×

সম্পাদকীয়

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর : বিচারের রায় দ্রুত কার্যকর হোক

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০২:১৭ এএম

বহুল আলোচিত পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর পূর্ণ হলেও মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি এখনো হয়নি। মামলাটি বিচারিক আদালত ও হাইকোর্ট হয়ে এখন চূড়ান্ত নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আপিল বিভাগে। বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা অপর মামলার বিচারকাজ চলছে ধীরগতিতে। এত বছরেও নিম্ন আদালত পেরোতে পারেনি মামলাটি। পিলখানা হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ের পরও পেরিয়ে গেছে পাঁচ বছর। কিন্তু মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য এখন পর্যন্ত আপিল বিভাগে শুনানি শুরু হয়নি। বিচার প্রক্রিয়ার এই শ্লথগতি খুবই দুঃখজনক। ২০০৯ সালের ২৪ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরকে (বর্তমানে বিজিবি) রক্তাক্ত করে বাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্য। দুই দিন ধরে চলে বিপথগামী বিডিআর সদস্যদের তাণ্ডব। পরে সরকারের আহ্বানে তারা আত্মসমর্পণ করেন। কেউ কেউ গোপনে পালিয়ে যান। পালিয়ে যাওয়াদের মধ্যেও কেউ কেউ পরে আত্মসমর্পণ করেন। তাদের হাতে নির্মমভাবে প্রাণ হারান ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন। দীর্ঘ ১৩ বছরেও আলোচিত এ ঘটনার বিচার কার্যক্রম শেষ না হওয়া মোটেও কাম্য নয়। তবে বিডিআর বিদ্রোহের ৫৭টি মামলার বিচার বাহিনীর নিজস্ব আদালতে শেষ হয়। সেখানে ৬ হাজার জওয়ানের কারাদণ্ড হয়। বিদ্রোহের বিচারের পর সাধারণ আদালতে শুরু হয় দুটি মামলার বিচার কার্যক্রম। এর মধ্যে বিস্ফোরক মামলার বিচার পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসাসংলগ্ন বিশেষ জজ আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন ও ২৬০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন ঢাকার আদালত। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ২৭৮ জন খালাস পান। তবে তারা একই সঙ্গে বিস্ফোরক মামলার আসামি হওয়ায় কারাগারে রয়েছেন। এরপর ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্ট হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে ডিএডি তৌহিদসহ ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন। ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন, ১৯৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও খালাস দেন ৪৯ আসামিকে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার দায়িত্ব নেয়ার এক মাসের মাথায় ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহ করেন সৈনিকরা। সেদিন বিডিআরের দরবারের আনুষ্ঠানিকতা ছিল এবং বাহিনীটির অফিসারদের প্রায় সবাই ছিলেন সেখানে। এ ধরনের নৃশংস ও জঘন্য অপরাধের বিষয়ে এ দেশের মানুষের পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না। বিদ্রোহীরা একে অপরের সহযোগিতায় নির্বিচারে সেনা অফিসারদের হত্যার গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। তাদের এই গোপন আঁতাত দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি ছিল। দীর্ঘ ৮ বছর পর আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায়ে দেশের জনগণ এবং নিহতদের স্বজনরা স্বস্তি ফেলেছিলেন। কিন্তু ১৪ বছরে এসেও মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া এবং দোষীদের দণ্ড কার্যকর না হওয়া হতাশাজনক। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ মামলার শুনানি ও রায় কার্যকর হওয়া উচিত বলে মনে করি। আমরা চাই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হোক এবং বিচারের রায় দ্রুত কার্যকর করা হোক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App