×

সাহিত্য

লিটলম্যাগ চত্বরের শূন্যতা পাচ্ছে না পূর্ণতা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:২৫ পিএম

লিটলম্যাগ চত্বরের শূন্যতা পাচ্ছে না পূর্ণতা

ছবি: ভোরের কাগজ

প্রথাকে ভেঙে ফেলার প্রত্যয়ে শুরু হয়েছিল লিটল ম্যাগাজিন বা ছোটকাগজের আন্দোলন। একান্তই ব্যক্তিগত কিংবা ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর স্বতন্ত্র চিন্তাধারা প্রকাশের ইচ্ছা থেকেই লিটল ম্যাগাজিনের জন্ম। সেই প্রথাবিরোধী তরুণরা আশির দশকের সামরিক ও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় থেকে প্রতি মেলায় বাংলা একাডেমির বহেরা তলায় ভিড় করতেন তারুণ্যদীপ্ত প্রতিবাদীরা হাতে-ব্যাগে নিজেদের ছোটকাগজ আর স্ব-উদ্যোগে প্রকাশিত বই নিয়ে। যে প্রাঙ্গণটি বই আর ছোটকাগজের বড় স্বপ্ন আঁকিয়েদের প্রাণকেন্দ্র হয়ে ওঠে ধীরে ধীরে। গত কয়েক বছর বাংলা একাডেমির বহেরা তলা থেকে এ চত্বরকে সরিয়ে নেয়ার পর নানাভাবে স্থানচ্যুতির কারণে চত্বরটির ছন্দপতন ঘটে গেছে। সুরটি যেন আগের মতো আর বাজে না। তাল লয় কেমন যেনো বেসুরো বেসুরো। চত্বরটি জমে উঠছে না। অথচ একসময় লিটলম্যাগের হাত ধরেই লেখক ও সাহিত্যিক সৃষ্টি হতো। যারা এই সময়ে সাহিত্যাঙ্গনে নেতৃত্বও দিচ্ছেন। প্রাতিষ্ঠানিকতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যারা নতুন স্বর সৃস্টি করছেন।

পুঁজিবাদের দাপটে সাহিত্যের প্রগতিশীল এই চর্চার সারথীরা মেলার একপ্রান্তে নিভু নিভু! এবারের মেলার শুরু থেকেই দেখা গেছে চত্বরটি শূন্য শূন্য। অবহেলায় খানিকটা অগোছালোও। অনেকে ভেবেছিল, খানিকটা সময় নিয়ে মুখর হয়ে উঠবে। কিন্তু মেলার অর্ধেক সময় চলে গেলেও শূন্যতা পূর্ণতা পায়নি। অধিকাংশ স্টল এখনও ফাঁকা। লিটলম্যাগের ব্যানার ঝুলে থাকলেও, লিটলম্যাগ নিয়ে বসেনি কেউ।

গত কয়ের বছর ধরে নানা প্রতিকুলতার মুখে পরতে হয়েছে লিটলম্যাগ চত্বরকে। নানাভাবে বিমাতাসুলভ আচরণ করা হয়েছে। ধাক্কাধাক্কি আর ঠেলাঠেলিতে চিড়েচ্যাপ্টা অবস্থা তারণ্যের উদ্ভাসন ঘটানো এ চত্বরটি। ক্লান্ত, অবসন্ন, বিষণ্ণ প্রকাশকরা অবশেষে হাল ছেড়ে দিয়েছেন। যার ফলশ্রুতিতে আজকের এই হতশ্রী অবস্থা।

শনিবার মেলাপ্রাঙ্গন ঘুরে এমনই হতশ্রী পরিস্থিতি দেখা গেছে।

জানতে চাইলে লিটলম্যাগ পান্থজনের সখা’র সম্পাদক ও কবি বিমল গুহ ভোরের কাগজকে বলেন, বইয়ের মেলায় এতো মানুষের সমাগম দেখে আশা জাগে। মেলার সবই ভালো লাগলেও লিটল ম্যাগ চত্বরের দৈন্যদশা দেখে হতাশ লাগছে। মেলার শেষ প্রান্তে কেন এর জায়গা হলো? অনেকটা ভাঙা হাটের মতোই মনে হচ্ছে। সুনসান নীরবতা। কোনো প্রাণ নেই। তারচে বহেরা তলার সেই ঘিঞ্জিই তো ভালো ছিল। লিটলম্যাগ চত্বরের প্রতি এতো উদাসীনতা কেন?

কথা হয় নন্দন প্রকাশনীর প্রকাশক ও লেখক রেজা ঘটকের সঙ্গে। তিনি বলেন, এবারের মেলায় পরিসর বেড়েছে, স্টলগুলোকে পরিকল্পনা অনুযায়ী বিন্যস্তও করা হয়েছে। মেলায় মানুষজনও আসছে। কিন্তু লিটল ম্যাগাজিন চত্বরকে এবার অনেকটাই ভেঙে ফেলেছে কর্তৃপক্ষ।

ক্ষুদে প্রকাশক শফিক হাসান বলেন, এখনও লিটলম্যাগ চত্বরে মেলা ততটা জমেনি। গতানুগতিক ধারায় চার-পাঁচ দিন পরেই এখানে মেলা জমে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যারা আসেন মূলত তারাই মেলার এই অংশের প্রাণ।

বাংলা একাডেমির তথ্য মতে, এ বছর ৯২টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App