×

সম্পাদকীয়

চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নে বাধা

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৫:৪৫ এএম

গতকাল ভোরের কাগজের খবরে প্রকাশ, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজের এমবিবিএস ও বিডিএসে ভর্তি ফি বাড়িয়েছে সরকার। বাড়ানো হয়েছে টিউশন ফিও। তবে এ দফায় বাড়েনি ইন্টার্নশিপ ফি। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তিতে গুনতে হবে বাড়তি টাকা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সভাপতিত্বে গত ৯ ফেব্রুয়ারি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি ফি বাড়ানো বিষয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে নতুন করে ভর্তি ফি ১৯ লাখ ৪৪ হাজার টাকা করা হয়েছে- যা আগে ছিল ১৬ লাখ ২০ হাজার টাকা। মাসিক টিউশন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার টাকা- যা আগে ছিল ৭ হাজার ৫০০ টাকা। ইন্টার্নশিপ ফি আগের মতোই এক লাখ ৮০ হাজার টাকা রয়েছে। এমন অবস্থায় মধ্যবিত্ত ও নি¤œ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেধাবী সন্তানদের মেডিকেলে পড়া অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এ নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে। দেশের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা চিকিৎসক হতে খুবই উৎসাহী। তীব্র প্রতিযোগিতায় তারা পরীক্ষায় অবতীর্ণ হন কিন্তু সবার ভাগ্যে জোটে না চিকিৎসাশাস্ত্র পড়া। চাহিদা অনুযায়ী সরকারি মেডিকেল কলেজের আসন সংখ্যা সীমিত থাকায় গড়ে উঠেছে বেসরকারি ৭৭টি মেডিকেল কলেজ। যাতে আসন সংখ্যা ৬ হাজার ৩০০টি। বেসরকারি মেডিকেলে পড়তে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন। মধ্যবিত্ত অনেক পরিবারের পক্ষে সেই অর্থের জোগান দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া এই তথ্য অনুযায়ী, এমবিবিএস ও বিডিএস শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশই বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পড়ছে। মধ্যবিত্ত ও নি¤œ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেধাবী সন্তান সরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ না পেয়ে বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হচ্ছে। এই খরচ জোগাতে অভিভাবকের কষ্ট হলেও সন্তানের ভবিষ্যৎ ভেবে তারা সেই ব্যয় মেটাচ্ছেন। দেশে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল পরিচালনার কোনো আইন তৈরি হয়নি এখনো। একটি নীতিমালা রয়েছে নামকাওয়াস্তে। নিয়ম ভঙ্গ করে নানা রকম হয়রানি করছে শিক্ষার্থীদের। একপ্রকার শিক্ষাবাণিজ্যে হিমশিম খাচ্ছে তারা। বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নীতিমালার অনেক ধারা ভঙ্গ করলেও তাদের বিরুদ্ধে নেয়া হয়নি ব্যবস্থা। প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক- নিয়ম ভঙ্গকারী এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না কেন? বলা বাহুল্য, যারা নিয়ম ভঙ্গ করে প্রতিষ্ঠান গড়েছেন, তারা হয় নিজেরা প্রভাবশালী, না হয় তারা প্রভাবশালীদের ব্যবহার করে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের লাইসেন্স জোগাড় করেছেন এবং তা করে পার পেয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে ভর্তি ফি বাড়ানো কতটুকু যুক্তিযুক্ত? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিক্ষার মানোন্নয়ন নয়, ব্যবসায়িক স্বার্থে বাড়ানো হয়েছে মেডিকেলে ভর্তি ফি। অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই নিয়ম-নীতিহীনভাবে এই ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে মধ্যবিত্ত আর নি¤œবিত্ত পরিবারের সন্তানদের ডাক্তারি পড়ার সুযোগ সঙ্কুচিত হতে পারে। বিষয়টি সরকারকে নতুন করে ভাবতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App