×

সাহিত্য

রং তুলিতে উদীচীর প্রতিবাদ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২৩, ১০:০০ পিএম

রং তুলিতে উদীচীর প্রতিবাদ

ছবি: ভোরের কাগজ

রং তুলিতে উদীচীর প্রতিবাদ
রং তুলিতে উদীচীর প্রতিবাদ

স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে নৃশংস ও ভয়াবহ বোমা হামলারগুলোর অন্যতম যশোর বোমা হামলা। ১৯৯৯ সালের ৬ মার্চ যশোর টাউন হল মাঠে আয়োজিত বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর দ্বাদশ জাতীয় সম্মেলনের দ্বিতীয় ও শেষ দিনে গভীর রাতে যখন হাজারো জনতা ও সংস্কৃতিকর্মী বাংলার আবহমান সংস্কৃতির ধারক বাউল গানের সুর মূর্ছনায় বিমোহিত হয়েছিলেন, ঠিক তখনই বিকট শব্দে দুই দফা বিস্ফোরণ ঘটে মঞ্চের নিচে আগে থেকে রেখে দেয়া বোমার। ধর্মান্ধ, মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর চালানো ওই হামলায় প্রাণ হারান নূর ইসলাম, সন্ধ্যা রানী, রামকৃষ্ণ, তপন, বাবুল সূত্রধরসহ অন্তত ১০ জন শিল্পী-কর্মী ও সাধারণ মানুষ। আহত হন দেড় শতাধিক শিল্পী-কর্মী ও সংস্কৃতিমনা সাধারণ মানুষ। মৌলবাদী অপশক্তির ঘৃণ্য হামলার শিকার সেসব সংস্কৃতি কর্মী এখনও পঙ্গুত্বের অভিশাপ বয়ে নিয়ে জীবন যাপন করছেন। এটিই ছিল স্বাধীনতার পরে এদেশের মাটিতে প্রথম প্রকাশ্যে বোমা হামলার ঘটনা।

আগামী ৬ মার্চ যশোর হত্যাকাণ্ডের দুই যুগপূর্তি। এ উপলক্ষে তিন দিনের কর্মসূচি শুরু করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। ‘দুই যুগেও হয় না বিচার, এই লজ্জা ও অপমান কার’ এই শ্লোগানকে ধারণ করে শনিবার তিনদিনের এ কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন হচ্ছে যশোরে। এদিন যশোর টাউন হলে সকাল সাড়ে ১০টায় ‘রং তুলিতে প্রতিবাদ’ শীর্ষক আয়োজনের উদ্বোধন করেন বোমা হামলায় নিহত নাজমুল হুদা তপনের বোন নাজমুন সুলতানা বিউটি এবং বোমা হামলায় নিহত নূর ইসলামের স্ত্রী নূরজাহান বেগম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন জেলার ২৪ জন বরেণ্য চিত্রশিল্পী। তাদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন যশোরের প্রথিতযশা চিত্রশিল্পী মফিজুর রহমান রুনু। উদীচী যশোর জেলা সংসদের সভাপতি তন্দ্রা ভট্টাচার্য্যের সভাপতিত্বে এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন উদীচী যশোর জেলা সংসদের সহ-সভাপতি এবং যশোর হত্যাকাণ্ড দিবস-২০২৩ এর আহবায়ক আব্দুল আফফান ভিক্টর, যশোর জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান খান বিপ্লব। সঞ্চালনা করেন কাজী শাহেদ নওয়াজ।

আলোচনা শেষে উদ্বোধকদ্বয় রং-তুলির আঁচড় দিয়ে ১ম দিনের কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এরপর দিনব্যাপী প্রতিবাদী চিত্রকর্ম অঙ্কনের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ তুলে ধরেন ২৪ জন বরেণ্য চিত্রশিল্পী। তাদের সঙ্গে স্থানীয় শিশুশিল্পীরাও অংশগ্রহণ করে। এছাড়া, কবিতায় প্রতিবাদ তুলে ধরেন ১৫ জন বরেণ্য বাচিকশিল্পী।

তিনদিনব্যাপী কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন আজ ৫ মার্চ, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও শ্রেণি পেশার বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া, ৬ মার্চ সমাপনী দিন বিকেল তিনটায় যশোর টাউন হল ময়দানে নির্মিত শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করা হবে। ওইদিন বিকেল সাড়ে চারটা থেকে যশোর টাউন হল ময়দানে প্রতিবাদী সমাবেশ, প্রদীপ প্রজ্জ্বালন, মশাল মিছিল ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা থাকবে। এছাড়া, বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত যশোর হত্যাকাণ্ডের শত ছবির প্রদর্শনীও থাকবে।

৬ মার্চ যশোরে আয়োজিত কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় সংসদের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও খুলনা বিভাগ, বরিশাল বিভাগ ও ঢাকা বিভাগের পদ্মাপারের জেলা ও শাখাসমূহের বন্ধুরা অংশ নেবেন। এছাড়া দেশের সব জেলা ও শাখায় যশোর হত্যাদিবস উপলক্ষে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ ও প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App