নয়। ফলে তারা নানাভাবে হয়রানি, বুলিংয়ের (ভার্চুয়াল জগতে নিগ্রহ) শিকার হয়। এমনকি আত্মহত্যার ঘটনা পর্যন্ত ঘটছে। বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে পুলিশ সদরদপ্তরে নারীদের সহয়তার জন্য সাইবার স্পেসে প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে।পাশাপাশি সাইবার কেন্দ্রিক আমাদের অন্যান্য ইউনিটও রয়েছে। আমরা যদি সাইবার স্পেসে সেফটি আ্যন্ড সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে পারি তাহলে নারীদের ক্ষেত্রে বড় বাধা কেটে যাবে। পুলিশ হিসেবে আমাদের ওপর সে দায়িত্ব বর্তায়।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করতে হলে নারী পুলিশ সদস্যের সংখ্যা বাড়াতে হবে, নারীর ক্ষমতায়ন করতে হবে, তাদেরকে নীতিনির্ধারণীতে আনতে হবে। পাশাপাশি সকল নারীদেরকে সমান সুযোগ করে দিতে হবে। এই কাজের দায়িত্ব যেমন পুরুষ সহকর্মীদের তেমনি নারীদেরও দায়িত্ব আছে। নারীদেরও আগামীর অগ্রগতির জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। নিজেকে নারী হিসেবে না দেখে কর্মকর্তা হিসেবে ভাবতে হবে। তবেই আমরা এগোতে পারবো।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App