×

সম্পাদকীয়

শব্দদূষণ রোধে সরকারের ভূমিকা জরুরি

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২৩, ১২:৩৩ এএম

শব্দদূষণ রোধে সরকারের ভূমিকা জরুরি

শব্দদূষণ একটি নীরব ঘাতক। জলবায়ু অভিযোজনের জন্য আমারা যেভাবে কাজ করছি ঠিক একইভাবে শব্দদূষণ নিয়ে কাজ করতে হবে। শব্দদূষণ শুধু ঢাকায় নয়। সারাদেশে এ ঘাতকের ছড়াছড়ি। বেসরকারি এক জরিপের মতে, ঢাকা শহরের শব্দদূষণের অন্যতম উৎস যানবাহন ও মোটরবাইকের হর্ন। ২০১৭ সালে বন ও পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক দেশের ৮টি বিভাগীয় শহরের শব্দদূষণের ওপর করা এক জরিপ বলছে, ৮টি শহরেই ৮০ শতাংশ শব্দদূষণ করে যানবাহনের হর্ন। ২০ শতাংশ বাকিগুলো। শব্দদূষণ রোধে সরকারের পাশাপাশি বেরসরকারি সংস্থাও কাজ করছে। কোনোটাই ফলপ্রসূ হচ্ছে না। শব্দদূষণ রোধে ১৪টি সুপারিশ করেছে স্পিচ এন্ড হিয়ারিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ। গত বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ করে সংগঠনটি। উল্লেখযোগ্য সুপারিশগুলো হলো- হাইড্রলিক হর্ন বন্ধ করা; বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুসারে আবাসিক এলাকায় শব্দের গ্রহণযোগ্য সর্বোচ্চ মাত্রা ৫৫ ডেসিবেল, বাণিজ্যিক এলাকায় ৭০ ডেসিবেল বাস্তবায়ন করা; উচ্চশব্দে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ক্ষেত্রে ইয়ার প্লাগ ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা; পেশাগত কারণে কাউকে উচ্চশব্দে থাকতে হলেও তা যেন দৈনিক ছয় থেকে সাত ঘণ্টার বেশি না হয়; সব পাঠ্যসূচিতে শব্দদূষণ রোধের সচেতনতা আওতাভুক্ত করা; পাবলিক প্লেসে মাইক কিংবা স্পিকার ব্যবহারে শব্দের মাত্রা ৫৩ ডেসিবেলের মধ্যে রাখার জন্য আইন প্রণয়ন করা; শব্দদূষণ রোধে ট্রাফিক পুলিশকে ক্ষমতা দেয়া; আবাসিক এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করে তা বাস্তাবায়নে পুলিশকে ক্ষমতা দেয়া। তাদের প্রস্তাবগুলো আমলে নেয়ার মতো। স¤প্রতি জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) বিশ্বের ৬১ শহরের শব্দদূষণের মাত্রা বিশ্লেষণ করে করা ‘ফ্রন্টিয়ার্স ২০২২ : নয়েজ, ব্লেজেস এন্ড মিসম্যাচেস’ শীর্ষক প্রতিবেদন বলছে, শব্দদূষণে বিশ্বে ঢাকা এখন শীর্ষস্থান দখলকরী শহর। ঢাকার পরেই দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছে ভারতের মুরাদাবাদ ও পাকিস্তানের ইসলামাবাদ। এটি উদ্বেগের বিষয়। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালায় স্পষ্ট বলা আছে কোন এলাকায়, দিনের কোন সময়ে, কী ধরনের শব্দদূষণ করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু তা কোনোভাবেই মানা হয় না। ‘শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬’ হলো একমাত্র আইনি হাতিয়ার, যা অনেক পুরনো এবং এতে অনেক আইনের ফাঁকফোকরও আছে। তবুও এটাই একমাত্র লিগ্যাল ইন্সট্রæমেন্ট। বিদ্যমান এই আইনের ব্যাপারে সচেতন গড়ে ৫০ ভাগ মানুষ। আর আইনের প্রয়োগের ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে খুলনা (প্রয়োগ হার ২৫.২০%) ও পিছিয়ে আছে ঢাকা (প্রয়োগহার ৩.৬%)। সময় এসেছে আইনের কঠোর বাস্তবায়ন। পাশাপাশি নীতি-নির্ধারকদেরও অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। বিশেষ করে শব্দদূষণের অপকারিতা ও ক্ষতি সম্পর্কে চালক, মালিক ও সাধারণ জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রচারপত্র, সামাজিক, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে সচেতনতামূলক তথ্য প্রচার করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App