×

সাহিত্য

মেলায় বসন্তের বার্তা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:১৩ পিএম

মেলায় বসন্তের বার্তা

ফাইল ছবি

কয়েকদিনের শীতের দাপটের পর উষ্ণতা বাড়ছে। সূর্যের তেজের সঙ্গে বাতাস জানিয়ে দিচ্ছে বসন্তের বার্তা। হঠাৎ হঠাৎ বাউরী বাতাস এসে মন উন্মনা করে দিয়ে যাচ্ছে। এমন মনউদাসী প্রকৃতির প্রভাব পড়েছে অমর একুশে বইমেলায়। বিকেলে দ্বার খুলতেই পাঠক আর বইপ্রেমীরা ঢুকে পড়েছে মেলা চত্বরে। গমগম করে উঠছে তাদের পদচারণায়। অনেকের পরনে বাসন্তি রঙ। ভিড় বাড়ছে স্টলগুলোতেও। প্রতিদিনই বাড়ছে বেচাকেনা। তবে মেলা চত্বরের এখানে সেখানে এখনও কিছুটা অপরিচ্ছন্নতা রয়েই গেছে। তরুণ সাহিত্যিকদের নির্ধারিত লিটল ম্যাগ চত্বর পুরোপুরি সেজে উঠেনি।

তবে আবহাওয়া আর ঋতু বদলের সঙ্গে সঙ্গে মেলার চেহারাও খানিকটা রঙিন হয়ে উঠছে। এজন্য গোটা চত্বর জুড়েই এক ধরনের ফুরফুরে মেজাজ দেখা গেছে। মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সপ্তম দিনে অমর একুশে বইমেলার চিত্র দেখা গেছে এমনটাই। মা আর নানার লেখা বই এসেছে মেলায়। সেজন্য প্রথম মেলায় এসেছেন নওশিন তাবাসসুম। বললেন, মেলার পরিবেশ চমৎকার। খুবই ভালো লেগেছে সবকিছু। বেশ কিছু পছন্দের বই বাছাই করেছি। পরে এসে কিনে নিয়ে যাব।

নওশিনের বন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবরার রুম্মানও এসেছেন মেলায়। তবে স্টল খুঁজে পেতে তাকে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। তিনি বলেন, সহজে যেন যেকোনো স্টল খুঁজে পাওয়া যায় সে বিষয়ে নজর দেয়া উচিত আয়োজকদের। তাছাড়া প্রতিবছর একই স্টাইলেই মেলা হচ্ছে, আধুনিক ব্যবস্থাপনা করা যেতে পারে। একই সঙ্গে বলেন, মেলার পরিবেশ বেশ ভালো। তবে দূষিত বাতাসের শহরে যেন মেলার বাতাস অন্তত ভালো থাকে সে বিষয়ে অবশ্যই নজর দেয়া দরকার।

মেলার ফুরফুরে আবহাওয়ায় লেকের পাড়ে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন কয়েকজন। তারা বললেন, বই কেনার জন্য প্রতিবছরই আসা হয় মেলায়। তবে শুধু বই কেনার মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ থাকে না, আড্ডাও দেয়া হয় বন্ধুদের সঙ্গে। মেলায় কোন লেখকের কোন বই এসেছে তা নিয়ে কথা আলোচনাও। মেলার পরিবেশ নিয়ে তারা বললেন, পরিবেশ খারাপ নয়। ধূলাবালি ওড়াওড়ি নেই। বেশ ফাঁকা ফাঁকা সব স্টল। মাঝখান দিয়ে চওড়া জায়গা রাখা হয়েছে। এতে হাঁটাচলা করা সুবিধা। প্রবেশ পথে আলোক ব্যবস্থাও আরো বাড়ানো দরকার।

এদিকে, মঙ্গলবার ভোরের কাগজে সংবাদ প্রকাশের পর টিএসসি এলাকায় প্রবেশপথে কিছুটা আলোর ব্যবস্থা করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয় মনে করছেন দর্শনার্থীরা।

মেলায় আসা তরুণ সাংবাদিক রেজাউল করিম জানালেন, প্রবেশপথে কিছুটা ভোগান্তি আছে। প্রবেশপথ সব একদিকে করায় চাপ বেশি পড়েছে। তাছাড়া সন্ধ্যার পরে প্রবেশপথ আরো আলোকজ্জ্বল করা দরকার। তাতে নিরাপত্তা বেশি থাকে। আরেক সংবাদকর্মী সাব্বির হোসেন জানালেন, মেলা চত্বর আরও সুন্দর করা যেত। এমনিতেই ঢাকার বাতাস ভীষণ দূষিত। সেদিকে লক্ষ্য রেখে মেলার বাতাস যাতে বিশুদ্ধ থাকে সেজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে মেলায় এসে কেউ যেন অসুস্থ হয়ে না যায়।

স্টল মালিকদের কয়েকজন জানালেন, মেলার এক সপ্তাহ হচ্ছে। যতই সময় গড়াচ্ছে ততই মেলায় সমাগম বাড়ছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার দিকে পাঠক আর বইপ্রেমীদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। তবে বেচাকেনা এখনও তেমনটা বাড়েনি। অনেকেই বইয়ের তালিকা সংগ্রহ করছেন। প্রকাশকরা আশা করছেন, আর কয়েকদিন পর বেচাকেনা বাড়বে।

চার প্যাভিলিয়নকে শোকজ

এদিকে বাংলা একাডেমি সূত্রে জানা গেছে, মেলার আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে পাঠক সমাবেশ, প্রথমা প্রকাশন, মিজান পাবলিশার্স, আকাশ প্রকাশনীকে নির্ধারিত আয়তনের বাইরে প্যাভিলিয়নের পরিসর বাড়ানোয় কারণ দর্শানোর চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে প্রথমা প্রকাশন রাতের মধ্যেই নির্দেশনা অনুযায়ী পুণরায় স্টল নির্মাণের অঙ্গিকার করেছে বলে জানিয়েছেন অমর একুশে বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ডা. কেএম মুজাহিদুল ইসলাম।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App