×

শিক্ষা

মার খেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়ছেন ইবি শিক্ষার্থী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৬:০৮ পিএম

মার খেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়ছেন ইবি শিক্ষার্থী

ইবি শিক্ষার্থী রিয়াদ। ছবি: ভোরের কাগজ

মার খেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়তে হচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী রিয়াদের। বাসের সিট ধরে রাখাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে মার খেয়েছেন তিনি।

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে আটটার দিকে বাস ক্যাম্পাসে এসে পৌঁছালে সাদ্দাম হোসেন হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে দোষীদের বিচারের দাবিতে প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা বরাবর লিখিত আবেদন দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রিয়াদ।

রিয়াদ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। ইতোমধ্যে তার এমবিএ সম্পন্ন হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও লিখিত আবেদন সূত্রে জানা যায়, টিউশনি শেষ করে শহরের হাসপাতাল মোড় থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার বাসের সিট ধরেন রিয়াদ। এসময় বাসের পেছনে বসা বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করছিলেন তিনি। পরে বাস ছাড়লে নিজের সিটে বসতে গেলে মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা শাখা ছাত্রলীগের ৮-১০ জন নেতা-কর্মীরা তাকে বাধা দিয়ে নিচে নেমে সামনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে বলে। তিনি প্রতিবাদ করলে উভয়পক্ষ বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এসময় ছাত্রলীগ কর্মী ও ইংরেজি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সামিউল ইসলাম ক্যাম্পাসে নেমে তাকে 'দেখে নিবেন' বলে হুমকি দেন অভিযোগ ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর।

রাত সাড়ে আটটায় বাস ক্যাম্পাসের জিয়া মোড়ে থামলে রিয়াদ নামামাত্রই তারা তার উপর চড়াও হয়। এসময় সামিউল তার শার্টের কলার ধরে মারধর শুরু করেন। তার সঙ্গে থাকা ছাত্রলীগ কর্মী বাংলা বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের তরিকুল ইসলাম তরুন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের মিন্টু হোসেন, ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের শিক্ষার্থী সৌমিক, সিএসই বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের নাবিল আহমেদ ইমন ও সিয়ামসহ ৮-১০ জন নেতাকর্মী তাকে উপর্যুপরি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এসময় ঠেকাতে গিয়ে ভুক্তভোগীর বন্ধু সুরুজ আলীও মারধরের স্বীকার হন বলে অভিযোগ করেন রিয়াদ। তারা সবাই শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী। পরে ভুক্তভোগীর সহপাঠীরা তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যান।

তার সহপাঠীরা বলেন, সামান্য একটি ঘটনার জেরে তাকে একই সেশনের বন্ধুদের হাতে মার খেতে হলো। অথচ এখানে মারধরের কোনো প্রশ্নই আসেনা, একে অপরকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে বিষয়টি সমাধান করা যেত।

এবিষয়ে ভুক্তভোগী রিয়াদ হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে মার খেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়তে হচ্ছে আমার। এর থেকে বড় আফসোস কি আর হতে পারে? এ ক্যাম্পাস সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য না। সামান্য একটি বিষয় নিয়ে তারা আমাকে অন্যায়ভাবে মারধর করলো। আমি তাদের সকলের বিচার চাই।

এবিষয়ে সামিউল ইসলাম বলেন, বাসের মধ্যে প্রচুর ভিড় থাকায় ওকে ভিতর দিয়ে যেতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু ও না শুনে আমাদের সাথে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়। পরে ক্যাম্পাসে নেমে ওকে ডেকে বুঝাতে গেলে আমার হাত ঝাড়ি মেরে আবারও তর্কে লিপ্ত হয়। এসময় রিয়াদ ওর বন্ধুদের নিয়ে আমাদের উপর চড়াও হলে তাৎক্ষণিক হাতাহাতি হয়। আমি ওকে হুমকি-ধামকি দেয়নি।

এবিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিকদের বলেন, আমি যতদূর জানি বাসে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ক্যাম্পাসে এসে রিয়াদ ও তার বন্ধুরা সামিউল ও তার বন্ধুদের উপর চড়াও হয়। এদিকে আবার দেখছি রিয়াদ প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

এবিষয়ে ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন বলেন, আবেদনপত্র হাতে পেয়েছি। ব্যস্ততা থাকাতে আজ বসতে পারিনি। আগামীকাল উভয়পক্ষকে নিয়ে বসবো এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানের চেষ্টা করবো।

এবিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদকে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App