×

খেলা

কেপটাউনে ঝড়ের পূর্বাভাস জ্যোতির

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:০৪ পিএম

কেপটাউনে ঝড়ের পূর্বাভাস জ্যোতির

নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী ৯ দলের অধিনায়কের সঙ্গে টাইগ্রেস অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি

দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাচ্ছে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর। বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল টুর্নামেন্টটিতে পঞ্চমবারের মতো অংশগ্রহণ করতে চলেছে। বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী দশ দলের অধিনায়কদের নিয়ে গত শনিবার কেপটাউনে ক্যাপ্টেনস ডে আয়োজিত হয়েছিল। বাংলাদেশ নারী দলের অধিনায়ক হিসেবে অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত ছিলেন নিগার সুলতানা জ্যোতি। বিশ্বকাপে মাঠে নামার আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে রবিবার প্রস্তুতি ম্যাচে মাঠে নামবেন টাইগ্রেসরা। টানা তিন বিশ্বকাপে জয়হীন টাইগ্রেসরা এবার কেপটাউনে ঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করতে মরিয়া জ্যোতি বাহিনী।

নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপে বাংলাদেশ দল সর্বশেষ ২০১৪ সালে জয়ের মুখ দেখেছিল। এরপর তারা ২০১৬, ২০১৮ ও ২০২০ সালের আসরে অংশগ্রহণ করলেও প্রতি ম্যাচেই গ্রহণ করেছে পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ। কেপটাউনে অনুষ্ঠিত ক্যাপ্টেন’স ডেতে অতীতের সব ব্যর্থতা ভুলে গিয়ে ভালো কিছু করার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামার কথা জানিয়েছেন টাইগ্রেস অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। তিনি বলেন, ‘এখানে এসে আমরা খুব আনন্দিত, বিশ্বকাপে জায়গা পাওয়াটা দারুণ ব্যাপার। আমরা অনেকেই অনেক বছর ধরে খেলছি, তবে এটা আমাদের মাত্র পঞ্চম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ২০১৪ সালের পর আমরা কখনো জিততে পারিনি, কিন্তু এবার নিজেদের সেরাটা দিয়েই লড়ব।’

সীমিত ওভারের এ বিশ্বকাপকে নিজেদের সামর্থ্য দেখানোর বড় সুযোগ বলে মনে করেন জ্যোতি। এ প্রসঙ্গে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, ‘আমাদের দলের বড় শক্তি অনুপ্রেরণা। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মতো বড় দলগুলোর বিপক্ষে আমাদের খেলার সুযোগ খুব একটা হয় না। ফলে আমরা সেভাবে প্রস্তুতিও নিতে পারি নাই। এ ধরনের টুর্নামেন্টে আমরা সেই সুযোগ পাই। এটা আমাদের জন্য সুযোগ নিজেদের সামর্থ্য আর প্রতিভা দেখানোর। আমরা কিছুদিন আগে নিউজিল্যান্ড সফর করেছি। যদিও সেখানে জিততে পারিনি, তবে অনেক কিছু শিখেছি। আমাদের দলটা গত দুই মাসে অনেক পরিশ্রম করেছে। আমরা এখন বিশ^কাপে নিজেদের সামর্থ্য দেখানোর অপেক্ষায় আছি।’

নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পরপর তিন আসরে কোনো জয় না দেখলেও তার মতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দলের দাপট দেখেছে সারা বিশ্ব। তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে আমরা এশিয়া কাপ জেতার পর একটা বিশাল পরিবর্তন এসেছে আমাদের নারী ক্রিকেটে। বাংলাদেশের মানুষ নারী ক্রিকেট নিয়ে আরো বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে। আমরা অনেক নারী ক্রিকেটার পাচ্ছি, অনেক মেয়ে অনুপ্রাণিত হয়েছে। আমরা অনেক ঘরোয়া ক্রিকেট খেলছি। ২০১৮ সালের পর আমাদের নারী ক্রিকেটের অবকাঠামোতেও অনেক পরিবর্তন হয়েছে।’ তাদের দলকে বাংলাদেশের পুরুষ দলের মতো সমর্থন দেয়া হয় না বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। সবার কাছে সমর্থনের জন্য অনুরোধ করে তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের মানুষকে ও সারা বিশ্বের বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের অনুরোধ করব, যেভাবে ছেলেদের দলটাকে আপনারা সমর্থন করেন, আমাদেরও সেভাবে করুন। আমরা আমাদের দেশকে গর্বিত করতে চাই।’

সীমিত ওভারের এ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ খেলবে ‘এ’ গ্রুপের হয়ে। গ্রুপ পর্বে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আছে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ প্রথম মাঠে নামবে ১২ ফেব্রুয়ারি। প্রথম ম্যাচে জ্যোতিদের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। তবে বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচটি আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলবেন টাইগ্রেসরা। পরবর্তী প্রস্তুতি ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ৮ ফেব্রুয়ারি। সেই ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত। বিশ^কাপে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যাচ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৪ ফেব্রুয়ারি। এর আগে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দলের কাছে পাত্তা পায়নি অস্ট্রেলিয়ার নারীরা। তবে তাদের মূল নারী দল বাংলাদেশের তুলনায় অনেক দিকে এগিয়ে থাকায় এবার কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হবেন জাহানারারা। গ্রুপ পর্বে তাদের তৃতীয় ম্যাচের প্রতিদ্বন্দ্বী নিউজিল্যান্ড। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ১৭ ফেব্রুয়ারি। ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বে নিজেদের চতুর্থ ও শেষ ম্যাচ খেলবে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।

বিশ্বকাপের এ আসরে নিজেদের দাপট দেখিয়ে বিশ্বকে চমক দেখাতে চান জাহানারা। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিশ্বকাপে আমরা নিজেদের একটা ছাপ রাখতে চাই। অবশ্যই সব দলের বিপক্ষে জেতার জন্য খেলব আমরা।’ আগের আসরগুলোতে ব্যর্থতার কথাও ভুলে যাননি তিনি। আগের আসরগুলোর কথা চিন্তা করলে তাদের লক্ষ্যটা অনেক বড়। নিজেদের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ আর মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ব্যবধান অনেক। আমাদের মেয়েরা সেই বিশ^কাপে সাহসী ক্রিকেট খেলেছে। কিন্তু সিনিয়র দলে অস্ট্রেলিয়া আমাদের চেয়ে সবকিছুতে অনেক এগিয়ে।’

প্রথম ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত হওয়া এ টুর্নামেন্ট আগের আসরগুলোর তুলনায় অনেকটাই আলাদা। এবার এ টুর্নামেন্ট পরিচালনায় থাকবেন না কোনো পুরুষ আম্পায়ার। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আইসিসির এ টুর্নামেন্টটি সম্পূর্ণভাবে পরিচালনা করবেন নারী আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারিরা। গত ২৭ জানুয়ারি ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচ অফিসিয়ালদের তালিকা ঘোষণা করে। সে তালিকায় কোনো পুরুষ আম্পায়ার বা ম্যাচ রেফারির নাম ছিল না। এবারই প্রথম পুরো টুর্নামেন্ট সামলানোর দায়িত্ব থাকবে নারীদের কাঁধে। নারীদের ক্রিকেটকে আরো জনপ্রিয় করার লক্ষ্যেই এ উদ্যোগ নিয়েছে আইসিসি।

নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টাইগ্রেসদের খেলার সূচি

তারিখ প্রতিপক্ষ ভেন্যু সময়
১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা কেপটাউন রাত ১১টা
১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া জিকেবেরহা রাত ১১টা
১৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড কেপটাউন সন্ধ্যা সাতটা
২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা কেপটাউন রাত ১১টা

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App