×

বিনোদন

‘সম্প্রীতির সংস্কৃতি আনবেই মুক্তি’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২৩, ০৮:৫৩ পিএম

‘সম্প্রীতির সংস্কৃতি আনবেই মুক্তি’
‘সম্প্রীতির সংস্কৃতি আনবেই মুক্তি’
‘সম্প্রীতির সংস্কৃতি আনবেই মুক্তি’
‘সম্প্রীতির সংস্কৃতি আনবেই মুক্তি’
‘সম্প্রীতির সংস্কৃতি আনবেই মুক্তি’

বসন্তের পড়ন্ত বিকেলে হাজির হয়েছিলেন বিভিন্ন নাট্যসংগঠনের কর্মীরা। এসেছিল নাট্যামোদী নানা শ্রেণি-পেশার মানুষেরাও। গোটা প্রাঙ্গণে বিরাজ করছিল উৎসবের আমেজ। উৎসবটা পথনাটক ঘিরে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে বুধবার বিকেলে শুরু হয়েছে ছয়দিনব্যাপী পথনাটক উৎসব।

‘সম্প্রীতির সংস্কৃতি আনবেই মুক্তি’ স্লোগানে আয়োজিত উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। বর্ণিল বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন নাট্যকার নির্দেশক অভিনেতা নাট্যজন মামুনুর রশীদ। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মেদ গিয়াস, সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমান।

উৎসবের উদ্বোধক মামুনুর রশীদ বলেন, নাটক যতদিন পর্যন্ত উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল ততদিন পর্যন্ত ছিল পথ নাটক। তিনি বলেন, কেউ যেন মনে না করেন, সংস্কৃতিবান্ধব সরকার আছে আমাদের পথনাটকের প্রয়োজন নেই। এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। এখন সমস্যা আরো কঠিন হয়েছে।

নাট্যব্যক্তিত্ব ও নির্দেশক মামুনুর রশীদ আরো বলেন, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি মেয়েকে ছাত্রী নারী নেত্রী কীভাবে নির্যাতন করেছে। এটা আমার কল্পনায় আসে না, একটি নারী আরেকটি নারীকে এভাবে কিকরে নির্যাতন করতে পারে। এটা আমাদের ঐতিহ্যবর্জিত, সংস্কৃতিবর্জিত এবং মানবিকতাবর্জিত। এটা নিয়ে নাটক হওয়া উচিত।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে ১ মার্চের দিনগুলোতে সংস্কৃতি কর্মী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ একসঙ্গে আমরা চলেছি, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছি। রাজনীতি আমাদের সঙ্গে ছিলেন, তারা কখনও পিছিয়ে পড়েছেন, কিন্তু আমরা নেতৃত্ব দিয়েছি। সেই দেশে আজ সংস্কৃতি ছিনতাই। রাজনীতিবিদদের দাপট। অর্থ ব্যবসায়িদের হাতে পারমানেন্ট এবং দেশটাকে কি নিষ্ঠুরভাবে তারা চালাচ্ছে। জিনিসপত্রের দাম আজ দ্বিগুণ। পথনাটকের মাধ্যমে এগুলো চিহ্নিত করে সমাজের হ্রন্ধ্রে হ্রন্ধ্রে ঢুকে পরা দুঃশাসন, দুর্নীতিকে রোধ করা দরকার।

মামুনুর রশীদ বলেন, যে শিক্ষাঙ্গনে লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে শিক্ষককে চাকরি নিতে হয় সেখানে তার মেরুদণ্ড কোথায় যাবে? মঞ্চ নাটকের তিনদিক বন্ধ থাকে এক দিক খোলা সেই মঞ্চে আমরা অভিনয় করি। যেখানে আলো থাকে, শব্দ থাকে এবং সর্বোপরি মানুষ টিকেট করেই হলে ঢোকে এবং মানুষের মনোযোগটা থাকে। কিন্তু শহীদ মিনারে যখন আমরা নাটক করি তখন দেখা যায় এর পাশ দিয়ে একটা এম্বুলেঞ্চ, ফায়ার বিগ্রেডের গাড়ি, বাস চলে যাচ্ছে, রিকসা টুংটাং শব্দ হচ্ছে। এর মধ্যে মানুষকে আবদ্ধ করে রাখা খুব কঠিন কাজ। সেই কঠিন কাজটি করার জন্য উন্নত অভিনয়, উপযোগী পাণ্ডুলিপি এবং নির্দেশনার প্রয়োজন হয়। সেই কারণে যারা পথনাটক লিখছেন তাদেরকে সচেতন থাকা দরকার। নিজেদের নাট্যরচনার যে বুদ্ধি নির্দেশনার যে বুদ্ধি তার সর্বোচ্চ প্রয়োগ করতে হবে পথ নাটকে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাদের রচিত পথনাটক বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের বিভিন্ন আয়োজনে অভিনীত হয়েছে এমন ৩৮ জন নাট্যকারকে সম্মাননা জানানো হয়। এছাড়া, এবারের উৎসবে প্রদর্শিত হবে ৩৫ টি নতুন নাটক যা আগে কোনো উৎসবে প্রদর্শিত হয়নি।

এছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে প্রদর্শিত হয় তিনটি নাটক। শুরুতেই ছিল প্রাচ্যনাটের ‘নাইওর’। জগন্ময় পালের লেখা নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন। এরপর প্রদর্শিত হয় খেয়ালী নাট্যগোষ্ঠীর ‘বাঁচার লড়াই’। রচনা ও নির্দেশনায় ছিলেন একেএ কবীর। সব শেষে ছিল বৃত্ত নাট্যদলের ‘অভিশপ্ত ছায়া’। রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন শামসুদ্দিন শাকিল।

প্রসঙ্গত, আজ মঞ্চায়ন হবে মাহফুজুর রহমান সবুজের রচনা ও নির্দেশায় নাটক ‘চক্কর’। নাদিম মোড়লের রচনা ও নির্দেশনায় ‘ভিক্ষুক সমাচার’, আলমগীর হোসেনের নির্দেশনায় ‘ভুল সবই ভুল’ ও সাহাদাত হোসেন সাহিদের নির্দেশনায় ‘সূর্যোদয়ের হুংকার’।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App