×

সারাদেশ

আখাউড়ায় সর্বত্র চুরির হিড়িক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৬:৩৮ পিএম

আখাউড়ায় সর্বত্র চুরির হিড়িক

ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় চুরির যেন হিড়িক পড়েছ। ফ্রিজের মাছ ও মাংস থেকে শুরু করে দোকানের ১৩ তালা ভেঙে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৪৪ ভরি স্বর্ণালংকার। নিরাপদ নয় পথও। প্রতারণা করে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে টাকা-পয়সা। স্টেশন ও ট্রেনে ছিনতাই হচ্ছে মোবাইল ফোন সেট। চুরির তালিকায় আছে গরু।

চুরির ঘটনা এখন নিত্যদিনের। বাড়ি থেকে দোকানপাট- সর্বত্রই চুরির হিড়িক। রেহাই পাননি সাংবাদিক। আতঙ্ক পুরো উপজেলাজুড়ে। দিনেও ঘরের দরজা খোলা রাখতে ভয়। মুহূর্তের জন্য কেউ ঘর খালি রাখতে চান না।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ও সরজমিনে ঘুরে জানা গেছে, একটি চক্র বেশ সক্রিয় উপজেলার সর্বত্র। বিশেষ করে বাড়ি ভাড়ার কথা বলে তারা হানা দিচ্ছে বাড়ি বাড়ি। এর বাইরেও গ্রিল ও তালা কেটে চুরির ঘটনা ঘটেছে। চক্রের বাইরে স্থানীয় চোররাও বেশ সক্রিয় মাস দু’য়েক ধরে।

বাড়ি ভাড়ার কথা বলে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রওনক জাহানের পৌর এলাকার রাধানগরের বাসায় দিনের বেলায় দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা বেশ আলোচনার জন্ম দেয়। এ ঘটনায় অবশ্য কয়েক ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করে পুলিশ। শনাক্ত করেছে চুরির ঘটনায় জড়িত নারীসহ সংশ্লিষ্টদের।

এছাড়া চুরির ঘটনা ঘটে সাংবাদিক বিশ্বজিৎ পাল বাবুর রাধানগরের বাড়িতে। রাতে এ ঘটনায় গ্রিল কেটে ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, ক্যামেরাসহ প্রায় আড়াই লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনার প্রায় দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও কিছুই উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। অথচ জেলা পুলিশের বড় কর্তা নির্দেশ দিয়েছিলেন ২৪ ঘন্টার মধ্যে সাংবাদিকের ল্যাপটপসহ সব মালামাল উদ্ধার করে দিতে।

এ ঘটনার কয়েকদিন পরই দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে পৌর এলাকার সড়ক বাজারের মনোরমা স্বর্ণ শিল্পালয়ে। ওই দোকান থেকে প্রায় ৪৪ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি হয় বলে থানায় দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। ১৩টি তালা কেটে এ চুরির ঘটনার পর ব্যবসায়ীদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে মোটরসাইকেল চুরি হয় সাংবাদিক এম এ জলিলের। রাধানগর এলাকায় প্রাইভেট পড়তে এসে নতুন একটি বাইসাইকেল খোয়ান শিক্ষার্থী মো. শাকিল। প্রতিনিয়তই চুরি হচ্ছে কৃষকের গরুসহ অন্যান্য জিনিস। সম্প্রতি আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে ভারতীয় নাগরিক স্বপন পালের মোবাইল ফোন সেট চুরি হয়।

চোরের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না ফ্রিজে থাকা মাছ ও মাংস। উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল মুনসুর মিশনের ভাই সোহাগ হাজারীর ঘরে দিনের বেলাতেই ঢুকে ফ্রিজ থেকে মাছ ও মাংস নিয়ে যায় চোর।

একের পর এক ঘটনায়ও পুলিশের তেমন কোনো তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ রয়েছে। পুলিশের এক কর্মকর্তা বরং এসব বিষয়ে ভুক্তভোগীদেরকে দায়ী করে নিজের দায় এড়াতে চান। চুরি হওয়া স্বর্ণের দোকানে রাত দেড়টার দিকে ঢুকে পুলিশের লকার খোলার চেষ্টার বিষয়টিকেও ভালোভাবে দেখছেন না সাধারণ মানুষ।

মনোরমা শিল্পালয়ে মালিক অশিষ বিশ্বাস জানান, তার দোকান থেকে ৪৪ ভরি স্বর্ণ চুরি হয়। দিন-রাত জনসমাগম থাকা এলাকায় তার দোকান হওয়া সত্বেও এ ধরণের চুরিতে তিনি বেশ হতবাক। এ বিষয়ে তিনি থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা জানান, এখনও কোনো মালামাল উদ্ধার না হওয়ার তারা আতঙ্কে আছেন।

সাংবাদিক বিশ্বজিৎ পাল বাবু বলেন, ‘আমার ঘটনার পর সাতজন চোর ধরে এলাকার চুরি পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে এসেছেন বলে পুলিশ দাবি করেছে। তবে চোরাই হওয়া মালামাল উদ্ধারে পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে বলে আমাকে অবহিত করেছেন।’

আখাউড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মো. আসাদুল ইসলাম জানান, চুরি ঘটনা এখন অনেক নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। একটি ঘটনায় চোরাই স্বর্ণও উদ্ধার করা হয়েছে। পরবর্তী ঘটনার মালামাল উদ্ধারেও পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত আছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App