×

জাতীয়

‘সংসদে একমাত্র বিরোধী দলের এমপি আমি’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৭:৩৬ পিএম

গণফোরামের এমপি মোকাব্বির খান বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কয়েকদিন আগে বলেছিলেন, আমি নাকি বিরোধী দলকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছি। হ্যাঁ, এটা ঠিক। কেননা এই সংসদে আমিই একমাত্র বিরোধী দলের এমপি। আর যারা আছেন জাতীয় পার্টির, তারা তো মহাজোটের সদস্য। তারা বিগত ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে মহাজোটের অংশ হিসেবে নির্বাচন করে ও তারা সরকারেও অংশ নেন। মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী হন। আবার ২০১৪ সালেও একইরকমভাবে জাতীয় পার্টি মহাজোটের অংশ হিসেবে নির্বাচন করে। তবে ভাগাভাগি বা অন্য কোন কারণে ২০১৪ সালে তাদের সরকারে আসা সম্ভব হয়নি। তারা এখন বিরোধীদল হিসেবে সংসদে আসেন। তবে সত্যিকার বিরোধীদল তারা নয়, বিরোধী দল বলতে আমি একলাই কথা বলে যাচ্ছি।’

রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি। এসময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করছিলেন।

মোকাব্বির খান বলেন, ‘আমার রাজনৈতিক দল গণফোরামের আদর্শ হলো জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধুর দর্শন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সংবিধানের আলোকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দুর্নীতিমুক্ত, শোষণমুক্ত, কল্যাণমুখী অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার অঙ্গীকার। আমার দলের নেতা ড. কামাল হোসেন ছিলেন বঙ্গবন্ধুর বিস্তস্থ,অত্যন্ত ঘনিষ্ট সহচর। ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি তিনি বঙ্গবন্ধুর সাথে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন ও ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর সাথে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। সেদিন বঙ্গবন্ধুর ফ্লাইট ড. কামাল হোসেনের জন্য ৩০ মিনিট দেরি হয়েছিল। কারণ বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন আমি কামালকে না নিয়ে দেশে ফিরবো না’। এতে স্পষ্ট বোঝা যায় বঙ্গবন্ধু ড. কামাল হোসেন কে কতটা ভালবাসতেন। এর পরে যুদ্ধ বিদ্ধস্থ বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু তার অত্যন্ত আস্থা ভাজন ড. কামাল হোসেনকে আইনমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী করেন। যদি অত্যন্ত সফলতার সাথে সেই দায়িত্ব পালন করেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ড. কামাল উপহার দিয়েছিলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ট সংবিধানের অন্যতম একটি সংবিধান। জাতিসংঘে বাংলাদেশের পক্ষে উত্তেলন করেছিলেন লাল সবুজের পতাকা। তিনি ১৯৭২ সালের ১৩ জানুয়ারী থেকে ১৯৭৩ সালের ১৬ জানুয়ারী পর্যন্ত ড. কামাল হোসেন আইনমন্ত্রী থাকাকালীন বাংলাদেশ কোলাবোরেট এক্ট ওয়ার্ডার, সমুদ্রসীমা আইনসহ ৪০টিরও বেশী আইন প্রনয়ন করেছিলেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তিনি বিনা পারিশ্রমিককে পরিচালনা করেছিলেন ও জিতে এসেছিলেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘তবে স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসতে পারে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গঠিত আওয়ামী লীগ যখন বর্তমানে সরকার গঠন করেছে সেখানে ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম কেন বিরোধী দলে? বাঙালি জাতির স্বাধীকার, স্বাধীনতা ও ঐক্যের প্রশ্নে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ছয় দফা, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সারা জীবন জেলজুলুম নির্যাতন, অত্যাচার সহ্য করেছিলেন। স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধু যখন মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন, ড. কামাল হোসেন তখন একজন ত্যাগী কর্মী হিসেবে দেশ গঠনের বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। আর আজকে যারা সরকারের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিয়ে কামাল হোসেনের সমালোচনা করছেন সেদিন তারা কথায় ছিলেন? এই সংসদের উপনেতাকে শুরু করে অনেকেই সেদিন বঙ্গবন্ধুর সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য আন্দোলন করেছিলেন। তারা এমন অশ্লীল বক্তব্য দিয়েছিলেন তা ভাষায় প্রকাশ করার মত না। আমি তাদের সেদিনের অবস্থানকে ধিক্কার জানাই।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App