×

জাতীয়

ইউনিয়ন পর্যায়ে যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচি বিএনপির

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৫:৪৬ পিএম

ইউনিয়ন পর্যায়ে যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচি বিএনপির

শনিবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: ভোরের কাগজ

ইউনিয়ন পর্যায়ে যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচি বিএনপির
ইউনিয়ন পর্যায়ে যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচি বিএনপির

সরকার পতনের আন্দোলনে তৃণমূলের জনগনকে সম্পৃক্ত করতে ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপির। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কর্মসূচি ঘোষণা করতে গিয়ে বলেছেন, আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি বিএনপি সারাদেশে ইউনিয়নে ইউনিয়নে পদযাত্রা করবে।

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ থেকে বিএনপি মহাসচিব এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, আমাদের এবারের কর্মসূচি হবে একেবারে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে। গ্যাস-বিদ্যুৎ-চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যুগপত আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি শনিবার সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

ইউনিয়ন পর্যায় থেকে ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি হবে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, এবার ইউনিয়ন পর্যায় থেকে আমরা পদযাত্রা শুরু করব। এরপরে ধীরে ধীরে আমরা উপজেলা-জেলা-মহানগর এবং এরপরে সেই তাদের যে ক্ষমতার মসনদ, সেই মসনদ জনগণ দখল করে নেবে, জনগণের সরকার গঠন করবে।

নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের একপাশের সড়কে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা দাবিতে এই সমাবেশ হয় ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিনের আয়োজনে। ঢাকা ছাড়াও অন্য নয়টি বিভাগীয় শহরে একযোগে এই কর্মসূচি হয়েছে। বেলা ১২টা থেকে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে নয়া পল্টনে সমাবেস্থলে আসতে শুরু সমাবেশের কার্যক্রম বেলা দুইটায় শুরু হয়ে শেষ হয় বিকাল সাড়ে পাঁচটায়।

কাকরাইলের নাইটেঙ্গল রেস্টুরেন্ট মোড় থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিত সমাবেশ জনসমুদ্রে রূপ নেয়। নেতাকর্মীরা লাল-হলুদ-নীল-সবুজ টুপি পড়ে, তাদের কারো কারো হাতে ছিলো জাতীয় ও বিএনপির পতাকা।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও দক্ষিনের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় নেতা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, ফজুলল হক মিলন সহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সংগঠনের নেতাকর্মীরা সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।

১০ দফা দাবিতে সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যে যুগপত আন্দোলন শুরু করেছে এটি তার চতুর্থ কর্মসূচি। গত ২৪ ডিসেম্বর ৯ বিভাগীয় শহরে এবং ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণমিছিল, ১১ জানুয়ারি সারাদেশে অবস্থান কর্মসূচি এবং ২৫ জানুয়ারি সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। শনিবার ঢাকায় গণতন্ত্র মঞ্চ, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এলডিপি, গণফোরাম-পিপলস পার্টি আলাদা আলাদা সমাবেশ করে। তারাও ১১ ফেব্রুয়ারি পদযাত্রার অভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা মানুষের অধিকারকে রক্ষা করার জন্য সামনের দিকে এগিয়ে চলছি। ঢাকায় ইতিমধ্যে পদযাত্রার মধ্য দিয়ে আমরা সকল মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছি এবং মানুষকে নিয়ে এগিয়ে চলার মধ্য দিয়ে যে একটা লংমার্চ সেই লংমার্চের মধ্য দিয়ে আমরা এদেরকে পরাজিত করে সত্যিকার অর্থেই জনগনের একটা রাষ্ট্র বানাতে চাই।

ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মসূচি সফল করতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহবান রেখে তিনি বলেন, আসুন আজকে গ্রামের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ইউনিয়নের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলা-জেলার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে একসাথে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানোর জন্য আমরা এগিয়ে চলি, এগিয়ে চলা হবে আমাদের বিজয়।

ফখরুল বলেন, এই সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। এটা প্রমাণিত হয়েছে সম্প্রতি উপনির্বাচনে। হিরো আলম (বুগড়া উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী) আওয়ামী লীগ এই হিরো আলমের কাছেও কতটা অসহায় যে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে জিততে হয় ৬/৭‘শ ভোটে। তিনি বলেন, আজকে প্রমাণিত হয়েছে, আবদুস সাত্তার (উকিল আবদুস সাত্তার) যিনি দল ত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তাকে আওয়ামী লীগ নিজের লোক মনে করে তাকে জয়ী করতে বিরোধী প্রার্থীকে গুম করতে হয়। এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে কী সুষ্ঠু হবে? আপনারা ভোট দিতে পারবেন? এই সময়ে নেতা-কর্মীরা সমস্বরে না’ সূচক শ্লোগান দেয়।

বাজারের অবস্থান তুলে ধরে ফখরুল বলেন, এক লাফে গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ২৬৩ টাকা বেড়েছে। আজকে মা-বোনেরা এখানে আছেন। তারা জানেন, কি কষ্ট করে তাদেরকে সংসার চালাতে হয়। মানুষের এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। মানুষ সরকারের পতন দেখতে চায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App