×

সম্পাদকীয়

মালয়েশিয়া শ্রমবাজার : সংকট কাটিয়ে উন্মুক্ত হোক

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:২৬ এএম

মালয়েশিয়া শ্রমবাজার নিয়ে দীর্ঘসময় জটিলতা চলছে। বারবার উদ্যোগ নিলেও ফলপ্রসূ হচ্ছে না। দুদিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন দেশটির নবনিযুক্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুসন ইসমাইল। এ সফরকে কেন্দ্র করে নতুন করে আশা জাগাচ্ছে। সিন্ডিকেটের কারণে কর্মী পাঠানো আটকে থাকায় তার এই সফরে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে জনশক্তি রপ্তানি সহজ করা নিয়ে আলোচনা হবে। গতকালের বৈঠকে অভিবাসন ব্যয় কমিয়ে আনার চেষ্টা করছেন বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় বর্তমানে ১৫ লাখ বিদেশি কর্মী আছে। এর মধ্যে সাড়ে ৪ লাখ বাংলাদেশি কর্মী। এ কারণেই বাংলাদেশ ১৫টি সোর্স কান্ট্রির মধ্যে প্রথম স্থানে আছে। বাংলাদেশি কর্মীরা মালয়েশিয়ার অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখছে। মালয়েশিয়ায় অনেক অবৈধ কর্মী আছেন। তাদের একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বৈধ করা হচ্ছে। গত ২৭ জানুয়ারি থেকে এই প্রোগ্রাম শুরু হয়েছে। এ বিষয়গুলো নিশ্চয় আমাদের জন্য ইতিবাচক ও উৎসাহব্যঞ্জক। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম প্রধান খাত জনশক্তি রপ্তানি। আর মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এখনো জনশক্তি রপ্তানির প্রধান টার্গেট। তবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানির বাজার দিন দিন সংকুচিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলতে সরকার নানাভাবে তৎপরতা চালিয়ে আসছে। সরকারিভাবে (জিটুজি পদ্ধতি) কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের ১০ প্রতিষ্ঠান (সিন্ডিকেট) দুর্নীতি করায় গত ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কর্মী নিয়োগ স্থগিত রয়েছে। শ্রমবাজার চালুর বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায় থেকে কমপক্ষে পাঁচবার ইতিবাচক ঘোষণা এলেও ওই সিন্ডিকেটের জন্যই তা শেষ পর্যন্ত ভেস্তে গেছে। জানা যায়, দুর্নীতির অভিযোগ তুলে জিটুজি প্লাস বাতিল করে দেয় মালয়েশিয়ার সরকার। জিটুজি প্লাসের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে কর্মী যেতে প্রথমে ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণ করা হয়। পরে তা ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা করা হয়। কিন্তু সিন্ডিকেটের কারণে প্রায় সব কর্মী মালয়েশিয়া যেতে ৩ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা দিতে বাধ্য হন। এর মাধ্যমে দুদেশের এজেন্টরা ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে বলে মালয়েশিয়া সরকারের অভিযোগ। জিটুজি প্লাসে কর্মী পাঠানোর কাজ পেয়েছিল ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সি। যারা সিন্ডিকেট হিসেবে চিহ্নিত হয়। এ অবস্থায় মালয়েশিয়া কর্মী নিয়োগের বিশেষ পদ্ধতি থেকে বাংলাদেশকে বাদ দেয়। এর ফলে দেশটিতে বাংলাদেশি শ্রমিক পাঠানো বন্ধ হয়ে যায়। নেতিবাচক প্রভাব পড়ে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। একই সঙ্গে সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশি অনিয়মিত শ্রমিকদের বিরুদ্ধে নানারকম হয়রানি শুরু হয়, যা আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে। মালয়েশিয়ায় আমাদের বিশাল এক শ্রম অভিবাসী কাজ করছে। মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে অবশ্যই আগের ভুলত্রæটি মোকাবিলা করে এই শ্রমবাজারে বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় করতে হবে। সে ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে সহনশীল ব্যয়ের মাধ্যমে কর্মী প্রেরণ করাটাই এখন বড় কর্তব্য।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App