শেকলে বেঁধে কিশোর নির্যাতনে মামলা
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২৩, ০২:২০ পিএম
ভোরের কাগজ
নাটোরের গুরুদাসপুরে বাবার কাছে পাওনা টাকা আদায় করতে শাওন ইসলাম (১৩) নামে এক কিশোরকে শেকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (১০ মার্চ) উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের চলনালি গ্রামে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, বেলা ২টার দিকে পুলিশের সহায়তায় নির্যাতনের শিকার কিশোরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শামীমা আফরোজ জানান, ওই কিশোর শাওনেরর বাম পায়ে ফুলা জখমের চিহ্ন রয়েছে, তার চিকিৎসা চলছে। এ ঘটনায় শাওনের মা আরজিনা বেগম মুন্নাফ হোসেনকে অভিযুক্ত করে গুরুদাসপুর থানায় শনিবার দুপুরে মামলা করেছেন।
নির্যাতনের শিকার শাওনের বাবার নাম কাবিল হোসেনের বাড়ি উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বেড়গঙ্গরামপুর গ্রামে। চলনালি গ্রামের মুন্নাফ হোসেনের ৫ বিঘা জমি বছর চুক্তিতে লিজ নিয়ে সেখানে পেয়ারার বাগান করেছেন। শুক্রবার সকালে লিজ নেয়া ওই বাগান থেকে পেয়ারা সংগ্রহ করতে এলে শাওনকে ধরে মুন্নাফ তার বাড়িতে নিয়ে যায়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শাওন জানায়, মুন্নাফ ও তার ভাতিজারা জোর জবরদস্তি করে তাদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বাম পায়ে শেকল বেঁধে তাকে চড়-থাপ্পর ও কিলঘুষি মারতে থাকে। এভাবে সকাল ৭টা থেকে পুলিশ আসার আগ পর্যন্ত (বেলা ২টা) বেঁধে রেখে থেমে থেমে নির্যাতন করা হয় তাকে।
শাওনের মা আরজিনা বেগম জানান, বেলা ১১টার দিকে মুঠোফোনে খবর পেয়ে ছেলেকে উদ্ধারের জন্য মুন্নাফের বাড়িতে যান তিনি। কিন্তু ছেলেকে ছেড়ে না দিয়ে তার সাথে অশোভন আচরণ করেন মুন্নাফ ও তার ভাতিজারা। নিরুপায় হয়ে থানা পুলিশের আশ্রয় নেন তিনি। পরে বেলা ২টার দিকে পুলিশের সহায়তায় ছেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ছেলেকে নির্যাতনকারীদের শাস্তি দাবি করেন তিনি।
ছেলেকে নির্যাতনের ঘটনাটি অমানবিক দাবি করে শাওনের বাবা কাবিল হোসেন মুঠোফোনে দাবি করে বলেন, ‘অভিযুক্ত মুন্নাফের কাছ থেকে ১৭ হাজার টাকা বছর চুক্তিতে ৫ বিঘা জমি ৫ বছরের জন্য লিজ নিয়েছিলেন তিনি। দুই বছর ফলন বিপর্যয়ের কারণে এক বছরের টাকা পরিশোধে বিলম্ব হয়েছে। বকেয়া টাকা পেতেই তার ছেলেকে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।
নির্যাতনের ঘটনা অস্বীকর করে মুন্নাফ হোসেন দাবি করে বলেন, ‘জমি লিজের টাকা পরিশোধ না করে টালবাহানা করছেন কাবিল হোসেন। এ কারণে তাকে শাসানো হয়েছে মাত্র।
অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিন বলেন, ‘এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে একটি নিয়মিত মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়েছে। আসামিকে গ্রেপ্তার চেষ্টা চলছে।