×

মুক্তচিন্তা

উন্নয়ন বনাম মূল্যবোধের অবক্ষয়

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:২৬ এএম

একসময় ‘লঙ্গরখানার গম চুরি’, ‘পুত্রের হাতে পিতা খুন’- এ জাতীয় সংবাদ শিরোনামে সে সময়কার আর্থসামাজিক অবস্থা ব্যবস্থার বিবরে যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ পেত, আজ তুচ্ছ কারণে শিক্ষার্থীরা যখন শিক্ষককে অপমান-অপদস্ত করতে উদ্ধত হয়, শ্রেয়বোধ ও সম্মান সমীহের খাতায় অবজ্ঞা প্রকাশের অসংখ্য কালো দাগ দেখি, পাঠ্যবই থেকে নীতি-নৈতিকতার চর্চা উধাও হতে থাকে, কালো যখন সাদাকে সমঝে চলে না, সুবচন যখন নির্বাসনে, সাত সমুদ্দুর তেরো নদীর পার থেকে নয়, প্রতিবেশীর তরফ থেকেও নয় নিজের ঘরেই যখন ঔপনিবেশিকতার মনোভঙ্গির শিকার, নিজেরাই নিজেদের শত্রæতায় লিপ্ত, তখন মনে হয় চোখ ধাঁধানো উন্নয়নের বলির পাঁঠা হতে চলেছে সনাতন সব মূল্যবোধ। এটা ঠিক, অর্থনৈতিক স্বয়ম্ভরতা অর্জন ব্যতিরেকে স্বাধীনতা যে নির্মল নয়, একুশ শতকের এই প্রারম্ভিক পর্যায়ে তা বেশি করে অনুভূত হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ কথা বহুল উচ্চারিত হয়ে আছে, একুশ শতকে অর্থনৈতিক উন্নয়নই হবে তাবৎ রাষ্ট্র ও জাতির শ্রেষ্ঠত্বের ও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার অন্যতম নিয়ামক। আর সে কারণে অন্যান্য অনুষঙ্গের চেয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রসঙ্গকে এগিয়ে আনা হচ্ছে উন্নয়ন কৌশলের সব পরিকল্পনা পত্রে। অর্থনৈতিক মুক্তিকে গণতন্ত্রায়নের অন্যতম উপলক্ষ ও উপায় হিসেবে বিবেচনার দাবি সোচ্চার হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে, যেখানে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে এখনো নিরলস প্রচেষ্টা ও আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। বিশ্ব সংস্কৃতি ও সভ্যতার উন্মেষ ও বিকাশ ঘটেছিল এশিয়ায়। সামরিক শক্তিমত্তার পাশাপাশি দর্শন ও বিজ্ঞান চর্চার অবদান সেখানে ছিল। পরবর্তী সময়ে ইউরোপে প্রসার ঘটে এশীয় সমৃদ্ধি ও জ্ঞানবিজ্ঞান অধ্যয়ন অনুধাবনের। একে অবলম্বন করেই ইউরোপে শিল্প বিপ্লব সংঘটিত হয় এবং বিশ্ব নেতৃত্ব ইউরোপের হাতে চলে যায়। এরপর ইউরোপীয় শিল্প বিপ্লবের ঢেউ আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে আমেরিকার উপকূলে আছড়ে পড়ে। বিগত শতাব্দীতেই আমেরিকা শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে প্রযুক্তির উৎকর্ষকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক শক্তিতে উন্নীত হয়। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিই যুক্তরাষ্ট্রকে সামরিক তথা বিশ্ব রাজনৈতিক পরাশক্তির পরিচিতিতে পৌঁছে দেয়। স্নায়ুযুদ্ধের অবসান-উত্তর পরিবেশে এখন তার শক্তিশালী অবস্থান মূলত অর্থনৈতিক শক্তিমত্তার স্থায়িত্ব ও স্থিতিশীলতার ওপরই নির্ভর করছে। জাপানসহ পূর্ব এশীয় দেশগুলোতে গত চার দশকে অর্জিত অর্থনৈতিক সাফল্যও ইঙ্গিত দিচ্ছে, একুশ শতকে এশিয়া আবার ফিরে পেতে পারে তার গৌরব। ইনফরমেশন টেকনোলজির উৎকর্ষই হবে অর্থনৈতিক সাফল্যের সোপান, যা নিয়ন্ত্রণ করবে বিশ্ব রাজনীতিকে। এ কথা অস্বীকার করা যায় না, অর্থনৈতিক স্বয়ম্ভরতা জীবনযাত্রার মানকে, মূল্যবোধকে এমন একটি প্রত্যয় প্রদান করে, যা অন্যান্য সব অনুষঙ্গ অনুশাসনে বা সুনীতি নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হয়। ব্যক্তি বা পরিবারের ক্ষেত্রে যে কথা সে কথা রাষ্ট্র বা দেশের ক্ষেত্রেও। সাম্প্রতিককালে বিশ্বে যতগুলো জাতীয় স্বাধীনতা বা মুক্তি সংগ্রাম সংঘটিত হয়েছে, সেগুলোর মূল প্রেরণায় ছিল অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার আকাক্সক্ষা, গোষ্ঠী বা ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারিতা তথা স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবের বলয় থেকে রাষ্ট্রীয় সৌভাগ্য ও সুযোগকে সবার আয়ত্তে বা অধিকারে আনা। অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের নিশ্চয়তা, শিক্ষা-স্বাস্থ্য সুবিধা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ, উন্নত অবকাঠামো এবং মানবাধিকারসহ সামাজিক নিরাপত্তা বিধানের বিষয়গুলোকে রাষ্ট্রের কাছ থেকে শুধু দাবিই করা হচ্ছে না বরং এসবের ক্ষেত্রে পরিস্থিতির সূচকই এখন সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের প্রতি জনসমর্থন ও গণতান্ত্রিক পরিবেশের পরিচায়ক। মুক্তবাজার অর্থনীতির প্রসার এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে অধিকতর উদারীকরণের লক্ষ্যে দেশে দেশে অর্থনৈতিক সংস্কারের যে কর্মসূচি গৃহীত হচ্ছে, তার অভীষ্টই হচ্ছে রাষ্ট্রীয় তথা বৈশ্বিক সম্পদ ও সুযোগে সবার অবারিত অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করা। স্বচ্ছতা ও সুশাসনের তাগিদ এসব সংস্কার ব্যবস্থাপত্রে প্রকৃতপক্ষে আমজনতার ক্ষমতায়নের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে নিবেদিত। বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় কাক্সিক্ষত এ সংস্কার ক্রমান্বয়ে আন্তঃরাষ্ট্র সম্পর্কের অন্যান্য রীতি-পদ্ধতির (যেমন- ইমিগ্রেশন, ইনটেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইট ইত্যাদি) ওপর প্রভাব ফেলবে- এ কথা বলাই বাহুল্য। পূর্ব এশীয় দেশগুলোতে কিছুকাল আগে থেকে পরিলক্ষিত অর্থনৈতিক বিপর্যয় এসব দেশের নেতৃত্বকে এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশকে যেভাবে স্পর্শ করেছে, তাতে এটা স্পষ্টতর হচ্ছে, অর্থনৈতিক উন্নয়নই হবে গণতন্ত্রের প্রাণশক্তি। একটি কল্যাণ অর্থনীতিতে সব পক্ষকে স্ব স্ব অবস্থানে থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন এবং সব প্রয়াস প্রচেষ্টায় সমন্বয়ের মাধ্যমে সার্বিক উদ্দেশ্য অর্জনের অভিপ্রায়ে অয়োময় প্রত্যয়দীপ্ত হওয়ার পরিবেশ সৃষ্টির আবশ্যকতা অনস্বীকার্য। একজন কর্মচারীর পারিতোষিক তার সম্পাদিত কাজের পরিমাণ বা পারদর্শিতা অনুযায়ী না হয়ে কিংবা কাজের সফলতা ব্যর্থতার দায়-দায়িত্ব বিবেচনায় না এনে যদি দিতে হয় অর্থাৎ কাজ না করেও সে যদি বেতন পেতে পারে কিংবা তাকে বেতন দেয়া হয়- তাহলে দক্ষতা অর্জনের প্রত্যাশা আর দায়িত্ববোধের বিকাশ-ভাবনা মাঠে মারা যাবেই। এ ধরনের ব্যর্থতার বজরা ভারী হতে থাকলেই যে কোনো উৎপাদন ব্যবস্থা কিংবা উন্নয়ন প্রয়াস ভর্তুকির পরাশ্রয়ে যেতে বাধ্য। দারিদ্র্যপীড়িত জনবহুল কোনো দেশে পাবলিক সেক্টর বেকার ও অকর্মণ্যদের জন্য যদি অভয়ারণ্য কিংবা কল্যাণ রাষ্ট্রের প্রতিভূ হিসেবে কাজ করে, তাহলে সেখানে অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। যদি বিপুল জনগোষ্ঠীকে জনশক্তিতে পরিণত করা না যায় উপযুক্ত কর্মক্ষমতা অর্জন ও প্রয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি করে, তাহলে উন্নয়ন কর্মসূচিতে বড় বড় বিনিয়োগও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে। চাকরিকে সোনার হরিণ বানানোর কারণে সে চাকরি পাওয়া এবং রাখার জন্য অস্বাভাবিক দেনদরবার চলাই স্বাভাবিক। দায়-দায়িত্বহীন চাকরি পাওয়ার সুযোগের অপেক্ষায় থাকার ফলে নিজ উদ্যোগে স্বনির্ভর হওয়ার আগ্রহতেও অনীহা চলে আসে। মানবসম্পদ অপচয়ের এর চেয়ে বড় নজির আর হতে পারে না। দরিদ্রতম পরিবেশে যেখানে শ্রেণিনির্বিশেষে সবার কঠোর পরিশ্রম, কৃচ্ছ্রসাধন ও আত্মত্যাগ আবশ্যক সেখানে সহজে ও বিনা ক্লেশে কীভাবে অর্থ উপার্জন সম্ভব সেদিকেই ঝোঁক বেশি হওয়াটা সুস্থতার লক্ষণ নয়। ট্রেড ইউনিয়ন নির্বাচনে প্রার্থীর পরিচিতিকরণে যে অঢেল অর্থ ব্যয় চলে তা যেন এমন এক বিনিয়োগ, যা অবৈধভাবে অধিক উসুলের সুযোগ আছে বলেই। শোষক আর পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থায় বঞ্চিত নিপীড়িত শ্রমিক শ্রেণির স্বার্থ উদ্ধারে নিবেদিতচিত্ত হওয়ার বদলে ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃত্ব নিজেরাই যখন উৎপাদনবিমুখ আর শ্রমিক স্বার্থ উদ্ধারের পরিবর্তে আত্মস্বার্থ উদ্ধারে ব্যতিব্যস্ত হয়ে শোষণের প্রতিভূ বনে যায়, তখন দেখা যায় যাদের তারা প্রতিনিধিত্ব করছে তাদেরই তারা প্রথম ও প্রধান প্রতিপক্ষ। প্রচণ্ড স্ববিরোধী এই পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে উৎপাদন, উন্নয়ন তথা শ্রমিক উন্নয়ন সবই বালখিল্যের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। সমাজে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিকাশ-ভাবনা ব্যক্তিবন্দনা, চর্চা, স্ব^ার্থ ও শর্তের বেড়াজালে আটকে গেলে তা বুমেরাং হয়ে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। অর্থনীতিতে সরবরাহ চাহিদায় বণ্টন বৈষম্য যেমন সুষম সম্পদ সৃষ্টির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, যেভাবে সমন্বিত উৎপাদন অভিপ্সায় বিভ্রান্তি বিসংবাদ উপস্থিত করে। ওভারটেক করার প্রবণতা যেমন যাত্রাপথে বিশৃঙ্খলা উপহার দেয়, তেমনি পরমতসহিষ্ণুতার অভাব সুশীল ও সুষম আচরণকে নির্বাসনে পাঠাতে পারে। গণতন্ত্রের জন্য যা কোনো অবস্থাতেই পুষ্টিকর পরিস্থিতি নয়। ১০টি কাজের সাতটি ভালো তিনটি মন্দ হতে পারে। ভালোকে ভালো বলে স্বীকৃতি, মন্দকে মন্দ বলে তিরস্কারের নীতিগত অবস্থানে যে কোনো আপস আত্মঘাতের নামান্তর। মন্দকে লুকিয়ে শুধু ভালোর বন্দনা এবং ভালোকে ছাপিয়ে একতরফাভাবে মন্দকে সামনে আনা সুস্থতার লক্ষণ নয় কোনো পরিবেশেই। তিরস্কার পুরস্কারে পক্ষপাতিত্ব কিংবা অন্ধত্ব অবলম্বন অর্থনৈতিক উন্নয়নেও যেমন, সমাজ সুসংগঠনের বেলাতেও সমান দুঃসংবাদবাহী। গণতন্ত্রে মানুষই বড় কথা। অর্থনৈতিক উন্নয়ন এই মানুষের কল্যাণ-ভাবনাতেই নিবেদিত। এই মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধের দ্বারা, আবার সব মানুষের দ্বারা কর্তব্যকর্ম সুচারুরূপে সম্পাদনের মাধ্যমে সমাজ সমৃদ্ধি লাভ করে। আবার এই মানুষের দায়িত্বহীনতার কারণে সমাজের সমূহ ক্ষতি সাধিত হয়। সবার সহযোগিতা ও সমন্বিত উদ্যোগে সমাজ নিরাপদ বসবাসযোগ্য হয়ে ওঠে। সমাজবিজ্ঞানীরা তাই মানুষের সার্বিক উন্নয়নকে দেশ জাতি রাষ্ট্রের সব উন্নয়নের পূর্বশর্ত সাব্যস্ত করে থাকেন। সমাজের উন্নতি, অগ্রগতি ও কল্যাণ সৃষ্টিতে মানুষের সার্বিক উন্নতি অপরিহার্য শর্ত। আগে সমাজ না আগে মানুষ- এ বিতর্ক সর্বজনীন। মানুষ ছাড়া মনুষ্য সমাজের প্রত্যাশা বাতুলতামাত্র। রাষ্ট্রে সব নাগরিকের সমান অধিকার এবং দায়িত্ব নির্ধারিত আছে। কিন্তু দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা অধিকার আদায়ের সম্ভাবনা ও সুযোগকে নাকচ করে দেয়। পণ্য ও সেবা সৃষ্টি না হলে চাহিদা অনুযায়ী ভোগের জন্য সম্পদ সরবরাহে ঘাটতি পড়ে। মূল্যস্ফীতি ঘটে, সম্পদ প্রাপ্তিতে প্রতিযোগিতা বাড়ে। পণ্য ও সেবা সৃষ্টি করে যে মানুষ সেই মানুষই ভোক্তার চাহিদা সৃষ্টি করে। উৎপাদনে আত্মনিয়োগের খবর নেই- চাহিদার ক্ষেত্রে ষোলোআনা টানাপড়েন তো সৃষ্টি হবেই। অবস্থা ও সাধ্য অনুযায়ী উৎপাদনে একেকজনের দায়িত্ব ও চাহিদার সীমারেখা বেঁধে দেয়া আছে কিন্তু এ সীমা অতিক্রম করলে বাজার ভারসাম্য বিনষ্ট হবেই। ওভারটেক করার যে পরিণাম দ্রুতগামী বাহনের ক্ষেত্রে, সমাজে সম্পদ অর্জন ও ভোগের ক্ষেত্রে সীমা অতিক্রমনে একই পরিবেশ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে থাকে। সমাজে নেতিবাচক মনোভাবের উপস্থিতি, অস্থিরতা ও উন্নয়ন অপারগতার যতগুলো কারণ এ যাবৎ চিহ্নিত বা শনাক্ত হয়েছে, তার মধ্যে এই সম্পদ অবৈধ অর্জনরোধে অপারগতা, ন্যায্য অধিকার বঞ্চিতকরণে প্রগলভতা এবং আত্মত্যাগ স্বীকারে অস্বীকৃতি মুখ্য। গণতন্ত্রের বিকাশ ও টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য যা শুভ ও কল্যাণকর নয়। দেশীয় ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই মুহূর্তে সর্বত্র যৌক্তিক উপলব্ধির অবয়ব মুক্তবুদ্ধির বলয়ে বিকাশ ও বিস্তৃতিলাভের প্রত্যাশা সবার। ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ : উন্নয়ন অর্থনীতির বিশ্লেষক। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App