জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের বলেছেন, বৈষম্যের কারণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ম্লান হয়ে যাচ্ছে। বৈষম্যের কারণে ধনী ও দরিদ্রের ব্যবধান বেড়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারি দল না করলে চাকরি মেলে না, ব্যবসা করা যায় না। আমরা আইনের শাসন চাই। আমরা ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা চাই। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দুর্নীতি ও দুঃশাসনে দেশের মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। দেশের মানুষের সম্মান, সম্পদ ও জীবনের নিরাপত্তা নেই। বৈষম্যের কারণে একটি অসম রাষ্ট্র তৈরি হচ্ছে। এমন একটি দেশের জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়নি। মানুষে মানুষে বৈষম্য স্বাধীনতার চেতনা পরিপন্থি।

বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

এমপিওভুক্ত শিক্ষা পদ্ধতি, শিক্ষক বদলি ও নিয়োগে রাজনৈতিক বিবেচনা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, দেশের শিক্ষা ও চিকিৎসার মান ক্রমন্বয়ে কমে যাচ্ছে। এখন স্কুলগুলোতে বড় বড় ভবন হচ্ছে, আধুনিক ল্যাব হচ্ছে, কিন্তু মানসম্মত শিক্ষা নেই। যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না। জিপিএ বাড়ছে, সার্টিফিকেট বাড়ছে। কিন্তু সঠিক শিক্ষা ব্যবস্থার অভাবে শিক্ষার মান বাড়ছে না। কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার পদক্ষেপ নেই। ফলে, শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়েই চলছে। আবার বেসরকারী পর্যায়ে উন্নত মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি হচ্ছে, যেগুলো অত্যন্ত ব্যয়বহুল। সাধারণ মানুষের পক্ষে এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্তানদের পড়াশোনা চালানো সম্ভব নয়। তাই, বেশিরভাগ মানুষের পক্ষে সন্তানের জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

একইভাবে বড় বড় ভবনের সঙ্গে হাসপাতালে বেডের সংখ্যা বাড়ছে, কিন্তু চিকিৎসা সেবার মান বাড়ছে না। অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি স্থাপন হচ্ছে, আধুনিক যন্ত্রপাতি দেয়া হচ্ছে, কিন্তু চিকিৎসকের অভাবে ও ব্যবস্থাপনার অভাবে সাধারণ মানুষ উপকৃত হচ্ছে না। বেসরকারি পর্যায়ে আধুনিক সুবিধাদিসহ হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। সেখানে চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল, যা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। তাই, দেশের বেশির ভাগ মানুষ মানসম্মত শিক্ষা ও চিকিৎসা পাচ্ছে না। বৈষম্যের কারণে, দেশে শোষক ও শোষিত শ্রেণির সৃষ্টি হয়েছে।

জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সভাপতি শেরিফা কাদেরের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আলাউদ্দিন আহমেদের পরিচালনায় সভায় জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বক্তব্য রাখেন।