×

খেলা

হারে বিপিএল শেষ ঢাকার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:০০ পিএম

হারে বিপিএল শেষ ঢাকার

ঢাকা ডমিনেটর্সের বিপক্ষে মাঠে নেমে দুই উইকেট তুলে নেয়ার পর চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর উল্লাস

প্লে-অফের দৌড় থেকে দুই দলই ছিটকে পড়েছে আগেই, মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা ডমিনেটর্স ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ম্যাচটি ছিল কার্যত নিয়মরক্ষারই। তার ওপর ঢাকা ডমিনেটরসের এটিই ছিল শেষ ম্যাচ। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স টেনেটুনে ১১৮ পর্যন্ত গিয়েছিল। এই ম্যাচ জয়ের আশা করা তো কঠিনই ছিল তাদের জন্য। তবে জিয়াউর রহমান-কুর্তিস ক্যাম্ফাররা বল হাতে চমক দেখালেন। ১১৯ তাড়া করতে পারলো না এবারের বিপিএলে শেষ ম্যাচ খেলতে নামা ঢাকা ডমিনেটরস। আগে ব্যাটিং করে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে সংগ্রহ করে ১১৮ রান। সে রান তাড়া করতে নেমেই ঢাকা থেমে গেল ১০৩ রানে। টানা ৬টি ম্যাচ হারার পর অবশেষে জয়ের মুখ দেখেছে চট্টগ্রাম, আর সান্ত্বনার জয়টুকুও পাওয়া হলো না ঢাকার।

আগে ব্যাটিং করা চট্টগ্রাম পথ হারিয়েছিল শুরুতেই। চট্টগ্রামের ব্যাটিংয়ের মূল ক্ষতিটা করেন আরাফাত সানি, তার সঙ্গে আল-আমিন হোসেন আর রান আউটের কবলে পড়ে ২৮ রানেই ৫ উইকেট হারায় তারা। চট্টগ্রামের মাত্র দুজন পান দুই অঙ্কের দেখা উসমান খান ও জিয়াউর রহমান। কার্টিস ক্যাম্ফারের সঙ্গে উসমানের ৩৯ বলে ৪১ রানের পর মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীকে নিয়ে ২৩ বলে ৩৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন জিয়াউর, চট্টগ্রাম ১১৮ রান পর্যন্ত যায় তাতে। ২০ বলে ৩৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন জিয়াউর, তিনটি চারের সঙ্গে মারেন দুটি ছক্কা।

আরাফাত ৪ উইকেট নেন ২২ রানে, টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এ নিয়ে তৃতীয়বার ৪ উইকেট পেলেন তিনি। আফগান বাঁহাতি স্পিনার ৩.৫ ওভারে ১৩ রানে নেন ১ উইকেট। দশম ওভারে জুবায়ের হোসেনের বদলি হিসেবে এসেছিলেন তিনি। এবার বিপিএলে মাত্র তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নামা লেগ স্পিনার জুবায়েরের দিনটা গেছে ভুলে যাওয়ার মতোই। নিজের দ্বিতীয় ওভারে দুটি ফুলটসে নো দেন, যেগুলোকে বিমার কল করেন আম্পায়ার। সে ওভারেই তাই বোলিং থেকে সরে যেতে হয় তাকে।

ফিল্ডিংয়ে জিয়াউরের একটি ক্যাচ পড়লেও ভালোই ছিল ঢাকা। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট থেকে সরাসরি থ্রোয়ে মেহেদী মারুফকে স্ট্রাইক প্রান্তে রানআউট করেন অ্যালেক্স ব্লেক। এক্সট্রা কাভারে পেছন ফিরে ডাইভ দিয়ে ক্যাম্ফারের দারুণ ক্যাচ নেন আরিফুল হক।

৭ ওভারের মধ্যে ৩৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়েছিল ঢাকাও। জীবন পেয়েও ১৬ বলে ২১ রানেই থামেন সৌম্য সরকার, কার্টিস ক্যাম্ফারের বলে লাইন মিস করে হন বোল্ড। আব্দুল্লাহ আল মামুন ও আরিফুল হকও স্বচ্ছন্দ্য ছিলেন না ঠিক। অধিনায়ক নাসির হোসেনের সঙ্গে অ্যালেক্স ব্লেকের জুটিতে একটু ধাতস্থ হয় ঢাকা, তবে নিহাদুজ্জামানকে তুলে মারতে গিয়ে মিড উইকেটে ব্লেক ধরা পড়েন ১৩ বলে ১৩ রান করে। ৬৭ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় ঢাকা।

নাসির অবশ্য ফেরেন অসময়েই। ৩৩ বলে ২৪ রান করে থামতে হয় তাকে, ঢাকার তখনো ২৪ বলে প্রয়োজন ছিল ৩১ রান। তবে ঢাকা এরপর ১৫ রান তুলতেই হারায় আরও ৪ উইকেট। ক্যাম্ফার ৩ উইকেট নেন ১৫ রানে, দুটি করের উইকেট নেন জিয়াউর ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীও।

কুঁচকির চোটের কারণে গত ডিসেম্বরে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে পারেননি তামিম ইকবাল। তামিম না থাকায় ওয়ানডে সিরিজে অধিনায়কত্ব করেন লিটন দাস। এবার ইংল্যান্ড সিরিজের আগেও চোটে পড়লেন তামিম।

পিঠের চোটের কারণে বিপিএলে খুলনা টাইগার্সের হয়ে শেষ দুটি ম্যাচ খেলবেন না তিনি। আগামী ১ মার্চ অনুষ্ঠেয় ইংল্যান্ড সিরিজের কথা মাথায় রেখেই তামিমকে নিয়ে ঝুঁকি নেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন খুলনার কোচ খালেদ মাহমুদ। বিপিএলে সেরা চারে উঠা হয়নি খুলনা টাইগার্সের। দুই ম্যাচ আগেই শেষ তাদের শেষ চারের আশা। দলগতভাবে বিপিএলে জ্বলে উঠতে পারেনি খুলনা। ব্যক্তিগত দুয়েকটি পারফরম্যান্স থাকলেও সেগুলো কাজে আসেনি।

দলের সেরা তারকা তামিম ইকবাল ধারাবাহিকভাবে রান তুলতে পারেননি। ১০ ম্যাচে ৩০২ রান করেছেন ৩৩.৫৫ গড়ে। স্ট্রাইক রেট ছিল ১২২.২৬। তামিমের পারফরম্যান্স ওঠানামা করায় ভুগেছে খুলনা তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এমন পারফরম্যান্স তামিম নিজেও ভুলে যেতে চাইবেন। ভুলে যেতে চাইবেন বিপিএলের এবারের আসরও।

খালেদ মাহমুদ সুজন জানিয়েছেন, তামিমের একটু সমস্যা আছে। ওর ব্যাক স্ট্রেইনে যে সমস্যা ছিল, ইনজেকশন নিয়েছিল ব্যাংকক থেকে। ওখানে আবার একটু ভুগছে। আমাদের টিম ফিজিও, জাতীয় ফিজিও জুলিয়ান কেলাফতে এসেছিল আমার সঙ্গে কথা বলতে। যেহেতু সামনে ইংল্যান্ড সিরিজ আছে, সেটা বড় চিন্তা আমাদের জন্য। সেজন্যই তামিমকে বিশ্রাম দেয়ার চিন্তা করেছি, খেললে হয়তো আরো খারাপ হতে পারে। তামিম আমাদের ওয়ানডে দলের অধিনায়ক, অনেক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। তাই বিপিএলের বাকি দুই ম্যাচে তাকে বিশ্রাম দেয়া হয়েছে।’

‘ইংল্যান্ড সিরিজে তাকে নিয়ে আশঙ্কা না থাকে, এর জন্যেই মূলত বিশ্রাম দেয়া হয়েছে। এমন না যে দশ ভাগ দিয়ে খেলবে। তামিম খেললে তো শতভাগ দিয়ে খেলবে, ফিল্ডিং করতে হবে বিশ ওভার, ডাইভ দিতে হবে। তবে পরিস্থিতি যদি অন্য হতো তামিমও হয়তো তখন অন্যভাবে চিন্তা করত। এখন আমাদের ওরকম সুযোগ নেই বিপিএলে। তাই তাকে বিশ্রাম দেয়াটা জরুরি।’ যোগ করেন খালেদ মাহমুদ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App