×

সারাদেশ

বিয়ের দাবিতে প্রেমিকার অনশন, প্রেমিক লাপাত্তা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:১২ পিএম

বিয়ের দাবিতে প্রেমিকার অনশন, প্রেমিক লাপাত্তা

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর বাঘায় বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন শুরু করেছেন এক কলেজছাত্রী। বুধবার (১ ফ্রেরুয়ারি) রাত থেকে উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের আড়পাড়া এলাকার প্রেমিক অমিত প্রামানিকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন তিনি। ঘটনার পর প্রেমিক অমিত কুমার বাড়ি থেকে পালিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২ ফ্রেরুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সেখানেই ছিল ওই কলেজছাত্রী।

প্রেমিক অমিত প্রামানিক ওই গ্রামের অশিত প্রামানিকের ছেলে। ভুক্তভোগী ওই কলেজছাত্রী একই উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের বাসিন্দা। অমিত প্রামানিক আইপাশ আর মেয়েটি আইএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।

বৃহস্পতিবার অমিত প্রামানিকের বাড়িতে গিয়ে তার বাবা মার সাক্ষাতে কথা হলে কলেজছাত্রী জানান, এক বছর ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক। মেসেঞ্জারে কথা হয়েছে বহুবার। গত বুধবার উপজেলা সদরে বিউটি পার্লারে গিয়ে সাজুগুজু করিয়ে আমার কপালে সিঁদুর পরিয়ে দেয়। পরে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা বলতেই সেখান থেকে সটকে পড়ে অমিত। পরে অমিতের বাড়িতে উঠে পড়ি ও তার বাবা-মাকে জানান। তখনও অমিত বাড়িতেই ছিল। পরে গ্রামের মাতব্বরদের নিয়ে বৈঠক বসিয়ে বিয়ে রেজিষ্টারের সিদ্ধান্তে রেজিষ্ট্রারও ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তার পরিবার সম্পর্ক মানতে রাজি হয়নি। পরে অমিতকে সরিয়ে দেয়া হয়। কোনো উপায় না পেয়ে বুধবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেন।

তিনি বলেন, যতদিন অমিত আমাকে বিয়ে না করবে, ততদিন আমি এখানেই অনশন করব। আর যদি এখান থেকে যেতেই হয় তবে আমার লাশ যাবে। যেহেতু সিঁদুর পরালে হিন্দু শাস্ত্র মতে বিয়ে হয়ে যায়। বাড়িতে ফিরে গেলেও সমাজ মেনে নেবে না বলেও জানান ওই কলেজছাত্রী। পলাতক থাকায় এ নিয়ে প্রেমিক অমিতের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও রিসিভ করেননি। তবে তার বাবা অশিত প্রামানিক বলেন, পরিচয় সূত্রে বন্ধুত্ব থাকতে পারে। বিউটি পার্লারে সিঁদুর পরালে বিয়ে হয় না। মন্দিরে পরাতে হয়। মেয়েটি আসার পর বৈঠকে হিন্দু শাস্ত্র মতে বিয়ের কথা বলে অভিভাবকদের মেয়েকে নিয়ে যেতে বলেছিলেন। পরে সেটা হয়নি। রাতে মেয়ে আমার বাড়িতে উঠেছে।

কলেজছাত্রীর মা বিউটি বিশ্বাস বলেন, এখন আর মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসার সুযোগ নাই।

সমাজ প্রধান গীরেন মন্ডল ও অরুন সরকার জানান, বিষয়টি নিয়ে গ্রামের অরুন সরকারের বাড়িতে বসেছিলাম। ছেলে বিয়ে করতে রাজি ছিল। তার বাবাও বিয়ে দিতে রাজি ছিল। রেজিষ্ট্রারকেও ডাকা হয়েছিল। মেয়ে পক্ষের দাবি ছিল বিয়ে রেজিষ্ট্রি করা ও মন্দিরে মালা পরানোর। ছেলের বাবা চাচ্ছিল হিন্দু শাস্ত্র মতে বিয়ে দেয়াসহ লেনদেনের। বিষয়টি নিয়ে মতপার্থক্য দেখা দিলে পরে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। সালিসবর্গ উঠে চলে যায়। মেয়েটি ছেলের বাড়িতে উঠেছে।

হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্ট্রান ঐক্য পরিষদের সাবেক সভাপতি ও পূঁজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সুজিত কুমার পান্ডে (বাকু) বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। রেজিষ্ট্রি হবে, এমন মূহূর্তে এসে ছেলেকে সরিয়ে দেয়ায় পরে বিয়ে হয়নি। মেয়েটি ছেলের বাড়িতেই আছে। এখন রেজিষ্ট্রি, মন্দিরে সিঁদুর আর মালা পরিয়ে বিয়ে দিয়ে মেয়েকে তার মা-বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে পারবে। ছেলের বাবা চাইলে পরে আনুষ্ঠানিকতা করতে পারবেন।

বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। যদি মেয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়, তখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App