×

সারাদেশ

নোয়াখালীতে হত্যা মামলার আসামি খুন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৬:২০ পিএম

নোয়াখালীতে হত্যা মামলার আসামি খুন

ছবি: ভোরের কাগজ

নোয়াখালীর সদর উপজেলা থেকে পুলিশ এক সিএনজি চালক ও হত্যা মামলার আসামির গলাকাটা বস্তাবন্ধি লাশ উদ্ধার করেছে। পুলিশ তাৎক্ষণিক এ হত্যার কোনো কারণ জানাতে না পারলেও নিহতের স্বজনরা বলছে বিএনপি নেতা হারুন মোল্লা হত্যার ঘটনার জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড করা হয়েছে।

নিহত মো. আব্দুল হাকিম (৩৫) উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের মো. ইব্রাহীম ওরফে রাজা মিয়ার ছেলে। সে পেশায় একজন সিএনজি চালক ছিল।

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার ১৯ নং পূর্ব চরমটুয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের সফিগঞ্জ বাজারের দক্ষিণ পাশে একটি সয়াবিন খেত থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

পূর্ব চরমটুয়া ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) হারুন অর রশীদ জানান, সকাল ৮টার দিকে স্থানীয় কয়েকজন দিনমজুর সয়াবিন খেতে কাজ করতে যায়। ওই সময় তারা সয়াবিন খেতের এক পাশে রক্ত দেখতে পেলে তাদের সন্দেহ হয়। রক্তের সূত্র ধরে তারা একটি মাটি চাপা দেয়া গর্তের সন্ধান পায়। এরপর তারা ওই গর্ত খুঁড়ে মানুষের পা দেখতে পেলে বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে অবহিত করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুপুর ১২টার দিকে ওই সিএনজি চালকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে।

নিহতের শ্বশুর বকুল মাঝি বলেন, গতকাল (রবিবার) রাত ১০টার দিকে আমার মেয়ের জামাই আব্দুল হাকিমের সঙ্গে মুঠোফোনে আমাদের কথা হয়। সে রাতে আমাদের বাড়ি আসার কথা ছিল। এরপর থেকে হঠাৎ তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। সকালে শুনতে পেলাম তাকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, ২০২০ সালে আন্ডারচর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হারুন মোল্লা দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন। ওই মামলায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার চাচাত ভাই মহিন উদ্দিনকে ৯ নম্বর ও আমার মেয়ের জামাই হাকিমকে ১৩ নম্বর আসামি করা হয়। গত কিছু দিন যাবৎ হারুন মোল্লার ভাগিনা অস্ত্রধারী ক্যাডার ইউসূফ, ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী আলম, আমিনুল হক, শাহজাহান, রমিজসহ বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী গোপন মিটিং করেছে। হারুন মোল্লার ভাতিজা আজাদ আমাদের বলেছে, দেশে এরা একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে, আপনারা একটু সজাগ থাকিয়েন, আপনি, আপনার ভাই মহিন ও জামাই হাকিমের ক্ষতি করতে পারে।

রবিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে বাজার থেকে ইউসূফ তার মোটরসাইকেলে আলমকে নিয়ে দ্রুত ওইদিকে চলে যায়, তখনি আমাদের সন্দেহ হয়েছিল এবং তারা হারুন মোল্লা হত্যা মামলার পূর্বের ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে আমার মেয়ের জামাইকে হত্যা করেছে।

আন্ডারচর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি ও বিএনপি নেতা হারুন মোল্লা হত্যা মামলার আসামি মহিন উদ্দিন বলেন, ইউসুফ, আলম, শাহজাহান, আমিনুল হক ও রমিজের নাম আমরা থানার ওসিকে বলেছি এবং তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

এদিকে, অভিযুক্ত ইউসূফ তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, বকুল মাঝি ও তার ভাইয়েরা খারাপ প্রকৃতির মানুষ, আমি এলাকার রানিং মেম্বার। জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাদের অপকর্মে বাধা দেয়ায় তাদের সঙ্গে আমার শত্রুতা বাধে। তবে হাকিম হত্যার বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। পূর্ব শত্রুতার জেরে আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে।

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, হাকিমকে জবাই করে হত্যা করা হয়। এছাড়া তার কানের নিচে কাটা ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। সেখান থেকে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। পরবর্তীতে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ওসি আরো বলেন, নিহত হাকিমের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলাসহ ১০-১২টি মামলা রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App