×

সারাদেশ

ইনানীতে সংরক্ষিত বনভূমি উজাড়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:১১ এএম

ইনানীতে সংরক্ষিত বনভূমি উজাড়

ছবি: ভোরের কাগজ

টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বন কর্মকর্তারা

কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানী রেঞ্জের আওতাধীন সংরক্ষিত বনের জায়গা দখল করে অবাধে নির্মাণ করা হচ্ছে বাড়ি। এতে উজাড় হচ্ছে বনাঞ্চল, বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ।

সংরক্ষিত বনভূমিতে বাড়ি নির্মাণে সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে বন বিভাগের কিছু কর্মকর্তা ও হেডম্যানদের বিরদ্ধে। অনিয়মের তথ্যের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে নেমে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

গত ৩১ জানুয়ারি অনুসন্ধানে গিয়ে ইনানী রেঞ্জের ছোয়ানখালী বিট অফিসের দক্ষিণ পূর্বপাশে সংরক্ষিত বনভূমি উজাড় করে বাড়ি নির্মাণের দৃশ্য দেখা যায়। গত পাঁচ বছরে এখানে নতুন নতুন বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে বন বিভাগের লোকজন ঘর তোলার সুযোগ করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ছোয়ানখালী এলাকায় আধাপাকা দেয়ালের ঘর নির্মাণ করেছেন ছলিম উল্লাহ নামে এক ব্যক্তি। ছলিম উল্লাহর মতো বনভূমি উজাড় করে অনেকেই আধা পাকা, মাটির ঘর নির্মাণ করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, বনভূমি রক্ষার দায়িত্ব যাদের দেয়া হয়, তারাই বনের জায়গা বিক্রিতে জড়িত। মূলত বনভূমি দখল করে বাড়ি নির্মাণ করতে গেলে হেডম্যান হাবিব উল্লাহকে ম্যানেজ করতে হয়। তাকে যারা ম্যানেজ করবে না, তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যায় বনবিভাগ।

স্থানীয়রা জানান, পাহাড়ে সংরক্ষিত বনভূমিতে ঘর করতে হলে প্রথমে মিয়া (বিট কর্মকর্তা), তারপর হেডম্যানসহ প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করতে হয়। বিল্ডিং করতে ৫০ হাজার টাকা ও মাটির ঘর করতে ৪-৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। এসব অর্থ প্রদানের পর ঘর নির্মাণ করতে হয়।

অন্যদিকে ছোয়ানখালী এলাকায় দিনদুপুরে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালি উত্তোলনের দৃশ্যও চোখে পড়ে। তবে কে বা কারা এসব বালি উত্তোলন করছে সে বিষয়ে কেউ মুখ খুলেনি। বিষয়টি ইনানী রেঞ্জ কর্মকর্তাকে জানালে ঘটনাস্থলে বিট কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছেন বলে জানান।

একই চিত্র জালিয়াপালং বিটের আওতাধীন বিভিন্ন সংরক্ষিত বনভূমিতেও। গত ১ ফেব্রুয়ারি সরেজমিনে ওই এলাকায় পাহাড় কেটে বনভূমি দখল করে শতাধিক ঘরবাড়ি নির্মাণ করার দৃশ্য চোখে পড়ে। জুম্মাপাড়া কামাল সওদাগরের দোকানের পূর্বপাশে বার্মাইয়া পাড়া এলাকায় সামাজিক বনায়নের জায়গায় ঘর নির্মাণ করতে গিয়ে কেটে ফেলা হয়েছে অসংখ্য গাছ। যেখানে পরিবেশ রক্ষার উদ্যোগ নিয়ে গাছ রোপণ করে বাগান করা হয়েছে, সেখানে সামাজিক বনায়নে চলছে পরিবেশ ধ্বংসের কর্মযজ্ঞ।

বন উজাড় করে ঘরবাড়ি নির্মাণের বিষয়ে জালিয়াপালং বিট কর্মকর্তা মো. ইসরাফিল জানান, সামাজিক বনায়নের গাছ কেটে ঘর নির্মাণের বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আছে। খুব তাড়াতাড়ি অভিযান পরিচালনা করা হবে।

ছোয়ানখালী বিটের সংরক্ষিত বনভূমিতে স্থাপনা নির্মাণ ও জালিয়াপালং বিটের বাগান উজাড় করে ঘর নির্মাণ এবং মিয়াজী পাড়া টাওয়ারের পশ্চিমে খালেকের অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে ইনানী রেঞ্জ কর্মকর্তা শামীম রেজা মিটু বলেন, ছোয়ানখালীর বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে বিট কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর জালিয়াপালংয়ের বনভূমি উজাড় ও স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে আপনাদের মাধ্যমে জানলাম। আমি খোঁজ নিচ্ছি, কারো গাফিলতি থাকলে তাদের ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App