বেলারুশের নির্বাসিত বিরোধী নেতারা দাবি করেছেন, রাজধানী মিন্সকের কাছে ড্রোন হামলায় রাশিয়ার একটি সামরিক বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেলারুশের সরকারবিরোধী দল বাইপলের নেতা আলিকসান্দর আজারভ টেলিগ্রামে করা এক পোস্টে এই হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছেন। খবর বিবিসির

এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মাচুলিশচি বিমানঘাঁটির কাছে ‘বেরিফ এ-৫০’ নামের একটি রুশ সামরিক বিমানে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ আঘাত হেনেছে। ইউক্রেন যুদ্ধের ব্যাপারে রাশিয়ার সঙ্গে বেলারুশের সহযোগিতা বৃদ্ধির মধ্যেই এই ঘটনা ঘটলো।

টেলিগ্রামে দেওয়া পোস্টে বাইপল দাবি করেন, হামলায় ওই বিমানের সামনের ও মাঝখানের অংশ ছাড়াও এর রাডার এবং এন্টেনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলো ছিল ড্রোন। বেলারুশীয়রা এই হামলা চালিয়েছে।

বেলারুশের বিরোধী নেতার একজন উপদেষ্টা ফ্রানাক ভিয়াকোরকা বলেন, এই হামলাটি ছিলো ‘সৃজনশীল’ এবং ‘স্পর্শকাতর’। এটা অত্যন্ত সাহসী এক হামলা ছিল। কারণ বেলারুশের লোকজন অত্যন্ত সন্ত্রস্ত এক পরিবেশের মধ্যে বাস করছে।

তিনি আরো বলেন, এই হামলার জন্য বিরোধী দলকে অবশ্যই স্থানীয় লোকজন সাহায্য করেছে, সামরিক বাহিনী সাহায্য করেছে, যা রুশ বিমানটির ক্ষতিসাধন করেছে।

তবে সরকারবিরোধীদের এই দাবি কতোটুকু সত্য এবং সেখানে আসলেই কী ঘটেছে তা নিরপেক্ষ কোনো সূত্র থেকে যাচাই করে দেখা সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, রুশ সামরিক বিমানে হামলার দায়িত্ব দাবি করছে, বাইপল নামের যে সংগঠন, সেটি বেলারুশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক সদস্যদের দিয়ে গঠিত। এই দলটি প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো সরকারের বিরোধিতা করছে। লুকাশেঙ্কোর সরকার এই দলটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র।

তিনি একজন কর্তৃত্ববাদী নেতা। ১৯৯৪ সাল থেকে তিনি ক্ষমতায় রয়েছেন। ২০২০ সালে যে ভোটের মাধ্যমে তিনি পুননির্বাচিত হন, সেটি এতটাই ত্রুটিপূর্ণ ছিল যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই নির্বাচনের ফলাফলকে স্বীকৃতি দেয়নি।

ইউক্রেনের যুদ্ধে বেলারুশ এখনও সরাসরি জড়িয়ে না পড়লেও, প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো রুশ সৈন্যদের বেলারুশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ইউক্রেনে আক্রমণ চালাতে দিয়েছেন।

কয়েকদিন আগেও লুকাশেঙ্কো বলেছেন, ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার নতুন আক্রমণের জন্য ঘাঁটি হিসেবে নিজ দেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দিতে তিনি প্রস্তুত। তবে তিনি বলেছেন যে এই যুদ্ধে বেলারুশের সৈন্যরা সরাসরি অংশ নেবে না, বাইরে থেকে কোনো হামলা হলে তারা শুধু নিজেদের ভূখণ্ডকে রক্ষা করবে।

এছাড়াও বেলারুশে কয়েক হাজার রুশ সৈন্য রয়েছে এবং সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই দুটো দেশ যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়েছে। রাশিয়ার পাশাপাশি ইউক্রেনের সাথেও বেলারুশের সীমান্ত রয়েছে।