পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলাকে ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ( ২ মার্চ) সকাল ১০ টায় উপজেলা অডিটোরিয়াম মিলনায়তনে উপজেলাকে ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা করার লক্ষ্যে উপজেলার সুধীজন, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও উপকারভোগীদের নিয়ে যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতি এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইয়েমা হাসান বলেন, ইতোপূর্বে উপকারভোগীদের যাচাই-বাচাই এর জন্য উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভার সিদ্ধান্তের আলোকে প্রতিটি ইউনিয়নে মাইকিং করা হয়, ফেইজবুক, উপজেলা প্রশাসনের পেইজ এবং ইউনিয়ন পরিষদে নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হয়। তদপ্রেক্ষিতে প্রাপ্ত আবেদন যাচাই বাছাই করে ৩৭৩ জনকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। সারাদেশকে ভূমিহীন মুক্ত করেই অর্থাৎ 'ক' শ্রেণির বরাদ্ধ শেষ করে 'খ' শ্রেণির জন্য গৃহ প্রদান করা হবে মর্মে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত ভিডিও কনফারেন্স ও বরিশাল বিভাগের একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব মহোদয় নিশ্চিত করেছেন।

সভায় ইউনিয়ন চেয়ারম্যানরা অভিমত ব্যক্ত করেন যে, প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া জমি আছে কিন্তু এক সাথে একই ঘরে থাকে। সেক্ষেত্রে বাবা জীবিত থাকলে তারা নিজেদের ভূমিহীন হিসাবে দাবি করে থাকে। সেক্ষেত্রে 'খ' শ্রেণির উপকারভোগীদের এখন থেকে ঘর দিলে সেটি অনেক বেশি ফলপ্রসূ হতো ও উপকার হতো। দূরে যে সব আশ্রয়ণের ব্যারাক আছে সেখানে জীবন জীবিকার জন্য কেউ যেতে চান না।

সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গাজী আতাহার উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, আমরা এই তালিকা সম্পর্কে অবগত আছি। আমাদের কাছে যারা আসে খোঁজ নিয়া দেখা যায় তাদের কিছু না কিছু জমি রয়েছে। তাই আমার মনে হয় এই ধরনের লোকদের 'খ' শ্রেণি ভূক্ত করে পূর্নবাসন করার উদ্যোগ সরকার এখন নিতে পারে।

উপজেলা চেয়ারম্যান খান মো. আবু বকর সিদ্দকী বলেন, পটুয়াখালী জেলার সুযোগ্য জেলা প্রশাসক মহোদয় নিজে এবং তার কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের সাথে নিয়ে প্রত্যেক বাড়িতে গিয়ে এ তালিকা যাচাই করেছেন তাই এ তালিকাটি নিয়ে কারও কোন সংশয় থাকতে পারে না এবং এরপর এ উপজেলায় আর কোন ভূমিহীন থাকতে পারে না। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয়ের নিকট এই উপজেলাকে ভূমিহীন ঘোষণা প্রদানের জন্য আজকের এই সভার মাধ্যমে সানুগ্রহ অনুমতি প্রার্থনা করছি। সেই সাথে এখানে যাদের জমি আছে কিন্তু ঘর নাই তাদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও অনুরোধ করছি।

সভায় মির্জাগঞ্জ উপজেলায় কোন 'ক' শ্রেণির ভূমিহীন নেই মর্মে সকল সদস্য মতামত দেন এবং মির্জাগঞ্জ উপজেলাকে ‘ভূমিহীন ও গৃহহীন ’ মুক্ত ঘোষণা করার প্রস্তাবকে সানন্দ এবং আগ্রহ চিত্তে সকল পর্যায়ের সদস্যবৃন্দ গ্রহণ করেন। সকলেই আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক এই মির্জাগঞ্জ উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করার প্রারম্ভিক পর্যায় শুরু করা যেতে পারে।

সভার সভাপতি, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের ইউনিয়ন পর্যায়ে সকল সভা-সমাবেশে এই বিষয়টি নিয়ে প্রচারণা চালাতে অনুরোধ করেন এবং উপজেলা চেয়ারম্যান মির্জাগঞ্জ উপজেলাকে ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা করেন।