×

জাতীয়

মানসিক নির্যাতনের শিকার ৬৭ ভাগ গৃহকর্মী, ছুটি পায় না ৮৭ ভাগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৭:৫৪ পিএম

মানসিক নির্যাতনের শিকার ৬৭ ভাগ গৃহকর্মী, ছুটি পায় না ৮৭ ভাগ

ছবি: ভোরের কাগজ

কর্মক্ষেত্রে ৬৭ ভাগ গৃহকর্মী মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। জেন্ডার সহিংসতার শিকার ৯১ ভাগ নারী সাহায্য চাওয়ার উপায় বা হেল্পলাইন নম্বর সম্পর্কে সচেতন নয়। কোভিড-১৯ সংকটের সঙ্গে লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার ঘটনাগুলিও বৃদ্ধি পেয়েছে।

‘শোভন কাজ ও কর্মক্ষেত্রে জেন্ডার সহিংসতা: বাংলাদেশের নারী গৃহশ্রমিকদের উপর পরিচালিত গবেষণা’ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা ও অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশের সহযোগিতায় পরিচালিত সুনীতি (সিকিউরিং রাইটস অফ উইমেন ডমেস্টিক ওয়ার্কাস ইন বাংলাদেশ) প্রকল্পের আওতায় গবেষণাটি পরিচালিত হয়। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিল্স)-সুনীতি প্রকল্পের পক্ষে গবেষণাটি পরিচালনা করে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ডিনেট।

গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, দারিদ্র্য, পেশার সহজলভ্যতা এবং বিবাহ বিচ্ছেদের কারণে গৃহকর্মীর কাজ বেছে নেন নারীরা। সেই পেশায় এসে ৪২ ভাগ গৃহকর্মী বসার ঘর বা রান্নাঘরে ঘুমায়। ৭৫ ভাগ গৃহকর্মী বস্তিতে বাস করে। গৃহকর্মীদের গড় মাসিক আয় ৫ হাজার ৩১১ টাকা, মাসিক গড় ব্যয় ১০ হাজার ৮০১ টাকা। ৯৬ ভাগ গৃহকর্মীদের অভিযোগ, বর্তমান মজুরি মৌলিক চাহিদা পূরণের করতে পারে না। কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিতি বা বিলম্বের কারণে ২৬ ভাগের মজুরি কাটা হয়। আবাসিক গৃহকর্মীরা দৈনিক ১০ থেকে ১৪ ঘন্টা কাজ করেন। মাত্র ৪ ভাগ গৃহকর্মী পেশাগত সংগঠনের সাথে জড়িত।

গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি-২০১৫ সম্পর্কে নিযোগকর্তা ও গৃহকর্মী কেউ তেমন আবগত নয়। এই নীতি নিয়ে ৯৯ ভাগ গৃহকর্মী এবং ৬৬ নিয়োগকর্তাদের কোন জ্ঞান নেই। মৌখিক চুক্তির মাধ্যমে কাজ শুরু করে নারীরা। ৯৯ ভাগ পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ পায় না। তবে ৮৫ ভাগ নিয়োগকর্তার অভিমত, গৃহকর্মীদের জীবন দক্ষতা বাড়ানো ও প্রশিক্ষণের অধিকার এবং গৃহকর্মীদের স্বীকৃতি দিতে তারা অবদান রাখে।

উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও অ্যাডভোকেসির মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রে গৃহশ্রমিকের শোভন কাজ নিশ্চিত করা সম্ভব বলে মনে করেন গবেষকরা। তাদের দাবি, গৃহশ্রমিকের মর্যাদার বিষয়টি পাঠ্যপুস্তকে যুক্ত করা হলে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাবে। তবে গৃহশ্রমিককে সুরক্ষার আওতায় আনতে তাদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া এবং শোভন কাজ সংক্রান্ত আইএলও কনভেনশন-১৮৯ অনুস্বাক্ষর জরুরি।

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে রবিবার গবেষণা প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন বিল্স। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব ও বিশ্বব্যাংক এর পরামর্শক এবিএম খোরশেদ আলম, শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক বেল্লাল হোসেন শেখ, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশ এর উপপরিচালক সুস্মিতা পাইক, আইএলও ওয়ার্ক ইন ফ্রিডম প্রোগ্রামের ন্যাশনাল প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর এনি দ্রং, অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ এর সুনীতি প্রকল্পের সমন্বয়কারী তারেক আজিজ, ডিনেট এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক এম. শাহাদাৎ হোসেন, বিল্স এর যুগ্ম মহাসচিব ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী আবুল হোসাইন প্রমুখ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App