×

আন্তর্জাতিক

তুরস্কে হাহাকার, ‘বেঁচে ফিরলেও খাবো কি’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৫:১৯ পিএম

ঠাণ্ডায় জবুথবু, অসহায় দৃষ্টি, ক্ষুধায় কাতর শিশু- এই দৃশ্য এখন তুরস্ক-সিরিয়ার ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকাগুলোর সর্বত্র বিরাজ করছে। একদিকে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা, অন্যদিকে বাড়ছে প্রাণে বেঁচে যাওয়া মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজ। সব হারানো এই মানুষের এখন ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে– কী করবে, কোথায় যাবে, কোথায় থাকবে, কী খাবে?

ভূমিকম্পের পর ১০ দিন পার হয়েছে। উদ্ধারকাজও শেষের দিকে। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা উদ্ধারকারী দলগুলো ফিরতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে মৃতের সংখ্যা ৪১ হাজার ছাড়িয়েছে। এ সংখ্যা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। আহত ও সব হারানো মানুষের কোনো হিসাব নেই বললেই চলে। এই অসহায় এবং সব হারানো মানুষ নিয়ে চিন্তায় আছেন সরকারপ্রধানরাও। খবর বিবিসি, আলজাজিরার।

কারহামানমারাসের বাসিন্দা সেরকান টোটাগলু চার সন্তান আর স্ত্রীসহ প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন। সব হারানো এই পরিবারটির ঠিকানা এখন জরুরি আশ্রয় কেন্দ্র। চোখের সামনে নিজেদের বাড়িটা ধসে যেতে দেখেছেন তারা। এটা দেখে তার ছয় বছরের মেয়েটা অনবরত প্রশ্ন করে যাচ্ছে- বাবা, এরপর কি আমরা মরে যাব। অসহায় সেরকান পরিবারের লোকজনকে আশ্বস্ত করার জন্য শুধু বলে যাচ্ছেন- ‘সব ঠিক হয়ে যাবে।’ কিন্তু আদৌ কি সব ঠিক হয়ে যাবে, সব আগের অবস্থায় ফিরে আসবে- যদি আসে তাহলে কবে, কীভাবে? এর পরই তারা মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে- ‘ভূমিকম্পে বেঁচে ফিরলেও খাবো কী?’

সেরকানের মতোই এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছে অসংখ্য মানুষ। তেমনই একজন হলেন ৫২ বছর বয়সের সেলমার। পরিবারের সদস্যদের আগলে রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি। ভূমিকম্প ছাড়া আর যে কোনো বিষয়ে কথা বলতে রাজি তিনি। বিভীষিকাময় সেই ভোরের কথা কিছুতেই মনে করতে চান না। তবুও পিছু ছাড়ছে না প্রশ্ন। পাঁচ বছরের নাতি অনবরত প্রশ্ন করছে- ফের কি ভূমিকম্প হবে?

তুরস্কে স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসকদের দলে আছেন মনোবিদ সুয়েডা দেভেজি। তিনি বলেন, শিশুমনে এ বিপর্যয়ের কালো ছাপ পড়েছে। এর প্রভাব থেকে সহজে বের হতে পারবে না তারা। এর জন্য দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা জরুরি। শুধু শিশু নয়, এ বিপর্যয় বড়দের মনেও ফেলেছে গভীর ছাপ। স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবে তাদেরও। ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেয়া এক মা ভূমিকম্পের তাণ্ডবে একেবারে চুপ হয়ে গেছেন। সন্তানদের যত্ন নেয়া তো দূরের কথা, নিজের খাওয়া-ঘুমও ভুলে গেছেন তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App