×

জাতীয়

বাংলাদেশের বড় বড় শান্তিপূর্ণ সমাবেশের প্রশংসা যুক্তরাষ্ট্রের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১:৫৯ এএম

বাংলাদেশের বড় বড় শান্তিপূর্ণ সমাবেশের প্রশংসা যুক্তরাষ্ট্রের

ডেরেক শোলে। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সিলর, আন্ডার সেক্রেটারি ডেরেক শোলে বলেছেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার, শ্রম অধিকার, নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। চলতি বছর বাংলাদেশের নির্বাচনী বছর। আসন্ন নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশা ব্যক্ত করতে গিয়ে ডেরেক শোলে জানান, দেশটির আশা বাংলাদেশের যে কোনো নির্বাচনই অবাধ এবং সুষ্ঠু হবে। বিরোধী দলগুলো নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে সংগঠিত হতে পারবে।

তিনি বলেন, আমি জানি, গত বছর বাংলাদেশে অনেক বড় বড় গণসমাবেশ হয়েছে যেগুলো শান্তিপূর্ণ ছিল। বিরোধী দলের মুক্ত এবং নিরাপদভাবে মতপ্রকাশ করতে পারাটা ভালো দিক। আমরা এগুলোর কথাই বলছি। সাংবাদিকদের দ্বারা দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতা গুরুত্বপূর্ণ। সুস্থ গণতন্ত্রের জন্য এসব কিছুই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অংশীদারিত্ব এবং বন্ধুত্বের চেতনার জায়গা থেকেই এই ইস্যুগুলো তুলে ধরছি। এসব কারণেই ‘গণতন্ত্র সম্মেলন’ এর মতো আয়োজনগুলো গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, গণতন্ত্র একের কাছ থেকে অন্যের শেখার বিষয়। এমতাবস্থায় সুদূর যুক্তরাষ্ট্র থেকে চ্যানেল আইতে প্রচারিত জনপ্রিয় টকশো ‘তৃতীয় মাত্রা’য় অনলাইনে হাজির হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ২৪ ঘণ্টার সফরে ঢাকা আসছেন ডেরেক শোলে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিশেষ কূটনৈতিক এসাইনমেন্টগুলো পালন করে থাকেন ওই দপ্তরের অত্যন্ত প্রভাবশালী এই শীর্ষ কর্মকর্তা। সম্প্রতি গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শ্রমবিষয়ক মার্কিন ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি কারা ম্যাকডোনাল্ডের ঢাকা সফর করার কথা ছিল। একেবারে শেষ মুহূর্তে তার না আসার খবরে খুব স্বাভাবিকভাবেই ডেরেক শোলের বাংলাদেশ সফরের তাৎপর্য আরো বেড়ে গেছে বলেই সচেতন মহলের উপলব্ধি। বাংলাদেশে এসে তিনি কী কী বলবেন, কার কার সঙ্গে বৈঠক করবেন এসব নিয়ে কূটনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

ইদানীং বাংলাদেশে যে (যুক্তরাষ্ট্রের) অনেক উচ্চ পর্যায়ের কূটনীতিকের সফর লক্ষ্য করা যাচ্ছে, শুরুতেই অনুষ্ঠানের সঞ্চালক জিল্লুর রহমান সে প্রসঙ্গটি তুলে ধরেন। নিজের সফরকে দুই দেশের তরফে আগের সফরগুলোর ‘ফলোআপ’ সফর উল্লেখ করে ডেরেক শোলে বলেন, দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক, এই অঞ্চল এবং সারা বিশ্বে দুই দেশের অংশীদারিত্বকে যুক্তরাষ্ট্র যে কতটা গুরুত্ব দেয়, এই সফরগুলো তারই প্রমাণ। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং নিরাপত্তা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। আমার সফরে এই সবগুলো ইস্যু নিয়েই ফলো আপ করব। এছাড়া দুই দেশের অভিন্ন সমস্যা এবং সেসবের অভিন্ন সমাধান নিয়েও আলোচনা থাকবে।

মিয়ানমারের সংঘাত এবং রোহিঙ্গা গণহত্যা কি যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা অগ্রাধিকারে থাকবে এমন প্রশ্নের জবাবে ডেরেক শোলে বলেন, হ্যাঁ, এটা অগ্রাধিকার ছিল এবং অব্যাহতভাবে থাকবে। বাংলাদেশে নিজ সফরের অন্যতম কারণ রোহিঙ্গা ইস্যু এবং মিয়ানমারের পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে- এমন মন্তব্য করে সেজন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ডেরেক শোলে জানান, বাংলাদেশকে সহযোগিতার জন্য যা যা করা সম্ভব যুক্তরাষ্ট্র তাই করছে।

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের ৫১ বছরের যাত্রার ভূয়সী প্রশংসা করে ডেরেক শোলে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এই যাত্রায় বাংলাদেশের সঙ্গে ছিল। সামনের দিনগুলোতে আমরা এই সম্পর্ক আরো বড় পরিসরে দেখতে চাই। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির একেবারে কেন্দ্রে রয়েছে গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার। যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রও নিখুঁত নয়। কিন্তু আমরা সেটা আরো ভালো করার চেষ্টায় লিপ্ত এবং আমরা নিজেদের ভুলগুলোকে স্বীকার করি। তাই আমরা যখন বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, সুশীল সমাজের সংগঠিত হওয়া এবং মুক্তভাবে কথা বলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করি তখন সেটা ন¤্র হয়ে, আমাদের অংশীদারিত্ব এবং বন্ধুত্বের চেতনা থেকেই করি। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে আরো উন্নত এবং শক্তিশালী করতে আমরা দেশটির সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চাই। কারণ, একবিংশ শতাব্দীতে কোনো দেশকে সফল হতে হলে তাকে গণতান্ত্রিক হতে হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App