×

মুক্তচিন্তা

আওয়ামী লীগ-বিএনপিতে তুলনা হতে পারে না

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:২৯ এএম

লেখার শিরোনামটি নিয়েছি আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তৃতা থেকে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি কোটালীপাড়ায় অনুষ্ঠিত এক জনসভায় বক্তৃতায় তিনি যারা আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে সোজা কথায় এক পাল্লায় তুলে মাপার চেষ্টা করেন তাদের উদ্দেশেই কথাটি বলেছেন। তিনি দুই দলের রাজনীতি এবং কর্মকাণ্ডের পার্থক্য তুলে ধরেন। আমাদের দেশে অনেকেই আছেন যারা আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ বলে তুলে ধরার চেষ্টা করেন। রাজনৈতিক দল ও আদর্শকে বিচার করার ক্ষমতা তাদের হয়তো আকাশচুম্বী। তাই তারা সহজেই এমন কথাটি বলে ফেলেন। দুজন মানুষই যেখানে একজন আরেকজনের মতো হতে পারে না, মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠের মতো হতে পারে না সেখানে রাজনীতির মতো জটিল, কঠিন এবং আদর্শের বিষয়ের মূল্যায়নে যারা এত সহজ তুলনাকে বিবেচনা করে থাকেন তাদের কোন বিশেষণে উপস্থাপন করা যায় সে বিদ্যা আমার নেই। তবে যারা রাজনীতি সম্পর্কে মোটামুটি জ্ঞান রাখেন তারা এত বড় দুটি দলকে এক পাল্লায় তুলে যেমন মাপার চেষ্টা করেন না, একইভাবে দুই দলের মধ্যে রাজনৈতিক আদর্শ এবং নেতৃত্বের গুণগত মানদণ্ডের পার্থক্যটা মোটামুটি বোঝার চেষ্টা করেন, তুলেও ধরে থাকেন। সে কারণে রাজনীতি সচেতন বিশ্লেষকদের মত হচ্ছে আওয়ামী লীগ একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় গড়ে ওঠা দল, পক্ষান্তরে বিএনপি বহু ঘরানার ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর একটি প্ল্যাটফর্ম, যা আদর্শগতভাবে একেবারেই ভিন্ন চরিত্র নিয়ে রাজনীতির অঙ্গনে অবস্থান করছে। আমাদের মতো অনুন্নত সমাজ, রাজনীতির আদর্শ ও চেতনার অভাব এবং ঘাটতির রাষ্ট্রে এ ধরনের বাস্তবতা একেবারেই সাধারণ প্রবণতার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আওয়ামী লীগের মতো রাজনৈতিক দল এমন বহু চারিত্রিক আদর্শ বিচ্যুতির সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থায় সবচাইতে প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে বিরাজ করতে দেখা যাচ্ছে। আমাদের উপমহাদেশের ভারতের কংগ্রেসের অবস্থা, এমনকি হালের নেপালেও মূলধারার রাজনৈতিক দল ‘হাইব্রিড গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের’ সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এখন যেন ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে একবার সম্পূর্ণরূপে রক্তাক্ত অবস্থায় নেতৃত্বশূন্য করা হয়েছিল, জন্ম দেয়া হয়েছিল একাধিক আওয়ামী লীগের। আবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে ব্যবহার করে সেই আওয়ামী লীগকেই সমূলে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। এই উদাহরণগুলো যখন টানা হয় তখন অনেকের ভালো লাগে না, যারা দেয়ার চেষ্টা করেন তাদের ‘আওয়ামী’ বলে ট্যাগ লাগিয়ে দেয়া হয়। নিজেরা ভিন্ন গ্রহের রাজনীতির মহাজন হিসেবে নিজেদের প্রদর্শন করতে চান। কিন্তু তাদের দৌড় কতদূর সেটি সবাই না বুঝলেও যারা রাজনীতিকে স্কুল অব পলিটিকাল এক্সপিরিয়েন্সের আয়নায় দেখার যোগ্যতা রাখেন তারা খুব ভালো করেই দল এবং রাজনীতির পার্থক্য, সমস্যা এবং বাস্তবতাকে বুঝতে পারেন। সেই সংখ্যাটি হয়তো খুব বড় নয়। তাই তাদের মতামতকে খুব সহজেই রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থায় দ্রুত ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। কারণ রাজনীতির পাঠটি অনেকের কাছে যেমন অতি সহজ-সরল বিষয় মনে হতে পারে, সেভাবে তারা রাজনীতিকে দেখেও থাকেন এবং তাদের মতো হাইব্রিড রাজনীতিবিদের আধিক্যের কারণে বেড়ে ওঠা রাজনীতি, দল এবং নেতৃত্ব যথার্থ জায়গা করে নিতে পারছে না। আমাদের দেশের রাজনীতিতে এখন সবাই কমবেশি কয়েকটি শব্দের কথা উচ্চারণ করে থাকেন। শব্দগুলো হলো রাজনীতিতে রাজনীতি নেই, আদর্শ নেই, দুর্বৃত্তে ভরে গেছে, ‘অর্থ এবং বিত্ত উপার্জনই মুখ্য হয়ে উঠেছে’ ইত্যাদি ইত্যাদি। কথাগুলো মোটেও ভুল নয় বরং খুবই যথার্থ। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কেন রাজনীতিতে এসব অপশক্তির উত্থান তা কি নির্মোহভাবে তলিয়ে দেখা হচ্ছে না বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে? এক কথায় উত্তর হচ্ছে, যারা চেষ্টা করেন তাদের সংখ্যা খুবই নগণ্য, অপরপক্ষে যারা রাজনীতি, আদর্শ এবং নেতৃত্বের গুণাবলিকে আড়াল করে মেকি রাজনীতি, দল ও নেতা সাজার চেষ্টা করেন তাদের সংখ্যাই দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং গোটা রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে ভারাক্রান্ত করছে। এদের হাতে পড়েই আদর্শের রাজনীতি এখন নির্বাসিত, স্বার্থবাদিতার তথাকথিত রাজনীতি কেবলই দেশে দেশে পল্লবিত হচ্ছে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাষ্ট্র, সমাজ, জনগণ এবং বিশ্ব বাস্তবতা। গোটা বিশ্বের রাজনৈতিক চেহারা এখন কেবলই ধূসর হয়ে উঠছে। জনগণতন্ত্র এখন কেবলই ঢাকা পড়ে যাচ্ছে আর গণতন্ত্রের বাহারি নামে সমাজ, রাষ্ট্র এবং বিশ্বব্যবস্থায় মানবতাবিরোধী শক্তির উত্থান সংহত হচ্ছে। বিশ্ব বাস্তবতার এই বিবর্ণ চিত্র এখন সহজেই দেখা যাচ্ছে, অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। বাংলাদেশে রাজনীতিতে এখন দুটি পরস্পরবিরোধী ধারার দল এবং শক্তির অবস্থান দৃশ্যমান। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতির মূল ধারার প্রধান শক্তি। ১৯৪৯ সালে দলটি সুনির্দিষ্ট আদর্শ নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রে পূর্ব বাংলার জনগণের স্বায়ত্তশাসন, গণতান্ত্রিক অধিকার, ভাষা, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই দলটি গঠিত হয়েছিল। যারা এই দল গঠনের পেছনে এবং সম্মুখে ছিলেন তারা সবাই ব্রিটিশবিরোধী রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রামে কমবেশি পোড়খাওয়া নেতা ও কর্মী ছিলেন। কোনো কোকিল এসে কাকের বাসায় ডিম পেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করেনি। কারণ পরিবেশটা ছিল একেবারেই রাজনীতির জন্য উত্তপ্ত, যখন পোড়খাওয়া ছাড়া কেউ রাজনীতির মাঠে পা দিতে পারতেন না। ভাসানী, শামসুল হক, শেখ মুজিব দল গঠিত হতে না হতেই পাকিস্তানিদের রোষানলে পড়লেন, জেলে গেলেন। রাজনীতির পরীক্ষায় বারবার তাদের পড়তে হয়েছিল। পূর্ব বাংলার জনগণের স্বার্থসংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক কর্মসূচি উত্থাপনের মাধ্যমেই নবপ্রতিষ্ঠিত আওয়ামী মুসলিম লীগ নেতা, কর্মী এবং জনসমর্থিত হয়ে উঠতে লাগল। ’৫৪-এর নির্বাচনে দলটি পূর্ব বাংলার জনগণের নিরঙ্কুশ সমর্থনও পেয়েছিল। এরপরই পাকিস্তানিদের নতুন রোষানলে পড়তে হলো। দলকে খণ্ডবিখণ্ড করা হলো। পঞ্চাশের দশকে স্বরূপে আবির্ভূত হলো সামরিক শাসন। পাকিস্তান রাষ্ট্র কাঠামোকে আরো সাম্প্রদায়িক, আরো গণতন্ত্রবিমুখ রাষ্ট্রে পরিণত করার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হলো। গোটা এই অশুভ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে যে রাজনৈতিক দলটি আপসহীনভাবে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিল তা হচ্ছে আওয়ামী লীগ। তবে ’৪৯-এর আওয়ামী লীগ ‘৫৫ সালে আসে অসাম্প্রদায়িকতাকে আঁকড়ে ধরেছিল, তারপরও ভাসানীসহ বাম অংশ সমাজ পরিবর্তনের সেøাগান তুলে আলাদা দল করল। সামরিক শাসনের সঙ্গে বিরোধ তেমন রইল না। কিন্তু পূর্ব বাংলার জাতিগত অধিকারের আন্দোলন সংগ্রাম কাঁধে তুলে নিতে হলো আওয়ামী লীগকেই। যেখান থেকে অনেক নেতা একসময় সটকে গেলেন, কেউ কেউ মারা গেলেন। কিন্তু রাজনীতির নেতৃত্বে উঠে এলেন জেল, জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করে যারা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ব্রতী ছিলেন। সেসব নেতা ষাটের দশকে চরম নির্যাতনের মুখেও যেন আরো বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছিলেন। শেখ মুজিব, তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ শত শত নেতা তখন আওয়ামী লীগকে জনগণের কাছে তাদের আপন সংগঠন করে তুললেন। শেখ মুজিব যথার্থ সময়ে ৬ দফা দিয়ে একদিকে জনগণকে স্বাধীনতার পথ দেখালেন, অন্যদিকে পাকিস্তান রাষ্ট্র ও এর পক্ষের সব শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেন। ষাটের দশকের গোটা সময়টিই কাটল পূর্ব বাংলার জনগণের রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের সংগ্রামের পরীক্ষায়। রাজনীতি যে কত ত্যাগ এবং নিষ্ঠার বিষয় হতে পারে তা গোটা ষাটের দশকের আন্দোলন সংগ্রাম এবং দলকে সংহত করার অভিজ্ঞতার মধ্যেই দেখা যেতে পারে। সামরিক শাসকরা সবকিছু ভেঙে তছনছ করতে চেয়েছিল। শেখ মুজিবকে রাষ্ট্রদ্রোহী সাজিয়ে হত্যা করতেও চেয়েছিল। তাতেও দমে যাননি শেখ মুজিব এবং তার রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। বরং তিনি এবং তার দল পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্য আতঙ্কের বিষয় হয়ে উঠেছিলেন সেটি তারা উপলব্ধি করতে পেরেছিল। সেটিকে তারা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে দমনও করতে চেয়েছিল, কিন্তু পারেনি। ’৬৯, ’৭০ এবং ’৭১ শেখ মুজিব, আওয়ামী লীগ এবং জনগণের বৃহত্তর অংশ একাকার হয়ে উঠেছিলেন। শেখ মুজিব হয়ে গেলেন জনগণের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু। তার সঙ্গে আরো অনেকেই যেন একেকজন মুজিবে পরিণত হলেন। এভাবেই আওয়ামী লীগ হয়ে উঠেছিল পূর্ব বাংলার জনগণের স্বাধীনতায় নেতৃত্বদানকারী প্রধান শক্তিতে। ইতিহাসের এই পর্বটি খুব দীর্ঘ না হলেও অবিস্মরণীয় ও অতুলনীয়- এতে কোনো সন্দেহ নেই। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু এতে একটি আধুনিক জাতিরাষ্ট্র গঠনের বহুমাত্রিক পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হলেন। দেশ এবং আন্তর্জাতিক সব দিক থেকেই তার অনেক বাধাও ছিল, শত্রæতার অবস্থানেও অনেকে দাঁড়িয়ে গেল। যারা দাঁড়াল তারা কারা? দেশীয় কিংবা বিদেশি যেই এই জাতিরাষ্ট্র গঠনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল তারা চায়নি এদেশের জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি। তাদের অনেকেই স্বাধীনতাই চায়নি, মুক্তি তো দূরের কথাই। বঙ্গবন্ধু তার রাজনৈতিক দলকে তখন জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির আশ্রয়স্থল হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। বৃহত্তর জনপ্রশাসন এবং অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন তিনি। যারা এর বিপক্ষে ছিল তারাই ’৭৫-এর রক্তাক্ত ১৫ আগস্ট এবং ৩ নভেম্বর ঘটিয়েছিল। গোটা রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে ভেঙে তছনছ করে দেয়া হলো। রাষ্ট্রক্ষমতাকে সামরিক শক্তির ট্যাংক, কামান দিয়ে দমনের চেষ্টা করা হলো। দেশের রাজনীতিতে শক্তির এই অপব্যবহার যে পরিবর্তন নিয়ে এলো তা এ জাতির জন্য মোটেও অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষা, সাংস্কৃতিক মুক্তির সুযোগ রাখেনি। ক্ষমতাসীন শক্তি দাঁড় করাল একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম। যেখানে ডান, বাম, আদর্শহীন, অরাজনৈতিক, রাজনীতিবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধী নানা অপশক্তি একত্রিত হয়েছিল। এটি তো কোনো রাজনৈতিক দলের জন্মের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হতে পারে না। কিন্তু নামটি ধারণ করেছে রাজনৈতিক। সুতরাং এটি হাইব্রিড রাজনীতি এবং দল, নেতৃত্বও তাই। ভেঙেচুরে সব তছনছ করে দেয়া হলো। গণতন্ত্রের কথা বলা হলেও এদের দিয়ে যে গণতন্ত্র হয় না সেটি বোঝার জন্য বেশি বয়সেরও প্রয়োজন পড়ে না। আবার এই রাজনীতির জন্যও তেমন বিদ্যাশিক্ষার দরকার নেই, ধর্ম, সাম্প্রদায়িকতা, ভারতবিরোধিতা, আওয়ামীবিরোধিতা, অপপ্রচার, মিথ্যাচার ইত্যাদি দিয়েই বাজিমাত করা যায়। যত বছর এসব শক্তি ক্ষমতায় আসীন ছিল তত বছর দেশ এর বাইরে কিছু পেয়েছে এমন উদাহরণ কি খুঁজে পাওয়া যাবে? বরং ২০০১-০৬ সালে কী ঘটেছিল তা তো অনুপ চেটিয়াই বলে গেল। যারা অনুপ চেটিয়াদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও অস্ত্র খালাসের ব্যবস্থা করলেন তারা আর যাই হোক রাজনৈতিক কোনো শক্তি হতে পারে না। যারা ১৫ এবং ২১ আগস্টকে ধারণ করে তাদের সঙ্গে তুলনা কেবল হতে পারে রাজনীতিবিরোধী অপশক্তিরই। এর দ্বারা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের কী সাধিত হতে পারে, এমন প্রশ্নই করা যেতে পারে। তারা এখন দেশে-বিদেশে নতুনভাবে নতুন চমক সৃষ্টি আর দাবিনামা দিয়ে মানুষকে কাছে টানতে চাইছে, তবে তাদের বাহ্যিক চাওয়া আর ভেতরের প্রস্তুতির মধ্যে অতীতে তো কোনো মিল ছিল না, ভবিষ্যতেও হয়তো থাকবে না। আওয়ামী লীগ ’৭৫ পর্যন্ত নানা সংকটে জাতির নেতৃত্বদানে অপরিহার্য দল ছিল। এরপর ভাঙাচোরার ভেতর দিয়ে ’৮১ থেকে ধীরে ধীরে মাথা তুলে দাঁড়াতে চেষ্টা করেছে। শেখ হাসিনার শক্তভাবে সব কিছু ধরতে অনেক সময় লেগেছে। দলের নেতৃত্ব ও আদর্শে যুগোপযোগিতা আনা হলেও তৃণমূল থেকে ওপর পর্যন্ত অনেক জায়গাতেই সেই যোদ্ধারা আর নেই। অনেক সময় শেখ হাসিনাকে একাই চলতে হচ্ছে। তিনি এখন যে আওয়ামী লীগকে টেনে নিচ্ছেন তাতে নেতাকর্মীর অভাব নেই। কিন্তু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মতো দক্ষ, অভিজ্ঞ, মেধাবী এবং পরীক্ষিত নেতাকর্মীর ঘাটতি পদে পদে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সেখানেই মানুষের ভয়। সেই ভয়কে জয় করতে হবে। তাহলেই শেখ হাসিনার দলীয় উত্তরাধিকার হিসেবে আওয়ামী লীগ বিকশিত হতে পারবে। মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী : অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত), ইতিহাসবিদ ও কলাম লেখক। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App