×

সম্পাদকীয়

কিশোর গ্যাং : এ সামাজিক ব্যাধি যে কোনোভাবে নিয়ন্ত্রিত হোক

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৩, ০২:৩৬ এএম

গতকাল ভোরের কাগজের একটি প্রতিবেদনে প্রকাশ, গ্যাং কালচার সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক ও জাতীয় উদ্বেগের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। রাজধানীসহ দেশের প্রধান শহরগুলোতে কিশোর-তরুণরা বিভিন্ন গ্যাংয়ের মাধ্যমে অপরাধ করছে। তুচ্ছ ঘটনায় বখে যাওয়া কিশোরদের এক গ্রুপ হামলে পড়ছে অন্য গ্রুপের সদস্যদের ওপর। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার বাইরেও ঘটছে খুনের ঘটনা। ডিএমপির তথ্যমতে, গত বছর রাজধানীতে খুন হয়েছে ১৬৬ জন। এর মধ্যে ৫৫টি ঘটনা ঘটেছে ভাসমান অপরাধীদের হাতে। তারা খুন, ছিনতাই, মাদকসেবন থেকে শুরু করে সব ধরনের অপরাধে জড়িত। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিজেদের মধ্যেই খুনোখুনি করছে তারা। হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি চুরি-ডাকাতি-ধর্ষণের মতো ঘটনাও ঘটছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই কিশোররা আগামীর ভবিষ্যৎ। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে কিশোর সন্ত্রাস নতুন একটি সামাজিক ব্যাধি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ৫ বছর আগে উত্তরায় ডিসকো বয়েজ ও নাইন স্টার গ্রুপের অন্তর্দ্ব›েদ্ব খুন হয় ট্রাস্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র আদনান কবির। আদনান হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়েই আলোচনায় আসে কিশোর গ্যাং। রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় বেপরোয়াভাবে সক্রিয় এসব গ্যাংয়ের সদস্যরা। বিশেষ করে মাধ্যমিক স্কুল পড়–য়ারা এসব গ্যাংয়ে জড়িয়ে পড়ছে। কারণ এই বয়সে ছেলেমেয়েদের আচরণ পরিবর্তিত হয়, তাদের মধ্যে এক ধরনের ‘বড় হয়ে গেছি’ বা ‘ডোন্ট কেয়ার’ ভাব চলে আসে। তাছাড়া সময়ের সঙ্গে সমাজ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সামাজিক অবক্ষয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিথিল পারিবারিক বন্ধন, মা-বাবার সন্তানকে সময় না দেয়া, সামাজিক অবক্ষয়, স্বল্প বয়সে স্মার্টফোনসহ উন্নত প্রযুক্তি উপকরণের নাগাল পাওয়া, সঙ্গদোষ ইত্যাদি কারণে কিশোরদের অপরাধে যুক্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। এছাড়া কিশোরদের হাতে পর্যাপ্ত টাকা দেয়া, যৌক্তিকতা বিচার না করেই সব আবদার পূরণ করা এবং সন্তান কী করছে সে বিষয় পর্যবেক্ষণ না করায় অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে বলে সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করছেন। কিশোররা যেন অপরাধে জড়াতে না পারে এবং কেউ তাদের অসৎ কাজে ব্যবহার করতে না পারে, সে বিষয়ে নজর দিতে হবে। এ জন্য সবার আগে পরিবার তথা মা-বাবাকে এগিয়ে আসতে হবে। সন্তানরা কী করে, কার সঙ্গে সময় কাটায়- এসব খেয়াল রাখতে হবে। সন্তানদের অযৌক্তিক আবদার পূরণ করার আগে ভাবতে হবে। স্কুল কারিকুলামের বাইরে শিশু-কিশোরদের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে আকৃষ্ট করা এবং যুক্ত করার সুযোগ বাড়াতে হবে। কিশোর অপরাধ রুখতে ছিন্নমূল শিশু-কিশোরদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিতে হবে। যারা ইতোমধ্যে অপরাধ চক্রে জড়িয়ে গেছে, তাদের জন্য উপযুক্ত কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App