×

সারাদেশ

ফেনীতে পুলিশ-আইনজীবীসহ ১৩ জনের কারাদণ্ড

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২৩, ০৮:৫২ পিএম

ফেনীতে পুলিশ-আইনজীবীসহ ১৩ জনের কারাদণ্ড

ছবি: ভোরের কাগজ

ফেনীতে ছয় লাখ ৮০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধারের মামলায় এক আইনজীবী, পুলিশের তিন বরখাস্ত কর্মকর্তাসহ ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

সোমবার (৬ মার্চ) দুপুরে ফেনীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক সৈয়দ মো. কায়সার মোশাররফ ইউসুফ এ রায় ঘোষণা করেন।

এ সময় মামলায় জেলহাজতে থাকা প্রধান আসামি এএসআই মাহফুজসহ পাঁচজন, জামিনে থাকা তিনজন মিলে মোট আটজনকে আদালতে এ হাজির করা হয়। সাজাপ্রাপ্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ অপর পাঁচ আসামি পলাতক। মামলা হওয়ার পরই পাঁচ পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়।

এর আগে, বুধবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন আদালত। মামলার ১৫ আসামির মধ্যে পাঁচজন গ্রেফতার ও চারজন উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন এবং বাকি পাঁচজন আসামি পলাতক ও একজন মারা গেছেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এপিপি দ্বিজেন্দ্র কুমার কংস বণিক। আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ফয়েজুল হক মিলকী, আনোয়ারুল ইসলাম ফারুক, জাহিদ হোসেন কমল, মীর মোশাররফ হোসেন মানিক ও তাজুল ইসলাম ভূঞা।

রাষ্ট্রপক্ষের মামলা পরিচালনা করা এপিপি দ্বিজেন্দ্র কুমার কংশ বণিক জানান, আদালত বরখাস্ত এসআই মো. বিল্লাল হোসেন, এসআই মো. আশিকুর রহমান, এএসআই মাহফুজুর রহমান, সালেহ আহম্মদ, ফরিদুল ইসলাম কোম্পানি, মো. জাফর কোম্পানিসহ ছয় আসামিকে ১৫ বছর করে কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন। জরিমানা আনাদায়ে তাদের ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, গিয়াস উদ্দিন, আবদুল মোতালেব মুহুরী, কাশেম আলী, মো. শাহিন মিয়া ও তোফাজ্জল হোসেনসহ ৬ আসামিকে ১০ বছর কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা আনাদায়ে ৪ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয় তাদের। এছাড়া মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত গাড়ির চালক জাবেদ আলীকে ৫ বছর কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। জরিমানা আনাদায়ে তাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

তিনি আরো জানান, গত ৭ বছরে ৩৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। গত ১ মার্চ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১-এর বিচারক সৈয়দ মো. কায়সার মোশাররফ ইউসুফের আদালতে মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়।

আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট হাফেজ আহাম্মদ জানান, গত বছরের ৬ মার্চ তৃতীয় মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডির কুমিল্লা জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। চাঞ্চল্যকর এ মামলায় তিন ম্যাজিস্ট্রেট, তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মামলার বাদীসহ ১৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ মামলার ১৩ আসামির মধ্যে ৮ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। ৫ আসামি পলাতক।

পলাতক আসামিরা হলেন- আবুল কাশেম কাশেম, আব্দুল মোতালেব মুহুরী, বিল্লাল হোসেন বেলাল, আশিকুর রহমান আশিক, জাফর কোম্পানি।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২১ জুন ফেনী শহরতলীর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লালপোলে একটি শিশুকে ধাক্কা দিয়ে প্রাইভেটকারে করে পালিয়ে যাচ্ছিলেন এএসআই মাহফুজুর রহমান। র‌্যাব-৭ এর একটি দল গাড়িটি ধাওয়া করে আটক করে। পরে গাড়িটিতে তল্লাশি চালিয়ে ৬ লাখ ৮০ হাজার পিস ইয়াবা ও নগদ ৭ লাখ টাকা জব্দ করে তারা।

এ ঘটনায় পুলিশের এএসআই মাহফুজুর রহমান ও গাড়ি চালক জাবেদ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। র‌্যাবের পক্ষ থেকে নায়েক সুবেদার মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে ২২ জুন ফেনী মডেল থানায় মাদক আইনে মামলা করেন। মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় ফেনী মডেল থানার তৎকালীন ইন্সপেক্টর মো. শাহীনুজ্জামানকে।

মো. শাহীনুজ্জামান ২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। আদালত সন্তুষ্ট না হয়ে পুনঃতদন্তের জন্য সিআইডি পুলিশকে নির্দেশ দেন। ২০১৬ সালের ২২মে দ্বিতীয় মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি ইন্সপেক্টর আবুল বশর অভিযোগপত্র জমা দিলে আদালত সেটি গ্রহণ না করে আবারও তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে ১৩ জনকে আসামি করে ২০১৯ সালের ২৫ মে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তৃতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি কুমিল্লা জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App