×

সম্পাদকীয়

গুলিস্তান ট্র্যাজেডি : গ্যাস বিস্ফোরণে মৃত্যু আর কত

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০২৩, ১২:২৫ এএম

গুলিস্তান ট্র্যাজেডি : গ্যাস বিস্ফোরণে মৃত্যু আর কত

গ্যাসলাইন বিস্ফোরণ ও দুর্ঘটনা এখন অহরহই ঘটছে এবং এতে হতাহতের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। গত রবিবার সকালে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় বাণিজ্যিক একটি ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে তাৎক্ষণিকভাবে তিনজনের মৃত্যু হয় এবং অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন। শক্তিশালী বিস্ফোরণে ওই ভবনের তৃতীয় তলা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন জমে থাকা গ্যাসের কারণে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস। এ দুর্ঘটনার রেশ না কাটতেই গত মঙ্গলবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে গুলিস্তানে সিদ্দিকবাজারে বিআরটিসি বাস কাউন্টারের পাশে একটি ভবনে বিস্ফোরণের পর আগুন লেগে যায়। নর্থ সাউথ রোডের ১৮০/১ হোল্ডিংয়ের পাঁচ তলা ভবনের নিচ তলায় কয়েকটি স্যানিটারি পণ্যের দোকান ছিল। এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা দুই শতাধিক। র‌্যাব বলেছে, সিদ্দিকবাজারে ভবন বিস্ফোরণের ঘটনাটি বেজমেন্টে জমে থাকা গ্যাস থেকে হতে পারে। বিস্ফোরণের ঘটনাটি নিঃসন্দেহে ভয়াবহ এবং দুঃখজনক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গ্যাস বিস্ফোরণের কারণ গ্যাসলাইনে লিকেজ থাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডার ব্যবহার। সাধারণত দেখা যায়, গ্যাসলাইনের লিকেজ বা ত্রæটির ব্যাপারে ভবনের মালিকরা সচেতন থাকেন না। আবার যারা ব্যবহারকারী তাদেরও অসতর্কতা রয়েছে। আমরা সেই ব্যাপারে ক্রমাগত অবহেলা প্রদর্শন করে আসছি। গ্যাসের পুরনো পাইপলাইনে ক্ষয়, পুরনো কিংবা নতুন পাইপলাইনে ময়লা-আবর্জনা জমে লিকেজ-ছিদ্র ইত্যাদি তৈরি হওয়া, ওয়াসাসহ নানা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সংস্কার-উন্নয়ন কাজের সময় পাইপ ফেটে যাওয়া কিংবা পাইপের সংযোগ দুর্বল ও ঢিলে হয়ে যাওয়ার কারণেও এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। আবার গ্যাস বিতরণ লাইন রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, অযতœ-অবহেলার কারণেও নাগরিকদের জন্য তা বিপদ ডেকে আনছে। গুলিস্তানে বিস্ফোরণের বিষয়টি গণমাধ্যমে জোরালোভাবে সামনে এসেছে। বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধান ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। আমরা চাই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসুক। সংশ্লিষ্ট গ্যাস কর্তৃপক্ষ এ দুর্ঘটনায় দায় এড়াতে পারে না। গ্যাস বিস্ফোরিত হয়ে যে হতাহতের ঘটনা ঘটে তা এক কথায় মারাত্মক। গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনা এতই আকস্মিকভাবে ঘটে যে, তা থেকে সাধারণত পরিত্রাণ মেলে না। আর অগ্নিদগ্ধে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ব্যয়বহুল ও ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এ ক্ষেত্রে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধকেই গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক। গ্যাসলাইন বিস্ফোরণ রোধ করতে হলে ভবনের মালিক, বসবাসকারী, গ্যাস বিতরণকারী কর্তৃপক্ষ সব পক্ষেরই দায়িত্বশীল ও সতর্ক ভূমিকা দরকার। ভবনের মালিকদের অবশ্যই উচিত তার ভবনের গ্যাস সংযোগ নিরাপদ আছে কিনা তা নিয়মিত পরীক্ষা করানো, তাকেই মূল দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমরা আশা করি, গ্যাস বিস্ফোরণজনিত দুর্ঘটনা এড়াতে সংশ্লিষ্ট সবাই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App