কৃষ্ণ ও ভূমধ্যসাগরের তীর ধরে গড়ে ওঠা আধুনিক তুরস্ক ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভূরাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ দেশটি অত্যন্ত ভূমিকম্পপ্রবণ।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দেশটির গাজিয়ানটেপ প্রদেশের কাহরামানমারাস শহরে সৃষ্ট ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে নিজেদের পাশাপাশি প্রতিবেশী সিরিয়ায়ও জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সর্বশেষ খবরে উভয় দেশে সহস্রাধিক মরদেহ উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে।
গত ১৪১ বছরে তুরস্কে বেশকিছু শক্তিশালী ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। কিন্তু দেশটিতে এত বেশি শক্তিশালী ভূমিকম্প হয় কেন?
কিছু প্রাথমিক কারণ
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্কের বেশিরভাগ ভূখণ্ডের অবস্থান আনাতোলীয় টেকটোনিক প্লেটের ওপর অবস্থিত। এ প্লেটটি ইউরেশীয় ও আফ্রিকান নামের দুটি বড় ধরনের টেকটোনিক প্লেটের মোহনায় পড়েছে। তাছাড়া আনাতোলীয় টেকটোনিক প্লেটের সঙ্গে ক্ষুদ্রাকৃতির অ্যারাবিয়ান প্লেটও খানিকটা যুক্ত। ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগ বা লিথোস্ফিয়ারের এসব টেকটোনিক প্লেট সদা গতিশীল। এগুলো প্রতিনিয়ত অল্প অল্প করে একটা আরেকটাকে অতিক্রম করছে। তাদের পরস্পরের মধ্যে ছোটখাটো সংঘর্ষ লেগেই আছে। এ অবস্থায় ইউরেশীয় ও আফ্রিকান প্লেট দুটি যখন বড় ধরনের জায়গা বদল করে, তখন বড় ধরনের ভূমিকম্প দেখা দেয়।
ভূমিকম্প বিশারদদের মতে, পৃথিবীর আরো অনেক দেশ এ ধরনের দুই প্লেটের মোহনায় পড়েছে। সেসব দেশে কিন্তু তুরস্কের মতো এত ঘন ঘন বড় ধরনের ভূমিকম্প কম হয়। তুরস্কে হওয়ার অন্যতম কারণ, আনাতোলীয় প্লেটের পূর্ব ও উত্তরাংশে বড় ধরনের ফাটল রয়েছে। এই ফাটলটির কারণে মূলত দেশটিতে বড় ধরনের বেশি ভূমিকম্প হয়। তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এএফএডি) তথ্যানুয়ায়ী, ২০২২ সালে দেশটিতে ২২ হাজারের বেশি ছোটখাটো ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। ১১ মাইল গভীরে উৎপন্ন সোমবারের (৬ ফেব্রুয়ারি) ভূমিকম্পটি সিরিয়ার বাইরে লেবানন, সাইপ্রাস ও ইসরায়েলেও অনুভূত হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।