×

সাহিত্য

প্রভাত ফেরীর ঢল অমর একুশে বই মেলায়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:৫২ পিএম

গত দু’বছর করোনার অভিঘাত যে জনস্রোতকে থমকে দিয়েছিল, সেই জনস্রোত এই ফাগুনে দ্বিগুণ হলো। শোক যেন শক্তিতে রূপ নিয়ে ভালোবাসায় রঙ্গিন হলো কি! সাদা কালো পোশাকের পাশাপাশি যেন লালসবুজেরও উঁকিঝুকি! শাহবাগ মোড় থেকে টিএসসি আর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে দোয়েল চত্বর হয়ে বাংলা একাডেমি সামনের রাস্তায় বাঁধভাঙ্গা জনস্রোতে যেন সাদাকালোর সঙ্গে লালসবুজ একাকার। সেই জনস্রোত আছড়ে পড়েছে সোহরাওয়ার্দী বিস্তীর্ণ উদ্যানে। কেবল মানুষ আর মানুষ। যেখানে অধিকাংশই তরুণদের উজ্জল উপস্থিতি। যেখানে ফুটে উঠেছে একুশের অন্যরকম আবহ। গর্বের বর্ণমালা দেখা গেছে কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীদের পোশাকে এবং মাথায় টায়রা পরা ব্যাজে। কারো কারো মুখাবয়বে-কপালে আঁকা ছিল জাতীয় পতাকা ও শহীদ মিনারের প্রতীক ঠিক তেমনিভাবে বিভিন্ন রঙের বড় বড় অ আ ক খ বর্ণগুলো জানান দিচ্ছিল মাতৃভাষার গৌরবময় ইতিহাসের কথা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেলা পরিণত হয় জনসমুদ্রে। আর সন্ধ্যার দিকে পা ফেলার জায়গা ছিল না মেলার দুই প্রাঙ্গণে।

একদিকে শহীদদের স্মরণে ও শ্রদ্ধায় সারিবদ্ধভাবে খালি পায়ে হেঁটে হেঁটে শহীদের বেদীতে ফুলেল শ্রদ্ধা। অন্যদিকে শিমুল রাঙা বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে ভেসে আসছিলো কোকিলের কুহুতান। ফাগুনের আগুন রাঙা বিকেলে এবং কোকিলের কুহুতানে বইমেলায়ও নেমে এসেছিলো প্রাণের জোয়ার। বইয়ের প্রেমে আবেগি বাঙালি একুশকে খুঁজে নিয়েছে গল্প,কবিতা, উপন্যাস, আর সাইন্স ফিকশনে। এমন দৃশ্যপটই লক্ষ্য করা গেছে গতকাল গ্রন্থমেলার ২১তম দিনে। সকাল ৮টায় মেলার প্রবেশদ্বার খোলার পর থেকেই লোকসমাগম বাড়তে থাকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। বিকেলে টিএসসি ও দোয়েল চত্বর থেকে মেলার প্রবেশদ্বার পর্যন্ত ছিল দীর্ঘ লাইন। ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে নিরাপত্তাবাহিনীকে।

সকালের সূর্যের তেজ যতই বাড়তে থাকে মেলার লোক সমাগমও বাড়তে থাকে। আর বিকেলে সেই ভিড় রূপ নেয় জনসমুদ্রে।

গত দুবছর করোনার কারণে যে মেলা শূন্যতায় ভরেছিল। যেখানে ছিল না বিক্রি, ছিল না সমাগম। এবারের মেলা সেই শূন্যতাকে পূর্ণতা দিয়েছে। এদিন প্রতিটি স্টলের বিক্রয়কর্মীরা বিকিকিনিতে দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছিলেন না। অনেকের হাতে হাতে ছিল নতুন বই। শুধু শীর্ষস্থানীয় প্রকাশকরাই নয় ছোট ও মাঝারি প্রকাশনাগুলোতেও ছিল মানুষের ভিড়। প্রকাশকরাও বিক্রি নিয়ে ছিলেন সন্তুষ্ট।

মেলায় শিক্ষার্থী প্রথমা ও দ্বিতীয়া এসেছেন গণমাধ্যম কর্মী বাবা আশিকুল ইসলামের সঙ্গে। প্রথমা বললেন, সকাল ৯টা থেকেই সারাদিন মেলায় ঘুরেছি। একটুও ক্লান্তি লাগেনি। অনেক মানুষের সমাগমের মধ্যে বই কিনতে গিয়ে বিরক্ত হয়েছি। তবে পছন্দের অনেক বইও কিনেছি।

ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশের স্বত্বাধিকারী আদিত্য অন্তর বলেন, এদিনের প্রত্যাশায় ছিলাম। কিন্তু প্রত্যাশার চাইতেও এবারের বিক্রি ছাড়িয়ে গেছে। আশাকরি বাকি দিনগুলোতেও বিক্রি ভালোই জমবে।

অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ২১ ফেব্রুয়ারির দিনই সবচেয়ে বেশি ভিড় হয় গ্রন্থমেলায়। প্রকাশকরা সবচেয়ে বেশি বই বিক্রি করেন এই দিনে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App