×

সাহিত্য

স্বাধীনতার জয়গানে শেষ হলো জাতীয় কবিতা উৎসব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১:২৭ পিএম

স্বাধীনতার জয়গানে শেষ হলো জাতীয় কবিতা উৎসব

ছবি: ভোরের কাগজ

স্বাধীনতার জয়গানে শেষ হলো জাতীয় কবিতা উৎসব

৩৫তম জাতীয় কবিতা উৎসবের শেষ দিনে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত। ছবি: ফেসবুক থেকে

মানবতার জয়গান, স্বপ্ন, সংগ্রাম আর স্বাধীনতার কথামালায় কবিতাকে সঙ্গী করে কেটে গেল দুটো দিন।

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি চত্বরে সমাপনী দিন সকাল থেকে রাত অবধি কবিতা পড়লেন দেশ-বিদেশের কবিরা। দেশের প্রতিষ্ঠিত কবিদের সঙ্গে নিবন্ধনের মাধ্যমে কবিতাপাঠে অংশ নিলেন দেশের নানা প্রান্তের নবীন-প্রবীণসহ নানা বয়সী ৩০০ কবি। উৎসবে কারো কণ্ঠে উঠে এসেছে বাংলার মাটি বাংলার জলের বন্দনা। কারো কণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হয়েছে শান্তির শাশ্বত বাণী। কারো কবিতার সূত্র ধরে উচ্চারিত হয়েছে ভাব-ভালোবাসার বারতা। উচ্চারিত হয়েছে মানবিক সমাজ বিনির্মাণের আকাঙ্ক্ষাময় শব্দমালা। আর কবিদের মিলনমেলায় পরিণত হওয়া এই কবিতাপাঠের আসরে স্বতঃস্ফূর্তভাবে শামিল হয়েছিলেন কবিতাপ্রেমীরা। সব মিলিয়ে কবি ও কবিতানুরাগীদের সরব উপস্থিতিতে সুন্দরতম দৃশ্যের দেখা মিলেছে জাতীয় কবিতা উৎসবে।

উৎসবের সমাপনী দিনের সন্ধ্যায় ২০২১ সালের ৩৪তম উৎসবের জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার তুলে দেয়া হয় কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার হতে। সম্মানি, স্মারক ও সনদপত্রসহ কবির হাতে পুরস্কারটি তুলে দেন পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক তারিক সুজাত।

কবি নুরুল হুদা বলেন, আমার জীবনের যতগুলো মুহূর্ত এসেছে, তন্মধ্যে সবচেয়ে সম্মানজনক মুহূর্ত এটি। তাই আমি আমার অনুভূতির সঙ্গে সত্য কথাই বলব। কারণ এইমুহূর্তে আমার শরীরজুড়ে বাংলাদেশের পতাকা। এটি এমন একটি দায়িত্ব ও গৌরব যাকে অস্বীকার করা যায় না, যার সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করা যায় না ও যার মূল্য পৃথিবীর কোনো অর্থমূল্যে বিচার করা যায় না। চিরদিন যেন এই আমার উত্থিত জন্মভূমিতে থাকতে পারি।

তিনি বলেন, জীবনে অনেক পুরস্কার পেয়েছি। দেশে বিদেশে অনেক পুরস্কার জিতেছি। তার মধ্যে এই ভালোবাসা শ্রেষ্ঠ পুরস্কার বলে মনে করি।

[caption id="attachment_403826" align="aligncenter" width="576"] ৩৫তম জাতীয় কবিতা উৎসবের শেষ দিনে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত। ছবি: ফেসবুক থেকে[/caption]

সমাপনী দিনের সকালে সেমিনারের মাধ্যমে উৎসবের কার্যক্রম শুরু হয়। মুহম্মদ নূরুল হুদার সভাপতিত্বে ‘বাংলার স্বাধীনতা আমার কবিতা’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আনিসুল হক। আলোচনায় অংশ নেন নাসির উদ্দীন ইউসুফ, আখতার হুসেন, রফিকউল্লাহ খান ও আমিরুল ইসলাম। সকাল গড়ানো দুপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘পোয়েট্রি এ্যান্ড পিস’ শীর্ষক সেমিনার। কামাল চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফখরুল আলম। বিষয়টির ওপর আলোচনায় অংশ নেন রামেন্দু মুজমদার, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এবং ভারত, ভুটান ও নেপালের কবিবৃন্দ।

সেমিনারের পর অনুষ্ঠিত হয় নিবন্ধিত কবিদের অংশগ্রহণে কবিতাপাঠের আসর। সেই সূত্রে সুন্দরতম দৃশ্যকল্পের উদ্ভব হয়। পুরো মঞ্চজুড়ে হাটু গেড়ে বসেছিলেন কবিরা। মাইকে প্রত্যেকের নামটি ঘোষণার সঙ্গে একে একে উঠে গেছেন ডায়াসে। পাঠ করেছেন নিজের রচিত প্রিয় কবিতাখানি। এদিন সব মিলিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে কবিতাপাঠের চারটি অধিবেশন। এসব পর্বের সভাপতিত্ব করেন দিলারা হাফিজ, রুবী রহমান, আসলাম সানী ও নূহ-উল-আলম লেনিন। রাতে আমন্ত্রিত অতিথি কবিদের নিয়ে কবিতাপাঠের পর্বটির সভাপতিত্ব করেন নির্মলেন্দু গুণ। সন্ধ্যায় কবিতাপাঠে অংশগ্রহণ করেন কবি নির্মলেন্দু, শ্যামল দত্ত, সম্পদ বড়ুয়া, দিলারা হাফিজ, রুবী রহমানসহ আমন্ত্রিত কবিরা। সব শেষে অনুষ্ঠিত হয়েছে আমন্ত্রিত শিল্পীদের অংশগ্রহণে কবিতার গান শীর্ষক পরিবেশনা পর্ব। এ পর্বের সভাপতিত্ব করেন আসাদুজ্জামান নূর। ৩৫তম কবিতা উৎসবের দেশের কবিদের সঙ্গে অংশ নিয়েছেন ভারত, ভুটান, নেপাল, ইরান ও অস্ট্রিয়ার একঝাঁক কবি।

উল্লেখ্য, উৎসবে কবি মুহাম্মদ সামাদ ও কবি তারিক সুজাতকে পুনরায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করে জাতীয় কবিতা পরিষদের নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ২০২৩-২০২৫ ঘোষণা করা হয়। জাতীয় কবিতা উৎসব মঞ্চ থেকে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App