×

সম্পাদকীয়

নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সতর্ক হোন

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০২:০৫ এএম

নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। ইতোমধ্যে দেশের ২৮ জেলায় এই ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দেশে সাধারণত শীতকালে নিপাহ সংক্রমণ দেখা যায়। এই ভাইরাসে আক্রান্তের সময়কাল মূলত ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল মাস। নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা খুব বেশি না হলেও এ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা অনেক। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার ৭০ শতাংশ। ২০০১ সাল থেকে নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে জনগণকে সতর্ক করে আসছে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর। খেজুরের কাঁচা রস পানে নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণ ঘটছে বেশি। এই ভাইরাসজনিত মারাত্মক রোগ বাদুড় থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়। এ রোগের প্রধান লক্ষণগুলো হচ্ছে- জ্বরসহ মাথাব্যথা, খিঁচুনি, প্রলাপ বকা, অজ্ঞান হওয়াসহ কোনো কোনো ক্ষেত্রে মারাত্মক শ্বাসকষ্ট। এই ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সচেতনতার বিকল্প নেই। খেজুরের কাঁচা রস পান করা যাবে না, পাখি বা বাদুড়ে খাওয়া আংশিক ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসার পর সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। এমনিতেই শীতের এই সময়টায় মৌসুমি সর্দি-জ¦রের প্রকোপ বেড়ে যায়। তার ওপর নিপাহ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিটি হাসপাতালে জ্বরের উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের সেবা দেয়ার সময় চিকিৎসকদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আক্রান্ত রোগী থেকে বাতাসের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ায় না, তাই একটু সচেতন হলেই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করা সম্ভব। আক্রান্ত মানুষের সঙ্গে একই পাত্রে খাওয়া বা একই বিছানায় না ঘুমানো, রোগীর ব্যবহৃত কাপড় ও অন্যান্য সামগ্রী ভালোভাবে পরিষ্কার করা, রোগীর কফ ও থুতু একটি পাত্রে রেখে পরে তা পুড়িয়ে ফেলা, রোগীর শুশ্রƒষা করার সময় মুখে মাস্ক, হাতে গøাভস পরা জরুরি। সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে ৮ জন নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আইইডিসিআরের তথ্যমতে, গত ২২ বছরে দেশে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩২৬ জন এবং মারা গেছেন ২৩১ জন। মৃত্যুর এই হার শঙ্কাজনক। এই ভাইরাস থেকে রক্ষায় মানুষকে সচেতন করতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছে সরকার। সংক্রমণ ব্যাধি হাসপাতালে আলাদা ইউনিট করে চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। দূষিত খেজুরের রস খাওয়ার পর নিপাহ আক্রান্তের লক্ষণ দেখা দিতে ৮-৯ দিন লাগতে পারে। আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এসে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে লক্ষণ দেখা দেয় ৬-১১ দিন পর। গবেষকদের মতে, খেজুরের রস জ¦াল দিয়ে খেলে তা নিরাপদ, গুড়ও নিরাপদ। রস সংগ্রহকারী গাছিদের রস সংগ্রহের পর হাত ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। প্রাণঘাতী এই রোগে আক্রান্তদের মৃত্যুর হার বেশি। যারা বেঁচে যান তারা শারীরিক বৈকল্য নিয়ে বেঁচে থাকেন। তাই সংক্রমণমুক্ত থাকতে সবাইকে সতর্ক হতে হবে। আমরা করোনার মতো ভয়াবহ ভাইরাস প্রতিরোধে অনেকটাই সফল হয়েছি। নিপাহ ভাইরাস প্রতিরোধেও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, একযোগে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App