×

সারাদেশ

মেয়ের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল, লজ্জায় মায়ের আত্মহত্যা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২৩, ০৭:৩০ পিএম

মেয়ের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল, লজ্জায় মায়ের আত্মহত্যা

ছবি: ভোরের কাগজ

বরগুনার তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের লাউপাড়া গ্রামে মেয়ের আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় অপমানে জোসনা বেগম (৩৫) নামে এক মা আত্মহত্যার ৪দিন পর মামলায় অভিযুক্ত বখাটে আসাদুলকে রবিবার (১২ মার্চ) সকালে পটুয়াখালী জেলার মহিপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৮ এর পটুয়াখালী ক্যাম্পের সসদ্যরা।

ভুক্তভোগীর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের লাউপাড়া এলাকার সুলতান হাওলাদারের বখাটে ছেলে আসাদুল (২৫) একই এলাকার সোবাহান মোল্লার ৮ম শ্রেণির স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে (১৩) বিভিন্ন সময়ে উত্যক্ত করত। মেয়ের নিজের ফোন না থাকায় আসাদুল ওই মেয়ের মায়ের মোবাইল ফোনে মেয়ের সাথে কথা বলত। এক পর্যায়ে সে মেয়েকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে নগ্ন অবস্থায় ভিডিও কলে কথা বলে। আসাদুল মেয়ের অজান্তে ওই নগ্ন ভিডিও রেকর্ড করে রাখে।

গত ৮ মার্চ মেয়ের মা জোসনা বেগমকে ভিডিও দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে বখাটে আসাদুল। ওই টাকা একদিনের মধ্যে না দিলে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেয়ার হুমকিও দেয়। একদিন অতিবাহিত হয়ে গেলে টাকা না পেয়ে নগ্ন ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় আসাদুল।

বিষয়টি গত ৯ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে জানাজানি হলে মা জোসনা বেগম (৩৫) ব্যাটারির এসিড পানি পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। পরে বরিশালে ময়না তদন্ত শেষে লাশ দাফন করা হয়। ওই বিষয়টি নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

৮ম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী বলেন, আসাদুল আমাকে প্রতিনিয়ত উত্যক্ত করতো এবং ফোনে কথা বলতে বাধ্য করে। নিরুপায় হয়ে এক সময় আমি তার সাথে কথা বলি। পরে আমাকে ব্লাকমেইল করে নগ্ন ভিডিও কলে কথা বলাতে বাধ্য করেন ও সেই ভিডিওটি রেকর্ড করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে আমার মায়ের নিকট ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে না পারায় আসাদুল ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। এ লজ্জায় আমার মা আত্মহত্যা করেন। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। বিচার না পেলে আমিও আত্মহত্যা করবো।

মেয়ের বাবা সোবাহান মোল্লা বলেন, আমি ঢাকার ইপিজেডে চাকরি করি। স্ত্রীর মৃত্যুর খবর পেয়ে ঢাকা থেকে আসার পর বিষয়টি জানতে পেরেছি।

তিনি আরো বলেন, অভিযুক্ত আসাদুলকে আসামি করে তালতলী থানায় মামলা করেছি।

তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, এসিড পানে মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত আসাদুলকে আসামি করে শনিবার রাতে তালতলী থানায় মামলা হয়েছে। মামলার পর রবিবার সকালে মেয়ের জবানবন্দি গ্রহণের জন্য আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে।

র‌্যাব-৮ পটুয়াখালীর কোম্পানী কমান্ডার এসপি তুহিন রেজা জানান, অভিযুক্ত আসাদুলকে রবিবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পটুয়াখালী জেলার মহিপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App