×

জাতীয়

স্থগিতাদেশে ১৪ বছর আটকা মামলার বিচার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১:২৮ এএম

স্থগিতাদেশে ১৪ বছর আটকা মামলার বিচার

মান্না। ছবি: সংগৃহীত

স্থগিতাদেশে ১৪ বছর আটকা মামলার বিচার

২ মাসের মধ্যে ভালো ফলাফলের আশা: বাদীপক্ষ স্থগিতাদেশ উঠলে দ্রুত বিচার শেষ হবে: রাষ্ট্রপক্ষ

১৫ বছর আগে ২০০৮ সালের আজকের এই দিনে মারা যান বাংলা চলচ্চিত্রের 'অ্যাকশন হিরো' খ্যাতো চিত্রনায়ক এস এম আসলাম তালুকদার মান্না। বুকে ব্যথা নিয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালের ভর্তি হন তিনি। তবে কিছু চিকিৎসকদের অবহেলায় সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুবরণ করেন এই সুপারহিট নায়ক।

এ অভিযোগে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর মান্নার স্ত্রী শেলী কাদেরের ভাই রেজা কাদের ঢাকার মেট্রোপলিন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।

পরে বিচার বিভাগীয় তদন্তে চিকিৎসার অবহেলার অভিযোগ প্রমাণিত হয়। হাসপাতালটির ৬ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচারও শুরু হয়। এরপর ২০০৯ সালে উচ্চ আদালত থেকে মামলাটির ওপর স্থগিতাদেশ দেয়া হয়। এতে ২০০৯ সাল থেকে দীর্ঘ ১৪ বছর মামলার বিচার আটকে আছে। এতে মান্নার স্ত্রী-সন্তানসহ হতাশ হতে হচ্ছে মান্না ভক্তদেরও।

চিকিৎসকদের অবহেলায় মান্নার মৃত্যুর মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এ বিচারাধীন। তবে উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ থাকায় সাক্ষ্য গ্রহণ সম্ভব হচ্ছে না।

এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর জাহাঙ্গীর হোসেন (দুলাল) ভোরের কাগজকে বলেন, সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিনই মামলা স্থগিত করে হাইকোর্ট। ১৪ বছর হয়ে গেছে স্থগিত রয়েছে মামলাটি। এজন্য দীর্ঘদিন ধরে মামলাটির বিচার হচ্ছে না। স্থগিতাদেশ তুলে নিলে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।

তিনি আরো বলেন, এটি একটি আলোচিত মামলা। মান্না মানে একটা ইন্ডাস্ট্রি। তার মৃত্যুর পর খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই চার্জগঠন সম্পন্ন হয়। কিন্তু ১৪ বছর ধরে মামলা স্থগিত, যা কাম্য নয়। আমরা প্রস্তুত আছি। স্থতিগাদেশ তুলে দিলে দ্রুত সময়ে সাক্ষী হাজির করে মামলাটির বিচার শেষ করা যাবে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিষ্টার খন্দকার মুশফিকুল হুদা বলেন, মামলাটির ৬ বার শুনানি করেছি। স্থগিতাদেশ এখনো রয়েছে। অদৃশ্য কোন কারণে তা বাতিল হচ্ছে না। তবে আমরা নতুন আইনি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছি। আশা করছি আগামী দুই মাসের মধ্যে ভালো ফলাফল পাব।

এদিকে মান্নার স্ত্রী শেলী কাদেরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

নায়ক মান্না ভক্ত ইমরান হুসাইন বলেন, সুপারহিট নায়ক ছিলেন মান্না। তার মৃত্যু মেনে নিতে পারিনি। তাকে চিকিৎসা না করে হত্যা করা হয়েছে। আসামিদের দ্রুত বিচার চাই।

২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি চিত্রনায়ক মান্না বুকে ব্যথা অনুভব করায় ভোর রাত ৪টায় ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু চিকিৎসকরা হাসপাতালে আসেন সকাল ৯টায়। চিকিৎসা দেরিতে শুরু হওয়ায় অ্যাকিউট মায়োকারডিয়াল ইনফ্রাকশনে আক্রন্ত হন মান্নাম চিকিৎসা শাস্ত্র অনুয়ায়ী আক্রান্ত হওয়ার ৯০ মিনিটের মধ্যে রোগীকে নির্দিষ্ট ইনজেকশন দিতে হয়।

কিন্তু মান্নাকে এই ইনজেকশন দেয়া হয় আক্রান্ত হওয়ার ৫ ঘণ্টা পর। তাই হাসপাতালটির হৃদরোগ বিভাগের ৬ চিকিৎসকের অবহেলার জন্য মান্নার মৃত্যু হয় বলে মামলা করা হয়।

মামলার দুই মাস পর ১৩ নভেম্বর তৎকালীন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমান সিদ্দিক বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে ৬ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

আসামিরা হলেন-ডা. মো. এনায়েত হোসেন শেখ, ডা. জহির উদ্দিন মাহমুদ ইলিয়াস, ডা. মোমেনুজ্জামান, ডা. ফাতেমা, ডা. মাইনুল ইসলাম মজুমদার ও ডা. খন্দকার মাহবুব হোসাইন।

এরপর ২০০৯ সালের ১৮ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন তৎকালীন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক ফিরোজ আলম। এরপর ১, ২ ও ৩ নভেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন আদালত। সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ধার্য থাকা দিনেই সংশ্লিষ্ট বিচারক বদলী হয়ে যান। থেমে যায় সাক্ষ্য গ্রহণ।

এরপর আসামিরা মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। এরপর থেকে মামলাটির বিচারকাজ আর এগোয়নি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App