×

সম্পাদকীয়

অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:২০ এএম

অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে

দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গোয়েন্দা নজরদারি ও তৎপরতার ভেতরেও থেমে নেই অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার। কিশোর গ্যাং, উঠতি মাস্তান, পেশাদার সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ছিনতাইকারীদের হাতে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্রের মজুত রয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে। গত রবিবার অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয় কমিটি। এরপর অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযানে জোর দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দেশে বিভিন্ন সীমান্তপথে আসে অবৈধ অস্ত্র। নানা কৌশলে এর চালান হাতবদল করে চলে একাধিক চক্র। চক্রগুলো অস্ত্রের ভুয়া লাইসেন্সও তৈরি করছে। বিশেষ করে যশোর, খুলনা, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ কেন্দ্রিক ভারতীয় অস্ত্র চোরাচালান চক্রের তৎপরতা বেশি। আর বান্দরবানভিত্তিক গ্রুপগুলোর অস্ত্রের চালান আসে মিয়ানমার থেকে। ইতোমধ্যে র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবির অভিযানে ধরা পড়ছে অস্ত্রের চালান। আমরা মনে করি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার কার্যক্রম চালু থাকলে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়বে। অসৎ উদ্দেশ্যে মজুত রাখা এসব অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেয়ার লক্ষণ। পুলিশ বলছে, সারাদেশে প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার ৩১২টি অস্ত্রের লাইসেন্স আছে। তবে মাত্র ৪৩ হাজার ৩১২টি অস্ত্রের হালনাগাদ তথ্য পুলিশ সদর দপ্তর, পুলিশের বিশেষ শাখা এসবি এবং সিআইডির কাছে রয়েছে। বাকিগুলোর কোনো হালনাগাদ তথ্য নেই। সেগুলো কি লাইসেন্সধারী ব্যক্তির হাতে রয়েছে না অবৈধভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে তা নিয়ে সংশয়ে আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দীর্ঘদিন সেই অস্ত্রগুলোর হালনাগাদ তথ্য না থাকায় হাতবদলের আশঙ্কা রয়েছে। জানা গেছে মাদক ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ, অবৈধভাবে জমি দখলকারী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা এসব অস্ত্রের মূল ক্রেতা। নির্বাচনের সময়ও এসব অস্ত্রের চাহিদা বাড়ে। আগামী নির্বাচন ঘিরে দেশে কোনো নাশকতার সৃষ্টি যাতে কেউ না করতে পারে, সে বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। শুধু বিদেশ থেকে অবৈধ চালানই নয়, মোটা অর্থের বিনিময়ে অনেকে অস্ত্রের জাল লাইসেন্স বানিয়ে ফেলছে। লাইসেন্স যাচাই-বাছাই এবং অবৈধ অস্ত্র ধরার জন্য সতর্ক থাকা জরুরি। আমরা আশা করব সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালিত হবে। যাতে সাধারণ মানুষ বিপদে না পড়ে বা কোনো ভোগান্তি না হয় সে বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। সর্বশেষ গত রবিবার রাতে র‌্যাব-২ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ অস্ত্র কারবারি চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি অস্ত্র, গোলাবারুদ ও ভুয়া লাইসেন্স উদ্ধার করা হয়। এই অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। সীমান্ত পাহারার দায়িত্ব বিজিবির। তবে বিশাল এলাকার অনেক অংশ এখনো অরক্ষিত। এই সুযোগে চলে চোরাচালান। এর মধ্যে ভারতীয় অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের বড় বাজার তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। আর ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশে পাচারের জন্য অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র কারখানাও রয়েছে। এসব কারখানা বন্ধে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সিদ্ধান্তে আসতে হবে। সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদারের কোনো বিকল্প নেই। এসব চক্রের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সীমান্তরক্ষীদের কেউ যুক্ত রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা দরকার। দোষী যেই হোক না কেন তাকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App