×

সারাদেশ

গঙ্গাচড়ায় দায়সারাভাবে সম্পন্ন মাতৃভাষা দিবসের প্রতিযোগিতা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৪:৪৮ পিএম

গঙ্গাচড়ায় দায়সারাভাবে সম্পন্ন মাতৃভাষা দিবসের প্রতিযোগিতা

ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে উপজেলার স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে বিভিন্ন পর্বের প্রতিযোগিতা চরম অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে দায়সারাভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাঙালি জাতির চরম আরাধ্যেয় এ দিনটিকে ভীষণভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে বলে অভিযোগকারীরা উল্লেখ করেছেন।

অংশগ্রহণকারীদের অভিযোগে জানা গেছে, দিবসটি পালনে উপজেলার স্কুল ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে কবিতা আবৃতি, সুন্দর হাতের লেখা, চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন। প্রতিযোগিতা বাস্তবায়নের জন্য গত ১৪ ফেব্রুয়ারি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক করে ১৩ সদস্যের একটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়। এ উপ-কমিটি প্রতিযোগিতার সূচি প্রকাশ করে ১৫ ফেব্রুয়ারি। সে সূচিতে উল্লেখ করা হয়- ১৯ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) সকাল ১১ টায় গঙ্গাচড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪টি গ্রুপ্রের মোট ১১টি পর্বে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।

অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা আরো জানান, যথাসময়ে তারা কেন্দ্রে উপস্থিত হলেও অনেক পরে আসেন আয়োজকরা। ফলে প্রায় ১ ঘন্টা পরে তাদের প্রতিযোগিতা শুরু হয়। সবগুলো প্রতিযোগিতা একই সময়ে শুরু করায় অনেকেরই প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও একাধিক পর্বে অংশ নিতে পারেনি প্রতিযোগীরা। এমনকি কোন কক্ষে কোন প্রতিযোগিগীতা অনুষ্ঠিত হবে তা প্রতিযোগিতা চলাকালেও পরিবর্তন করা হয় কয়েকবার। ফলে কোমলমতি প্রতিযোগীদের প্রতিযোগিতায় ব্যাঘাত ঘটে। একটি আন্তর্জাতিক দিবসের কর্মসূচিকে দায়সারাভাবে সম্পন্ন করায় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি উপস্থিত অভিভাবকরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

প্রতিযোগিতা শেষে গঙ্গাচড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী শারমিন সুলতানা ক্রন্দনরত অবস্থায় বলেন, আমি চিত্রাঙ্গন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলাম। চিত্রাঙ্কন করাকালীন ৩ বার স্থান পরিবর্তন করা হয়। এতে আমার অঙ্কনটি খারাপ হয়ে যায়।

একই বিদ্যালয়ের একই শ্রেণির অপর প্রতিযোগী নাফিজা সুলতানা বলেন, আমি সুন্দর হাতের লেখা ও আবৃতিতে অংশ নিতে চেয়ছিলাম, কিন্তু একটা শেষ করে দেখি অপরটাও শেষ হয়ে গেছে।

উপস্থিত কয়েকজন অভিভাবক জানান, সকাল সাড়ে ১০ টায় আমরা ভেন্যুতে এসে দেখি আয়োজকদের কেউ নেই। ১১টা ১৬ মিনিটে আয়োজকদের পক্ষে প্রথম আসেন উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার আমজাদ হোসেন। তার পর ক্রমান্বয়ে আরো ২-৪জন এলে ১২টার দিকে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এটা কেবলই দায়সারাভাবে করা হলো।

দেরিতে আসা ও দেরিতে প্রতিযোগিতা শুরু করার বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহানাজ বেগম জানান, তিনি অফিসিয়াল কাজে রাজশাহী যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, তাই দেরি হয়েছে।

উপজেলার একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক প্রধান শিক্ষক বলেন, আমার বিদ্যালয়ের প্রতিযোগী শিক্ষার্থীদের নিয়ে যথাসময়ে ভেন্যুতে উপস্থিত হয়েছি, কিন্তু যথাসময়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়নি।

গঙ্গাচড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনামুল হক জানান, আমার দায়িত্ব ভেন্যু ঠিক রাখা। আমরা যথাসময়ে তা সম্পাদন করেছি। বাস্তবায়ন কমিটির লোকেরা কেন দেরি করেছেন তা আমি জানি না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না বলেন, প্রতিযোগিতার আয়োজকরা দেরিতে উপস্থিত হওয়াটা খুবই দুঃখজনক। এটিসহ উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের এ ধরণের অনেক অবহেলার কথা আমি জেলা সমন্বয় কমিটির সভায় উপস্থাপন করেছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App