×

সারাদেশ

দুই বোনের দায়িত্ব নিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৮:০৫ পিএম

দুই বোনের দায়িত্ব নিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান

ছবি: ভোরের কাগজ

জন্মের তিন বছর পর ২০১০ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন বাবা। বাবার মৃত্যুতে তিন বোন ও এক ভাইকে নিয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নেন মা। সংসারে নেমে আসে অসচ্ছলতা। মায়ের কুটির শিল্প ও বড় বোনের টিউশনের টাকায় কোন মতে জোড়া-তালি দিয়ে চলে অরিন-জেরিনদের সংসার।

নোয়াখালী জেলা পরিষদ কলেজিয়েট স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী যমজ দুই বোন অরিন ও জেরিন ছাত্রী হিসেবে মেধাবী এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনে পারদর্শী। কিন্তু সংসারের অসচ্ছলতায় তাদের পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে।

অরিন-জেরিনের পরিবারের এমন দুর্দশার কথা শুনে আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়েন নোয়াখালী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু। তিনি অরিন-জেরিনকে নিজের মেয়ে হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাদের দুই বোনের পড়ালেখার দায়িত্ব নেন। একই সঙ্গে অরিন-জেরিনের থাকার জন্য জায়গা ও ঘর করে দেওয়ার কথাও জানান তিনি।

গত রবিবার কলেজিয়েট স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় একটি গানের দলীয় নৃত্যে অংশ নেয় অরিন ও জেরিন। তাদের নৃত্য দেখে মুগ্ধ হয়ে তাদের ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাহানা আক্তারের কাছ থেকে খোঁজখবর নেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু।

পরে বৃহস্পতিবার অরিন ও জেরিনকে আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু তার কার্যালয়ে ডেকে তাদের পড়ালেখার সম্পূর্ণ খরচ এবং তাদের থাকার জন্য জায়গা ও ঘর করে দেওয়ার ঘোষণা নেন।

অরিন-জেরিনের বড়বোন জানান, অরিন-জেরিনের মেধা অনেক ভালো। আমরা অনেক কষ্ট করে তাদের পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু পারিবারিক অসচ্ছলতা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে দুই বোন দেখতে-শুনতে সুন্দর হওয়ায় এলাকার কিছু দুষ্টু ছেলেরা তাদের স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে বিরক্তও করে, সেটি বড় ভয়।

তিনি আরো বলেন, এখন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহোদয় তাদেরকে নিজ সন্তান ভেবে তাদের পড়ালেখার দায়িত্ব নিয়েছেন। আমরা এতে অনেকটা চিন্তামুক্ত হয়েছি। আশা করছি উনার (জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান) পিতৃতুল্য ছায়ায় অরিন-জেরিন পড়ালেখা করে মানুষের মতো মানুষ হয়ে ওঠবে।

কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাহানা আক্তার বলেন, অরিন ও জেরিন মেধাবী শিক্ষার্থী। সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও তারের পরিবেশনা অনেক ভালো। কিন্তু পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে তারা পড়ালেখা ও তাদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এগিয়ে নিতে পারছে না। তাদের পড়ালেখা যেন অব্যাহত থাকে, আমরা সেই চেষ্টা করছি।

নোয়াখালী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। বর্তমান সরকারের আমনে শিক্ষাখাতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার কারণে কোন শিক্ষার্থীর লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে এটা হতে দেওয়া যাবে না। অরিন- জেরিন আমার মেয়ের মতো, আমারও দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। আমি চায় অরিন-জেরিন আমার মেয়েদের মতো পড়ালেখা করে মানুষ হোক।

তিনি আরো বলেন, এখন থেকে অরিন-জেরিনের পড়ালেখার সকল খরচ আমি বহন করবো এবং তাদের সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার জন্য আমি একটি জায়গা ও ঘরের ব্যবস্থা করে দিব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App