×

সারাদেশ

শান্তিগঞ্জে ফসল রক্ষা বাঁধ কেটে ব্রীজ নির্মাণ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:০২ পিএম

শান্তিগঞ্জে ফসল রক্ষা বাঁধ কেটে ব্রীজ নির্মাণ

ছবি: ভোরের কাগজ

শান্তিগঞ্জে ফসল রক্ষা বাঁধ কেটে ব্রীজ নির্মাণ

হুমকির মুখে খাই হাওরের বোরো ফসল

সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাই হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ কেটে লাউয়া নদীতে (বেতখালী) ব্রীজ নির্মাণ করায় হুমকির মুখে পড়েছে বোরো ফসলি জমি ও ফসল রক্ষা বাঁধ। এতে খাই হাওরের কৃষকদের মাঝে অসন্তোষ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সরকার বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শান্তিগঞ্জ বাজার থেকে রজনীগঞ্জ বাজার ও বসিয়াখাউরী পর্যন্ত রাস্তাটির আরসিসি কাজ চলমান রয়েছে। বর্তমানে শান্তিগঞ্জ বাজার-রজনীগঞ্জ রাস্তার নির্মাণ প্রকল্পের অধীনে খাই হাওরস্থ বেতখালী নামক এলাকার লাউয়া নদীর উপর স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে বিশ্ব ব্যাংক ও জিওবি এর অর্থায়নে প্রায় ১০ কোটি ৩৭ লক্ষ ৩৯ হাজার ৫৮৩ টাকায় নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়।

চলতি বছরের প্রথম দিকে লাউয়া নদীর উপরে ব্রীজ নির্মাণ কাজের পাইলিং কাজ শুরু করা হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিনে ফসল রক্ষা বাঁধের প্রায় ৫০ মিটার বাঁধ কেটে ফেলা হয়। এতে বিপাকে পড়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মাণাধীন খাই হাওরের প্রায় ২৯ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ। চলতি বছর ২৮ ফেব্রুয়ারিতে বাঁধের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মাণাধীন ফসল রক্ষা বাঁধের লাউয়া নদীর অংশের প্রায় ৫০ মিটার বাঁধ অরক্ষিত রয়েছে।

ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন না করা হলে শেষ মুহূর্তে এসে ৫০ মিটার মিটার কাজ তড়িঘড়ি করে শেষ করলে বাঁধ ও খাই হাওরের বোরো ফসল হুমকির মুখে পড়বে বলে মনে করছেন স্থানীয় কৃষকেরা। খাই হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের ৫৩নং পিআইসির অধিনে ৩শ ৩০ মিটার ফলস রক্ষা বাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে দুই পাশে অধিকাংশ বাঁধের কাজ শেষ করা হলেও মধ্যখানে ব্রীজের পাইলিং এর নির্মাণ কাজ করায় ৫০ মিটার কাজ পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।

খাই হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের ৫৩নং পিআইসির সভাপতি মো. আফিকুল ইসলাম বলেন, আমার পিআইসির অধীনে লাউয়া নদীর পাড়ে বেতখালী বাঁধটি পড়েছে। বাঁধের বড় একটি অংশ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন কেটে ফেলেছে। ফসল রক্ষা বাঁধের মূল বাঁধ কাটায় এটি হুমকির মুখে পড়েছে। বাঁধ নির্মাণের সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাঁধের কাজ শেষ না করতে পারলে পরবর্তীতে রাতারাতি বাঁধ নির্মাণ করলে সেটা টেকসই হবে না। ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।

শান্তিগঞ্জ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারি প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম বলেন, খাই হাওরে প্রায় ২৯ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ রয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের লোকজন বাঁধটি কাটার সময় আমাদেরকে অবগত করেননি। চলতি বছর বাঁধ নির্মাণের জন্য পিআইসি কমিটিকে কাজ দেয়া হয়েছে। কিন্তু বাঁধের অধিকাংশ কাজ শেষ হলেও ৫০ মিটার কাজ ব্রীজ নির্মাণের ফলে মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না, ঝুঁকির মধ্যে পড়ে আছে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধের ঐ অংশের কাজ শেষ করা না হলে বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ থেকে যাবে।

শান্তিগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী আল নুর তারেক বলেন, বাঁধটি কাজের প্রয়োজনে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন কেটে ফেলেছে। তবে নির্মাণের নির্ধারিত সময় ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাঁধটি মেরামত করে কাজ সম্পন্ন করা হবে।

শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনোয়ার উজ জামান বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফসল রক্ষা বাঁধ ও স্থানীয় সরকার বিভাগের ব্রীজ নির্মাণ কাজ একই স্থানে হওয়ায় বাঁধ কেটে ফেলা হয়েছে। ফসল রক্ষা বাঁধটি দ্রুত মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সমাধান করা যাচ্ছে না। তবে বাঁধের কাজ শেষ মুর্হুতে করলে টেকসই হবে না এবং ঝুঁকির মধ্যে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App