বিচারপতিদের নামে ভুয়া জামিনাদেশ তৈরি, গ্রেপ্তার ৩
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৮:৪৭ পিএম
ছবি: ভোরের কাগজ
বিচারপতিদের নামে ভুয়া জামিনাদেশ তৈরি করে প্রতারণা করায় মাগুরা থেকে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সিরিয়াস ক্রাইম ইউনিট। গ্রেপ্তারকৃতকরা হলেন- হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক জমাদার মো. দাউদ এলাহী, সাবেক কারারক্ষী শেখ আব্দুল মাজেদ ও আশরাফুজ্জামান ওরফে রনি।
সিআইডির দাবি, গ্রেপ্তারকৃতরা হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের নামে ভুয়া জামিনাদেশ সৃজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার বিশেষ করে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের অর্থের বিনিময়ে জামিন পাইয়ে দেয়ার নামে অপকর্ম করে আসছিলেন।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সিআইডির গণমাধ্যম শাখার অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার আজাদ রহমান জানান, গত ২০১১ সালে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী মাগুরা জজকোর্ট পরিদর্শনে যান। সে সময় বর্তমান প্রধান এ বিচারপতি কিছু মামলার নথি পরীক্ষা করে দেখতে পান যে, ১১টি মামলায় সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতিদের জামিন আদেশ, প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে সৃজন করা হয়েছে। তিনি বিষয়টি হাইকোর্টের তৎকালীন ডেপুটি রেজিষ্ট্রার মো. মাহফুজুল করিম আকন্দকে অনুসন্ধান করার জন্য নির্দেশ দেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্তপূর্বক মো. রফিক ও মো. দাউদ এলাহীকে অভিযুক্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। যার প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বিভাগের তৎকালীন কোর্ট কিপার মো. আব্দুল ওয়ারেছ গত ২০১৫ সালের ৫ মে বাদী হয়ে শাহবাগ থানার মামলা করেন। মামলাটি দীর্ঘ ৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে থানা পুলিশ ও দুদক তদন্ত করে। পরবর্তীতে পুলিশ সদরদপ্তরের নির্দেশে মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তরিত হয়।
তিনি আরো বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজি, মোহাম্মদ আলী মিয়ার সার্বিক নির্দেশনায় সিরিয়াস ক্রাইমের একটি টীম তদন্ত শুরু করে। এক পর্যায়ে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় এজাহারনামীয় আসামি মো. দাউদ এলাহী ছাড়াও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত শেখ আব্দুল মাজেদ ও আশরাফুজ্জামান ওরফে রনিকে সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৩টার দিকে মাগুরা থেকে গ্রেপ্তার করে। দাউদ এলাহীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তিনি ঘটনার সময়ে হাইকোর্ট বিভাগের জমাদার হিসেবে কর্মরত থাকাকালে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক ও জালিয়াত চক্র গড়ে তোলেন। এই চক্র হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের নামে ভুয়া জামিন আদেশ সৃজন করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার বিশেষ করে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের অর্থের বিনিময়ে জামিন পাইয়ে দেয়ার কাজ করতো।
জিজ্ঞাসাবাদে আজাদ রহমান জানান, গ্রেপ্তার সাবেক কারারক্ষী শেখ আব্দুল মাজেদ ও রনি এজাহারনামীয় পলাতক আসামীসহ অন্যদের সহযোগিতায় দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ ও সাজাপ্রাপ্ত মামলার আসামিদের জামিন আদেশ সৃজন করে প্রতারণা করে আসছে। এ জালিয়াত চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরো ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।