×

বিনোদন

বাঙলার গানে উত্তাল আর্মি স্টেডিয়াম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৩, ১০:০৫ পিএম

বাঙলার গানে উত্তাল আর্মি স্টেডিয়াম

ছবি: ভোরের কাগজ

বাঙলার গানে উত্তাল আর্মি স্টেডিয়াম
বাঙলার গানে উত্তাল আর্মি স্টেডিয়াম

জনতার ঢেউ থেকে বারবার ভেসে আসছিল ‘জয় বাংলা’ স্লোগান। সেই স্লোগানে প্রকম্পিত স্টেডিয়ামের প্রতিটি কোনা। প্রকম্পিত স্লোগানের মাঝেই মঞ্চে বাজছিল বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ। ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। পরাধীণতার শৃঙ্খল ভেঙে বাঙালি জাতিকে মুক্তির পথে আহবান জানানো সেই স্লোগানে বার বার কেঁপে উঠছিলো আর্মি স্টেডিয়াম। বাক্যে বাক্যে, শব্দে শব্দে তারুণ্যের বাঁধভাঙ্গা উচ্ছাস আর উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা স্টেডিয়ামে। যেন ৭১ এর ৭ই মার্চের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান তদানীন্তন রেসকোর্স ময়দানই মূর্ত হলো অনুষ্ঠানস্থলে। ইউনেস্কো স্বীকৃত ইতিহাসের অংশ দখল করে রাখা সেই ভাষণের সঙ্গে সুরের মূর্চ্ছনায় নান্দনিকতার সমুদ্রে ভেসে যায় আর্মি স্টেডিয়াম। সেই সঙ্গে আলোকের ঝর্ণাধার এই আনন্দের লগনে এঁকে দিলো শিল্পের সুষমা।

বুধবার (৮ মার্চ) এমন দৃশ্যকল্পই চিত্রিত ছিলো রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত জয় বাংলা’ কনসার্টে। করোনা মহামারির কারণে দুই বছর গ্যাপ দিয়ে নতুন করে আবারো অনুষ্ঠিত হলো মুক্তির প্রেরণাদায়ী এই স্লোগানের কনসার্ট। ৭ মার্চ পবিত্র শবে বরাত হওয়ায় বুধবার (৮ মার্চ) অনুষ্ঠিত হয় এবারের কনসার্ট।

ব্যান্ডের সুরের উন্মাদনায় তারুণ্যের উন্মাদনা ছিলো পুরো আসরে। নিজেদের গানের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করে উচ্ছাস আর উন্মাদনার সঙ্গে দেশপ্রেম মূর্ত হয়ে উঠে সুরের এই আসরে। একাত্তরের রণাঙ্গণের অনুপ্রেরণাদায়ি গানে গানে লাল সবুজের পতাকা ও ৫৬ হাজার বর্গমাইলের স্বদেশপ্রেম চিত্রিত হয় অনুষ্ঠানজুড়ে।

ইয়াং বাংলার সেক্রেটারিয়েট সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) আয়োজিত এই কনসার্টের শুরুতে ফুলবাড়িয়া ও গুলিস্তান বিস্ফোরণে নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

সন্ধ্যায় কাতার থেকে দেশে ফিরেই কনসার্টে উপস্থিত হন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আরো উপস্থিত ছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ। এছাড়া শেখ রেহানার ছেলে ও সিআরআই ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক শুরু থেকেই কনসার্টে উপস্থিত ছিলেন।

এ বছর ‘জয় বাংলা’ কনসার্টে অংশ নেয় অ্যাভয়েড রাফা, ক্রিপ্টিক ফেইট, আর্টসেল, চিরকুট, নেমেসিস, লালন, আরেকটা রক ব্যান্ড, মেঘদল, কার্নিভাল।

বিকেল তিনটায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই রক ব্যান্ড পরিবেশন করে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রের গান ‘আমারই দেশ সব মানুষের’। পরে তারা আরও শোনায় নিজস্ব গান ‘তাসের প্রাসাদ’ ও ‘ঘুম পাড়ানোর গান’। নজরুল ইসলাম বাবুর লেখা ও আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের সুর করা ‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’ গানটি দিয়ে নিজেদের পরিবেশনা শুরু করে ব্যান্ডদল কার্নিভাল। এরপর তারা আরও শোনায় ‘ভ্রম’, ‘আমার সত্য’ ও ‘সেইসব দিনরাত্রি’ গানগুলো।

মেঘদল পরিবেশন করে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান ‘মুক্তির মন্দির সোপান তলে’, ‘এসো আমার শহরে’, ‘চার চার চৌকো জানালায়’, ‘নির্বাণ’ ও ‘এ হাওয়া আমি এখানে’। স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের গান ‘তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর’ দিয়ে শুরু করে ক্রিপটিক ফেইট একে একে শোনায় ‘ভোরের অপেক্ষা’, ‘রাতের শেষ’, ‘রং’, ‘প্রতিবাদ’. ‘ভবঘুরে’ ও ‘আক্রমণ’ গানগুলো।

স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের গান ‘মাগো ভাবনা কেন’ গানটি নিয়ে মঞ্চে আসে ব্যান্ডদল নেমেসিস। এরপর এই গানের দলটি আরো পরিবেশন করে ‘জানালা’, ‘কোনোদিন’, ‘বীর’, ‘অবচেতন’, ‘গণজোয়ার’ ও ‘কবে’ ইত্যাদি।

স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের গান ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে দিয়ে শুরু করে ব্যান্ডদল লালন একে একে শোনায় ‘সময় গেলে সাধন হবে না’, ‘এক চোখেতে হাসন কান্দে’, ‘রুহানি’, ‘ভবের পাগল’ গানগুলো। আর্টসেল গেয়ে শোনায় এই বিদায়ে, অন্যসময়, অনিকেত প্রান্তর, দুঃখ বিলাশ, কান্ডারী হুশিয়ার গানগুলো। ব্যান্ডের সুরের মূর্চ্ছনার পাশাপাশি আর্মি স্টেডিয়ামের চারিধারে বড় পর্দায় দেখানো হয় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে নির্মিত বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App