×

মুক্তচিন্তা

নগর পরিকল্পনায় ঢাকার ভবিষ্যৎ

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:০৯ এএম

চারশ বছরের গৌরবময় শহর ঢাকা। ঢাকা রাজধানী হওয়ার গৌরবময়তা অর্জন করেছিল চার চারবার। কিন্তু যেসব উপাদান নিয়ে ‘শহর’ গঠিত হয় তা ঢাকার নেই। ঢাকার সামগ্রিক স্থানিক ম্যাটিক্স এবং ভবিষ্যৎ পরিবর্তন সম্পর্কে এই উদ্যোগে কোনো বিস্তৃত দৃষ্টিভঙ্গি নেই। আমরা স্থপতি ও নগর পরিকল্পনাবিদরা ‘ঢাকা নেক্সাস’ প্রস্তাব একটি সক্রিয় এবং সমন্বিত পরিকল্পনা জালের আওতায় আনার চেষ্টা করছি। নেক্সাসে, অঞ্চলজুড়ে নির্বাচিত বিদ্যমান নোডগুলোকে একটি অভিন্ন উপায়ে বাণিজ্য, প্রতিষ্ঠান এবং বিতরণ করে পুনরুজ্জীবিত করা যেতে পারে। শহুরে নোডের নতুন ঘনত্ব ও বিবেচনা করা যেতে পারে। সমস্ত নোড ও হাব নতুন একটি সমন্বিত পরিবহন নেটওয়ার্ক দ্বারা সংযুক্ত হতে পারে এবং বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ক তৈরিতে সহায়তা করতে পারে। নেক্সাস ঢাকা শহরের আকার, বিস্তৃত ও সীমাবদ্ধতা : ঢাকাকে পুনঃসংগঠিত করতে প্রয়োজন এর কেন্দ্রগুলোর সংস্কার। ঢাকাকে আমরা যেভাবে বিনষ্ট করে ফেলেছি তার জন্য প্রয়োজন পলিসেন্টিক ঢাকা চিন্তা করা, সেই সঙ্গে গোছানো ‘নেক্সাস’ নামকরণের মাধ্যমে। শহরগুলোর (যেমন : ছোট ও মাঝারি) নেটওয়ার্ক তৈরির মাধ্যমে গোছানো। ঢাকার প্রতিবেশী ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, মাদারীপুর, কুমিল্লা, ভৈরব ইত্যাদি শহর যেগুলো দুই ঘণ্টার মধ্যে ঘুরে আসা যায়। সেসব শহরকে সংযোগ স্থাপন করা, ‘স্কেমেটিক’ আইডিয়া প্লানের মাধ্যমে অঞ্চল ভিত্তিক নগর পরিকল্পনা করা। গণপরিবহন : ঢাকায় গণপরিবহনের জন্য একমাত্র বাসের ওপর নির্ভরশীল হতে হয়। জনসংখ্যার অপ্রতুল ও পর্যাপ্ত যানবহন না থাকায় এবং সঠিক রাস্তাঘাট ও লেনের অভাবে জনসাধারণকে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট বা গণপরিবহনের জন্য সরকার ইতোমধ্যে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। গত ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী মেট্রোরেল চালু করেছেন। বিশ্বের আধুনিক শহরগুলো ব্যক্তিগত গাড়ি কমিয়ে দিয়ে শুধু গণপরিবহন ও হাঁটার জায়গা সৃষ্টির মাধ্যমে শহরগুলোকে হাঁটার শহরে পরিণত করেছে। ঢাকায় হাতিরঝিলের মতো ওয়াটার বাস তৈরির মাধ্যমে খাল ও নদী সংযোগ ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে কার্যকর করা, এতে করে জলের ধারাকে সচল রাখা, পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা ও যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থার সুষ্ঠু সংযোগ স্থাপন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো সম্ভব। ব্লু-নেটওয়ার্ক : ড্যাপে নৌপথের সমন্বয়ে ‘ব্লু-নেটওয়ার্ক’ প্রতিষ্ঠার যে প্রস্তবনা দেয়া হয়েছে তা প্রশংসনীয়। কিন্তু শুধু নৌপথ স্থাপন ও কালভার্টকে ব্রিজ দ্বারা প্রতিস্থাপন করলেই ‘ব্ল-নেটওয়ার্ক’ প্রতিষ্ঠা হবে না। ঢাকার প্রায় হারিয়ে যাওয়া খালগুলো পুনরুদ্ধার ও সংস্কারের মাধ্যমে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। এছাড়া খালগুলোকে নদীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে ‘ব্লু-নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। আবাসন ব্যবস্থা : গৃহায়ণ নগরের বস্তুগত এবং সামাজিক গঠন হলেও এখন পর্যন্ত গৃহায়ণ হচ্ছে ঢাকার সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা। ২০২২-৩৫ সালের নতুন বৈষম্যপূর্ণ এরিয়া ডেনসিটি তৈরি করা হয়েছে বলে স্থপিত ও নগর পরিকল্পনাবিদরা মনে করেন। ঢাকাকে পলিসেনট্রিক পদ্ধতিতে সাজানো যেতে পারে বলে মনে করেন তারা। ১০-১৫ বছর ধরে স্থপতি, পরিকল্পনাবিদরা নানা প্লানিং তৈরি করলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। আবাসন সংকট : অবশেষে (২০২২-৩৫) ড্যাপ ২৩ আগস্ট ডিটেল এরিয়া প্লান উথাপিত হলে তা নিয়ে তৈরি হচ্ছে নানান বাক-বিতণ্ডা, তৈরি হয়েছে অসঙ্গতি। নতুন পরিকল্পনার উদ্দেশ্য হলো পর্যাপ্ত উন্মুক্ত স্থান রেখে অপেক্ষাকৃত ছোট ছোট প্লট একত্রীকরণের ফলে বেশি উচ্চতাবিশিষ্ট ইমারত নির্মাণ করা যাবে। এ নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে প্লট হাউজিং স্কিমের পরিবর্তে ব্লকভিত্তিক ব্যবস্থা করা আবাসন খাতকে হুমকির মুখে ফেলবে। সমগ্র ঢাকার এরিয়াল ভিউ : ঢাকাকে যদি সত্যিকারের নগরী হিসেব গড়ে তুলতে হয় তা হলে নি¤œœলিখিত কিছু বিষয়বস্তুর ওপর ভিত্তি করে আবাসন ব্যবস্থা গড়ে উঠতে পারে- ক) দলবদ্ধ আবাসন কমপ্লেক্সে ক্রমোন্নতি। খ) সব শ্রেণির মানুষের জন্য আবাসন জোগান দেয়া, বিশেষত নি¤œআয়ের মানুষের জন্য। গ) সব মানুষের জন্য আবাসনের জোগান দিতে ব্যক্তিগত প্রকল্পের গঠন পরিবর্তন সাধন করা। হোসনে আরা হ্যাপি : স্থপতি, ঢাকা। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App