×

সম্পাদকীয়

রমজানের আগে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০৮ এএম

রমজানের আগে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে

নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে রমজানের আগেই খেজুর, চিনি, আটা, ময়দা, ভোজ্যতেল, বেসন, মুড়ি, ছোলাসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে। প্রতি বছর রোজা আসার আগ থেকেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বাড়া যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। রোজা শুরু হতে আরো প্রায় দুই মাস বাকি থাকলেও ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার খবর গণমাধ্যমে আসছে। রোজায় বাজার তদারকি শুরুর আগেই দ্রব্যমূল্য কয়েক দফা বাড়িয়ে দেয়ার এই কৌশল বিগত বছরগুলোতেও দেখা গেছে। রোজা শুরুর আগে বাজারের এই হালচাল উদ্বেগের। রমজানের সময় ভোজ্যতেল, চিনি, ডাল, ছোলা, মসলা ইত্যাদি পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে এ সময়টাতেই চাহিদাসম্পন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। বড় থেকে ছোট ব্যবসায়ী সবার প্রবণতা এ সময় বেশি লাভ তুলে নেয়ার। তবে এবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ডলার সংকট। এই কারণে নিত্যপণ্য আমদানি বিল পরিশোধে দেরি হচ্ছে আর এলসি খোলায় জটিলতাও দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে হু হু করে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। সমস্যা সমাধানে রমজান মাসের পণ্য আমদানির এলসি খুলতে রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ছাড়া রেমিট্যান্স ও এক্সপোর্ট প্রসিডের ডলারের একটি অংশ যেন ছোলা, ডাল, চিনি, পেঁয়াজ, ভোজ্যতেল ও খেজুরের মতো পণ্য আমদানিতে খরচ করা হয়, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে সে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। কিন্তু বাজারে খাদ্যদ্রব্যের ঊর্ধ্বগতি কমছে না কিছুতেই। দেশি খোলা মুড়ি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, গত বছর যা ছিল প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকা। চিনির কেজি ৬০ টাকা থেকে দ্বিগুণ বেড়ে ১২০ টাকা। ছোলা প্রতি কেজি ৩০ টাকা বেড়ে ৯০ টাকা, বুটের বেসন ৯০ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকা, দেশি আদা প্রতি কেজি ১০০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকা হয়েছে। রমজানের আগেই এই মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ জনগণের জন্য খুবই কষ্টের। গত বছর যে খেজুর ৫০০ টাকা কেজিতে পাওয়া যেত, এখন তা কিনতে হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকায়। এছাড়া রসুন, মসুর ডাল, আটা, ময়দা, ভোজ্যতেল, জিরা, লবঙ্গ ইত্যাদি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে যাতে বাজারকে অস্থিতিশীল করতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। অবশ্য এসব তৎপরতা প্রতি বছরই দেখা যায়। রমজানে বেশি চাহিদাসম্পন্ন পণ্যের পর্যাপ্ত মজুত থাকার এবং যে কোনো মূল্যে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার ঘোষণা দেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু এরপরও রমজানের আগে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। মানতেই হবে যে, অতীতের তুলনায় গত কয়েক বছরে রোজার সময় ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার মোটামুটি সফলতার পরিচয় দিয়েছে। মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে না পারলেও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে সক্ষম হয়েছে। বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতি এবং ডলার সংকটের কারণে এবার সে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারকে আগের তুলনায় বেশি সতর্ক থাকতে হবে। কাজেই রোজা শুরুর আগেই যাতে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর কৌশল বাস্তবায়ন করতে না পারে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে এখন থেকেই। রোজায় বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পণ্য বিপণন, বাজার মনিটরিং ইত্যাদি যেসব পরিকল্পনা থাকে সেগুলো যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। পণ্য পরিবহন নির্বিঘœ রাখতে বিশেষ করে কৃষিপণ্যের সরবরাহে যাতে কোনো বাধার সৃষ্টি হতে না পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদের।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App