×

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রকে বোঝানোর পথ হলো পারমাণবিক হামলা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:২১ এএম

যুক্তরাষ্ট্রকে বোঝানোর পথ হলো পারমাণবিক হামলা

ফাইল ছবি

রাশিয়ার একজন রাজনীতিবিদ ও ভ্লাদিমির পুতিনের বিশ্বস্ত মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পারমাণবিক হামলার আহ্বান জানিয়েছেন। আন্দ্রে গুরুলিভ নামের এই স্টেট ডুমা সদস্য এবং সাবেক সামরিক কমান্ডার সম্প্রতি রাশিয়ার একটি টেলিভিশন শোতে এই আহ্বান জানান। তিনি বলেন, মার্কিনিদের মাথার খুলিতে পরমাণু আঘাত না করা পর্যন্ত তাদের জ্ঞানে আসবে না যে তারা বিশ্বকে নিয়ে কতটুকু খেলছে।

গুরুলিভ বলেন, পারমাণবিক অস্ত্র সংশ্লিষ্ট একটি রুশ হামলাই বিশ্বে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করার একমাত্র পথ। এই অজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলার অন্য কোনো উপায় নেই। লোকেরা তাকে অহেতুক বোঝানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে চলেছে। গুরুলিভ বলেন, আমাদের দিগন্তের বাইরে পরিকল্পনা করা উচিত, যাতে আমরা জানতে পারি ১ বছর, ৩ বছর, ৫ বছর এমনকি ১০ বছরে কী ঘটবে এবং সেভাবেই আমাদের এগোতে হবে। তিনি বলেন, রাশিয়া এমন একটি দেশ যা বিশ্বে শান্তি আনতে চায়।

এর আগে গত সেপ্টেম্বরে গুরুলিভ বলেছিলেন যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সামরিক বাহিনী পারমাণবিক হামলার মাধ্যমে যুক্তরাজ্যকে মঙ্গলপৃষ্ঠে পরিণত করতে পারে।

রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থের আড়ালে ন্যাটো : পশ্চিমারা ন্যাটোকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ন্যাটো হিসেবে দেখতে গিয়ে পুরো বিশ্বকে উত্তপ্ত যুদ্ধের দিকে নিয়ে গেছে। পশ্চিমা জোট রাশিয়ার অর্থনৈতিক সুবিধা ছেড়ে দিয়েছে এবং ইউক্রেনে সবচেয়ে উন্নত সামরিক সরঞ্জাম পাঠিয়ে দীর্ঘ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সমস্যা হল- পশ্চিমা নিরাপত্তা মডেলের সমর্থন ছাড়া একটি দেশ আর নিরাপদ বোধ করতে পারে না। অতএব, পশ্চিমারা ইউক্রেনকে সমর্থন করা বন্ধ করবে না। তারা আধিপত্যবাদী অবস্থান পুনরুজ্জীবিত করার জন্য যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করবে। প্রকৃতপক্ষে ক্ষমতার নতুন সংজ্ঞায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা মস্কো, বেইজিং, ইরান ও ভেনেজুয়েলার মতো দেশগুলোর বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী বৈশ্বিক জোট প্রতিষ্ঠা করতে নতুন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ন্যাটো গড়ার কাজে ব্যস্ত।

যুদ্ধ জয়ের আগেই মস্কোর বিজয় : ট্যাংক নিয়ে কালক্ষেপণ ও বিলম্বিত সিদ্ধান্তের পরে চতুর্থ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান দিতে জার্মানি এবং যুক্তরাষ্ট্রের অস্বীকৃতিকে ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোর একটি বড় কূটনৈতিক বিজয় হিসেবেই দেখছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পশ্চিমকে তার প্রতিশ্রæত অস্ত্রের সরবরাহ ত্বরান্বিত করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন কিন্তু পশ্চিমারা তাদের প্রতিশ্রæত শত শত ট্যাংকের বেশির ভাগই সরবরাহ থেকে অনেক দূরে আছে। যা পৌঁছতে আরো কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হতে পারে।

নাটকীয় পারবর্তন হতে পারে : ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, অস্ত্র সরবরাহকারী পশ্চিমা দেশগুলো যদিও যুদ্ধকে আরো বেশি দীর্ঘায়িত করে ফেলেছে, তবুও এটি আমাদের গতিপথ পরিবর্তন করার সম্ভাবনা রাখে না এবং তা করবেও না। যুদ্ধের একটি নাটকীয় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক বলেছে, যুদ্ধের প্রয়োজনীয় উপাদান সরবরাহে পশ্চিমাদের ব্যর্থতা গত বছরের নভেম্বর থেকে কিয়েভের অগ্রগতি থেমে যাওয়ার প্রধান কারণ। গবেষকরা বলছেন, প্রতিশ্রæত অস্ত্র যদি সময়মতো আসতে না পারে তবে যুদ্ধের একটি নাটকীয় মোড় আমরা দেখতে পাব।

প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেন যে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে তার ‘বড় প্রতিশোধ’ নিতে শুরু করেছে মস্কো। রুশ বাহিনী যখন ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে ক্রমাগত অগ্রসর হচ্ছে, তখন এমন মন্তব্য করলেন তিনি। কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে জেলেনস্কি সতর্ক করে আসছেন যে, ইউক্রেনের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে মস্কো।

গত সপ্তাহে জার্মানি এবং যুক্তরাষ্ট্র যখন কয়েক সপ্তাহের কূটনৈতিক অচলাবস্থার অবসান ঘটিয়ে ভারী ট্যাংক সরবরাহের পরিকল্পনা ঘোষণা করে তখন ইউক্রেনের একটি বিশাল উৎসাহ তৈরি হয়েছিল। তবে সেই উৎসাহে এখন ভাটা পড়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App